Tuesday 26 April 2011

আবারও অস্থির পণ্যবাজার : মাছ-গোশত চাল চিনি তেল রসুনের দাম বেড়েছে, ইলিশের কেজি ১০০০ টাকা

স্টাফ রিপোর্টার

আবারও অস্থির হয়ে উঠেছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম। এক সপ্তাহের ব্যবধানে মাছ-গোশত, চাল, চিনি, তেল, রসুনসহ বেশ কয়েকটি পণ্যের দাম বেড়েছে। সরকারি সংস্থা ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) অনুসন্ধানে গত সপ্তাহে তিনটি পণ্য তেল, চিনি ও রসুনের দাম বেড়েছে বলে ওয়েবসাইটে তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। রাজধানীর খুচরা ব্যবসায়ীরা জানান, মাসের প্রথম সপ্তাহে বিকিকিনি বেশি হওয়ার সুযোগ নিয়ে পাইকারি ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন নামি দামি কোম্পানি সরবরাহ কমিয়ে দেয়। ফলে বাজারে সৃষ্ট কৃত্রিম সঙ্কটের সুযোগে দাম বেড়ে যায়। ক্রেতারা জানান, সবশ্রেণীর ব্যবসায়ী দাম বাড়িয়ে বেশি মুনাফা লুটে নেয়। তারা বাজার মনিটরিংয়ে কঠোর পদক্ষেপ নিতে সরকারের প্রতি দাবি জানান। রাজধানীর একাাধিক বাজারের ক্রেতা-বিক্রেতার সঙ্গে আলাপ করে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
জানা গেছে, মাছ ও গোশতের দাম সবচেয়ে বেশি বেড়েছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে ইলিশ মাছের কেজিপ্রতি দাম দ্বিগুণ বেড়ে এক হাজার টাকায় উঠেছে। ছোট ইলিশ প্রতি কেজি ৭-৮শ’ টাকা। দাম বাড়ার কারণ হিসেবে ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা জানান, পাঁচদিন পরই বাংলা নববর্ষ, পহেলা বৈশাখ। এ উত্সবের অন্যতম অনুষঙ্গ পান্তা-ইলিশ। এ কারণে দাম বেড়েছে। তবে ক্রেতা সাধারণের অভিযোগ, মাছ ব্যবসায়ীরা বেশি লাভের আশায় কৃত্রিম সঙ্কট তৈরি করে দাম বাড়াচ্ছে। অন্যান্য মাছের ওপরও এর প্রভাব পড়েছে। গতকাল প্রতি কেজি শিং মাছ ৪৫০-৫০০ টাকা, আইড় মাছ ৪০০-৫০০ টাকা, রুই ও কাতল মাছ ২৫০-৩০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এদিকে মাছের দাম বাড়ার পাশাপাশি বেড়েছে গোশতের দামও। প্রতি কেজি দেশি মুরগি ৩৫০-৪০০ টাকা, ব্রয়লার ১৩০ টাকা, লেয়ার ১২৫ টাকা, গরুর গোশত ২৮০ টাকা ও খাসি ৪৫০ টাকা বিক্রি করতে দেখা গেছে। ডিমের দাম প্রতি হালি ২৪ টাকা।
টিসিবি’র হিসাবে গত সপ্তাহে তিনটি পণ্য তেল, চিনি ও রসুনের দাম বেড়েছে। সংস্থার মতে, পাম তেল (খোলা) লিটারে ৩ টাকা, চিনির দাম কেজিতে ১ টাকা ও রসুনের দাম ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। পাম তেলের লিটার ৯১-৯৩ টাকা থেকে বেড়ে ৯৪-৯৫ টাকা, চিনির দাম ৫২-৫৫ টাকা থেকে বেড়ে ৫৩-৫৬ টাকা ও রসুনের দাম ১০০-১২০ টাকা থেকে বেড়ে ১২৫-১৪০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, পাম তেল (খোলা) প্রতি লিটার ১১০ টাকা, চিনি (খোলা) ৫৫-৫৬ টাকা ও রসুন ১৩০-১৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১২০ টাকা, তীর ব্রান্ডের ৫ লিটার ৫৬০-৫৭০ টাকা, রূপচাঁদা ৫৭০, নূরজাহান ৫৬৫, দাদা ৫৬৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
চাল ব্যবসায়ীরা জানান, মিনিকেট চাল কেজি ৫৪-৫৫ টাকা, পারি ৪১-৪২ টাকা, বিআর (২৮) মানভেদে ৫০-৫১ টাকা, নাজিরশাইল মানভেদে ৪৪-৫০ টাকা, স্বর্ণা ৩৬-৩৭ টাকা, হাসকি ৩৬-৩৭ টাকা ও পোলাও চাল মানভেদে ৬৫-৮০ টাকা। অন্যান্য পণ্যের মধ্যে প্রতি কেজি খোলা আটা ৩০-৩৩ টাকা, প্যাকেটজাত ২ কেজি ৭০-৭২ টাকা, মসুর ডাল দেশি ১০৫ টাকা কেজি, ক্যাঙ্গারু ১১০-১১৫ টাকা, মোটা দানা ৮০-৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মসলাজাত পণ্যের মধ্যে দেশি আদা প্রতি কেজি ৮০-৯০ টাকা, দেশি রসুন ৬০-৭০ টাকা কেজি, আমদানি রসুন ১৪০-১৬০ টাকা, পেঁয়াজ ২০ টাকা, শুকনা মরিচ ২০০ টাকা এবং হলুদ ২৫০-২৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে সবজির বাজারে চড়াভাব বিরাজ করছে। করলা প্রতি কেজি ৪০ টাকা, ঢেঁড়স ৩০ টাকা, বরবটি ৪০ টাকা, গোল বেগুন ২৫-৩০ টাকা, লম্বা বেগুন ৩৫-৪০ টাকা, পটল ৩৫ টাকা, গাজর ২৫ টাকা, শসা ২০-২৫ টাকা, আলু ১০ টাকা, মরিচ ৪০ টাকা এবং টমেটো ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

No comments:

Post a Comment