Monday 14 June 2010

যাত্রাবাড়ীতে খুন



রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর উত্তর কুতুবখালীতে গতকাল রোববার দিন-দুপুরে সন্ত্রাসীদের গুলিতে রিংকু (২৬) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। এ সময় ফুয়াদ ফয়সাল জন (২৪) ও স্বপন নামে দু'জন আহত হয়েছেন। তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহত স্বপনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। গতকাল সকাল সাড়ে ১১টার দিকে উত্তর কুতুবখালী মসজিদের গলিতে আবুল মুন্সীর বাড়ির সামনে এ ঘটনা ঘটে। এ হত্যাকাণ্ড নিয়ে পরস্পরবিরোধী বক্তব্য পাওয়া গেছে। রিংকুর স্বজনদের অভিযোগ, বাড়ি দখল করতে না পেরে সন্ত্রাসীরা পরিকল্পিতভাবে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে রিংকুকে খুন করেছে। আর
পুলিশ দাবি
করছে, নিহত রিংকু, গুলিবিদ্ধ স্বপন এবং জন পুরান ঢাকা ও যাত্রাবাড়ী এলাকার একটি সন্ত্রাসী চক্রের সদস্য। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও চাঁদাবাজির ভাগবাটোয়ারা
নিয়ে দ্বন্দ্বের জের ধরে খুনের ঘটনা ঘটেছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, স্বপনকে গুলির পর জিহ্বা কেটে দেয় সন্ত্রাসীরা। পুলিশ গুলিবিদ্ধ স্বপনকে হাসপাতালে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়ার সময় তার পকেট থেকে একটি ককটেল উদ্ধার করে।
নিহত রিংকুর ভগি্নপতি নাহিদ হাসান নান্নু সমকালকে বলেন, রিংকুর বাবা রিয়াজুল ইসলাম যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। তারা ৪ নম্বর হাটখোলা রোডে মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের বরাদ্দ দেওয়া একটি বাড়িতে সপরিবারে থাকতেন। বাবার মৃত্যুর পর পাশের বাড়ির লোকজন রিংকুদের বাড়িটি দখলের পাঁয়তারা করছে। তারাই পরিকল্পিতভাবে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। এর আগেও রিংকুকে কয়েকবার হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল। এ নিয়ে রিংকুর পরিবার যাত্রাবাড়ী থানায় বেশ কয়েকটি সাধারণ ডায়েরি করেছিল। নাহিদ হাসান জানান, গতকাল সকালে জন রিংকুকে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে আসে।
প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় মুদি দোকানি জামাল উদ্দীন জানান, সকাল সাড়ে ১১টার দিকে বাসা থেকে দোকানের দিকে যাওয়ার সময় তিনি হঠাৎ দেখতে পান ৭-৮ জন যুবক দৌড়ে আসছে। এক পর্যায়ে সাদা শার্ট পরিহিত এক যুবক পিস্তল উঁচিয়ে কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে। ঠিক তখনই জিন্সের প্যান্ট ও গেঞ্জি পরিহিত আরেক যুবক কালো রঙের একটি পিস্তল দিয়ে পেছন থেকে একজনের মাথায় গুলি করে দ্রুত চলে যায়। গুলিবিদ্ধ যুবকরা লুটিয়ে পড়ে। স্থানীয় লোকজন এগিয়ে গিয়ে দেখতে পান এক যুবক মারা গেছে। গুলিবিদ্ধ অপর দু'জন কাতরাচ্ছে। তারা আহতদের দ্রুত উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। পরে নিহত রিংকুর লাশ উদ্ধার করে মিটফোর্ড হাসপাতাল মর্গে পাঠায় পুলিশ।
যাত্রাবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মনিরুজ্জামান সমকালকে বলেন, 'প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে রিংকু স্থানীয় সন্ত্রাসীদের সঙ্গে চলাফেরা করত। ইদুল গ্রুপের সন্ত্রাসীদের মধ্যে আভ্যন্তরীণ কোন্দলের জের ধরে এ ঘটনা ঘটছে। তাছাড়া রিংকু, স্বপন ও জন কেন নিজেদের এলাকা সূত্রাপুর ছেড়ে এই এলাকায় এসেছে তা নিয়েও রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। সব কিছু খতিয়ে দেখা হচ্ছে।' এখন পর্যন্ত এ ঘটনায় জড়িত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
গোয়েন্দা সূত্র বলছে, দীর্ঘ ৬ বছর ধরে সন্ত্রাসী ইদুল কারাগারে রয়েছে। তার অবর্তমানে সন্ত্রাসী বাহিনীর নেতৃত্ব নিয়ে ইদুলের ক্যাডার সাগর ও সবুজের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। স্বপন, জন ও রিংকু সবুজের সঙ্গে চলাফেরা করত। এটা সহ্য করতে পারেনি সাগর। তাই কৌশলে ডেকে এনে এদের খুন ও আহত করা হয়েছে। গুলিবিদ্ধ জনের বাসা ৪/১ হাটখোলা রোডে রিংকুর বাসার পাশে। জনের বাম হাতে ও বাম পায়ে দুটি গুলি লেগেছে। তার বাবার নাম আবু ফাত্তাহ কামাল। তিনি যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা। গুলিবিদ্ধ অপর যুবক স্বপনের বাবার নাম চুন্নু মিয়া। তাদের বাসা আলুবাজারের সিদ্দিক বাজার। তার চোখে গুলি লেগেছে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে কয়েক রাউন্ড পিস্তলের গুলির খোসা উদ্ধার করেছে।
যাত্রাবাড়ী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোক্তার সমকালকে বলেন, সন্ত্রাসীরা খুব কাছ থেকে মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে রিংকুকে গুলি করেছে। গুলি তার মাথার একদিক দিয়ে ঢুকে অন্যদিক দিয়ে বেরিয়ে পাশের বাড়ির একটি লোহার জানালায় বিদ্ধ হয়।
ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায় আবুল মুন্সীর বাড়ির একটি জানালায় বুলেটের চিহ্ন। ঘটনাস্থলে রক্তের দাগ। নিহত রিংকু, গুলিবিদ্ধ স্বপন ও জন জীবন বাঁচানোর জন্য দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেন। এ কারণে আশপাশের টিনের বেড়া ও ইটের দেয়ালে রক্তের দাগ লেগে যায়।

http://www.samakal.com.bd/details.php?news=13&action=main&option=single&news_id=72326&pub_no=366

দিনদুপুরে ব্যবসায়ীকে গুলি করে ১৫ লাখ টাকা ছিনতাই

পুরান ঢাকার শ্যামবাজারে আবদুল জলিল (৩৫) নামের এক ব্যবসায়ীকে গুলি করে প্রায় ১৫ লাখ টাকা ছিনিয়ে নিয়েছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল রোববার দুপুরে এ ঘটনায় গুরুতর আহত ব্যবসায়ীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্র জানায়, গতকাল বেলা দুইটার দিকে আবদুল জলিল শ্যামবাজারের তাঁর মসলার আড়ত থেকে টাকা নিয়ে ন্যাশনাল ব্যাংকের স্থানীয় শাখায় জমা দিতে যাচ্ছিলেন। কাছাকাছি হওয়ায় তিনি ব্যাগভর্তি টাকা নিয়ে হেঁটে ব্যাংকে যাচ্ছিলেন। লালকুঠি এলাকায় তিন-চারজন দুর্বৃত্ত পথরোধ করে ব্যবসায়ী জলিলকে গুলি করে এবং তাঁর কাছ থেকে টাকা ছিনিয়ে নেয়।
স্থানীয় লোকজন জানান, টাকা ছিনিয়ে পালানোর সময় দুর্বৃত্তরা তিন-চারটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায়। তখন গোটা এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
এ ঘটনা জানার পর পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে যান এবং বিস্ফোরিত ককটেলের আলামত সংগ্রহ করেন।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আবদুল জলিল জানান, আলিফ ট্রেডার্স নামের তাঁর মরিচ ও হলুদের আড়তের যৌথ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ১৬ নম্বর শ্যামপুরে। ব্যাংকে টাকা জমা দিতে যাওয়ার সময় ব্যবসায়িক অংশীদারের ভাই ওয়াসিম সঙ্গে ছিলেন। কিছু বুঝে ওঠার আগে ছিনতাইকারীরা তাঁদের ঘিরে ফেলে। তারা টাকার ব্যাগ নেওয়ার চেষ্টা করলে তিনি বাধা দেন। ছিনতাইকারীদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি শুরু হলে তারা জলিলের পায়ে গুলি করে ব্যাগভর্তি টাকা ছিনিয়ে নেয়।
যোগাযোগ করা হলে সূত্রাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম জানান, ব্যাংকে যাওয়ার সময় পুলিশের সহায়তা নিলে ছিনতাইয়ের ঘটনা এড়ানো যেত। পুলিশের একাধিক দল ছিনতাইকারীদের গ্রেপ্তার ও ছিনতাই হওয়া টাকা উদ্ধারে অভিযান চালাচ্ছে।

http://www.prothom-alo.com/detail/date/2010-06-14/news/70758

মেহেরপুরে পৃথক ঘটনায় তিনজন খুন

মেহেরপুরে পৃথক তিনটি ঘটনায় একজন নারীসহ তিন ব্যক্তি খুন হয়েছেন। আজ সোমবার ও গতকাল রোববার এ তিনটি খুনের ঘটনা ঘটে।
গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মতিয়ার রহমান জানান, গাংনী উপজেলার বানিয়াপুকুর গ্রামে আজ সোমবার সকাল সাতটার দিকে ৪০ বিঘা জমির মালিকানা নিয়ে মোয়াজ্জেম ও ওয়াজ্জেলের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। মোয়াজ্জেম পক্ষের সমর্থক নুরুল হুদা (৩৬) এর প্রতিবাদ করতে গেলে প্রতিপক্ষের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। তাঁর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে পাঁচজন আহত হয়।
ওসি মতিয়ার রহমান জানান, আজ সকালে গাংনী উপজেলার করমদী গ্রামে সম্পত্তির ভাগবাটোয়ারা নিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে বিরোধ দেখা দিলে জরিপকারী ডেকে জমির শরিক নির্ধারণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এ নিয়ে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ে সম্পত্তির শরিক সদস্যরা। একপর্যায়ে এক পক্ষের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আবু বক্কর (৫৫) গুরুতর আহত হন। গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়।
ওসি আরও জানান, দুই গ্রামেই অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। নিহতদের লাশ মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতাল মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। পুলিশ এ দুটি ঘটনায় কাউকে আটক করতে পারেনি।
এদিকে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ জিহাদ জানান, আজ সকালে সদর উপজেলার আমঝুপি ইউনিয়নের লক্ষ্মীনারায়ণপুর কালীগাংনী মাঠ থেকে পুলিশ গলাকাটা অবস্থায় একজন নারীর লাশ উদ্ধার করে। নিহতের নাম-পরিচয় জানা যায়নি। লাশটি মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

http://www.prothom-alo.com/detail/date/2010-06-14/news/70895

Sunday 13 June 2010

রাজধানীতে নৃশংস ৩ হত্যাকাণ্ড গুলি করে ১ লাখ টাকা ছিনতাই

রাজধানীতে গতকাল গুলি করে, কুপিয়ে এবং পিটিয়ে ৩ জনকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। পুলিশ নিহতদের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠিয়েছে। এদিকে গতকাল নগরীর সূত্রাপুরে দিনে-দুপুরে ছিনতাইকারীরা এক ব্যবসায়ীকে গুলি করে ১৫ লাখ ছিনিয়ে নিয়ে গেছে।
নগরীর যাত্রাবাড়ির উত্তর কুতুবখালী বড় মসজিদ গলিতে গতকাল দুপুরে সহযোগী সন্ত্রাসীদের গুলিতে রিংকু (২৬) নামের এক সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে। এ সময় ফুয়াদ ফয়সাল জন ও স্বপন নামের আরও দুই যুবক গুলিবিদ্ধ হয়েছে। আহতদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
যাত্রাবাড়ি থানা পুলিশ জানায়, শীর্ষ সন্ত্রাসী ইদুল গ্রুপের কয়েক সন্ত্রাসী চাঁদার টাকা ভাগবাটোয়ারার সময় বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে তারা নিজেদের মধ্যে গোলাগুলি করলে মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে রিংকু মারা যায়। যাত্রাবাড়ি থানার ওসি মনিরুজ্জামান জানান, হতাহতরা সূত্রাপুরের হাটখোলা এলাকায় থাকে। কুতুববাগে নিজেদের অন্তর্দ্বন্দ্বের এক পর্যায়ে গোলাগুলির সময় একজন মারা যায় এবং অপর দু’জন আহত হয়।
বাম চোখে গুলিবিদ্ধ স্বপন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিত্সার জন্য আসে। এসময় হাসপাতালের অভ্যন্তরে যাত্রাবাড়ি থানার এসআই মাজহারুল ইসলাম সন্দেহজনকভাবে স্বপনের পকেট তল্লাশি করে একটি তাজা ককটেল উদ্ধার করে। ককটেলটি পানির বালতিতে করে থানায় নেয়া হয়েছে। নিহত রিংকুর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মিটফোর্ড হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
নগরীর মানিকনগরের কুমিল্লা বস্তিতে গতকাল সকালে স্ত্রী মনোয়ারার দায়ের কোপে তার স্বামী হাসান আহমেদ (৪০) খুন হয়েছেন। পুলিশ মনোয়ারা বেগমকে (৩৫) গ্রেফতার করেছে। সবুজবাগ থানার ওসি আসাদুজ্জামান জানান, নিহত হাসান মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়াচক্রের পিয়ন ছিল। সে এক বছর আগে ভিক্টোরিয়া ক্লাবের পিয়ন মনোয়ারা বেগমকে বিয়ে করে। এটা দু’জনেরই দ্বিতীয় বিয়ে। গতকাল সকালে দাম্পত্য কলহের একপর্যায়ে মনোয়ারা বটি দিয়ে হাসানের বুকে কোপ মারে। এলাকাবাসী হাসানকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার সকাল ১০টায় তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পুলিশ জানায়, নিহত হাসানের আগের স্ত্রী ও সন্তান রয়েছে। তবে মনোয়ারার আগের স্বামী মারা গেছে। হাসানের গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার বুড়িচংয়ে। তারা চলতি মাসের শুরুতে মানিকনগর কুমিল্লা বস্তির বাসা ভাড়া নেয়। ওই বাসা থেকে পুলিশ মনোয়ারাকে গ্রেফতার করে।
নগরীর উত্তরা থানাধীন উত্তরখান এলাকার মাল্টিপারপাস কোম্পানির কিস্তি না দেয়ার অপরাধে আবদুর রব (৪০) নামের এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। উত্তরা থানার এসআই ইউনুস খন্দকার জানান, উত্তরখানের ১৫২/৬, গোবিন্দপুরের বাসিন্দা আবদুর রব। এলাকার দেশবন্ধু মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি থেকে ৫ হাজার টাকা ঋণ নেন তিনি। ঋণের টাকার এক কিস্তি দিতে পারেননি রব। একারণে ওই মাল্টিপারপাসের কর্মকর্তা ইকবাল হাসান জয় তাকে ডেকে নিয়ে বেদম প্রহার করেন। তাকে বাংলাদেশ মেডিকেলে চিকিত্সা দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়। বাসায় বিশ্রামে থাকা অবস্থায় গত শনিবার রাতে আবদুর রব আবার অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে বাংলাদেশ মেডিকেল হাসপাতালে নেয়া হয়। গতকাল সেখানে আবদুর রব মারা যায় বলে পুলিশ জানায়।
উত্তরা থানার এসআই ইউনুস খন্দকার আরও জানান, ওই হাসপাতাল থেকে আবদুর রবের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্ত ইকবাল হাসান জয় পলাতক রয়েছে। এ ব্যাপারে থানায় মামলা হয়েছে।
এদিকে নগরীর সূত্রাপুরে আবদুল জলিল নামের ব্যবসায়ীকে দিনে-দুপুরে গুলি করে ১৫ লাখ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে গেছে ছিনতাইকারীরা। গতকাল দুপুরে এ ঘটনায় পায়ে গুলিবিদ্ধ ব্যবসায়ীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
জানা যায়, সূত্রাপুর থানাধীন শ্যামবাজারের কাঁচামালের আড়তদার আবদুল জলিল ও তার কর্মচারী ওয়াসিম ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে ১৫ লাখ টাকা নিয়ে রিকশায় সদরঘাটের ন্যাশনাল ব্যাংকে যাচ্ছিলেন। তারা শ্যামবাজারের লালকুঠি ফরাশগঞ্জ ক্লাবের সামনে এলে ৬/৭ ছিনতাইকারী অস্ত্রের মুখে রিকশার গতিরোধ করে। তারা আবদুল জলিলের বাম পায়ে গুলি করে টাকার ব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এ ব্যাপারে থানায় মামলা হয়েছে।

http://www.amardeshonline.com/pages/details/2010/06/14/35104

বড়াইগ্রামে যুবলীগ কর্মীদের হাতে আ’লীগ কর্মী গুলিবিদ্ধ

নাটোরে বড়াইগ্রামে অধ্যক্ষ মাহবুবুল হক বাচ্চু সমর্থিত যুবলীগ কর্মীদের হামলায় মানিক নামে এক আওয়ামী লীগ কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা বিরাজ করছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও বড়াইগ্রাম থানা সূত্রে জানা যায়, গতকাল বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে বড়াইগ্রাম উপজেলার লক্ষ্মীপুর গ্রামের আওয়ামী লীগ কর্মী মানিক (৪০) কাজ করার উদ্দেশ্যে মাঠে যাচ্ছিলেন। এসময় একই গ্রামের ইয়াকুব আলীর বাড়ির কাছে পৌঁছলে আগে থেকে ওঁত্ পেতে থাকা যুবলীগ কর্মী জহির ও এনামুল মানিকের হাতে ও দু’পায়ে পরপর ৩ রাউন্ড গুলি করে। এতে মানিক রাস্তার ওপর লুটিয়ে পড়লে জহিরের সহযোগী নূরুজ্জামান, ইয়াকুব, আলহাজসহ ১০-১২ যুবলীগ কর্মী তাকে বেদম পিটিয়ে মৃত ভেবে ফেলে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে বড়াইগ্রাম হাসপাতালে ভর্তি করে। অবস্থার অবনতি হলে বিকালেই তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। গুলিবিদ্ধ মানিক লক্ষ্মীপুর গ্রামের মৃত মীর আলীর ছেলে এবং স্থানীয়
আওয়ামী লীগের হীরা গ্রুপের সমর্থক বলে জানা গেছে। অভিযুক্ত ইয়াকুব আলীর কাছে জানতে চাইলে তিনি ঘটনার সঙ্গে তার সম্পৃক্ততা নেই বলে দাবি করেন। বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা বিরাজ করছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতির কথা জানা গেছে।

http://www.amardeshonline.com/pages/details/2010/06/14/35133

পুরান ঢাকায় গুলি করে ব্যবসায়ীর ১৫ লাখ টাকা ছিনতাই

পুরান ঢাকার শ্যামবাজারে আজ রোববার দুপুরে এক ব্যবসায়ীকে গুলি করে ছিনতাইকারীরা ১৫ লাখ টাকা ছিনিয়ে নিয়েছে। ব্যবসায়ীর নাম আবদুল জলিল (৩৫)। তিনি শ্যামবাজারে হলুদ-মরিচের আড়তদার। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, আবদুল জলিল আজ দুপুর দুইটার দিকে তাঁর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে ১৫ লাখ টাকা নিয়ে রিকশায় একটি ব্যাংকে জমা দিতে যাচ্ছিলেন। এ সময় স্থানীয় লালকুঠির সামনে তিন-চারজন ছিনতাইকারী পথরোধ করে তাঁর টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় বাধা দিতে গেলে ছিনতাইকারীরা ওই ব্যবসায়ীর পায়ে গুলি করে তাঁর হাতব্যাগ থেকে ১৫ লাখ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়।
যোগাযোগ করা হলে সূত্রাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম বলেন, ছিনতাই হওয়া টাকা এবং এর সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

http://www.prothom-alo.com/detail/date/2010-06-13/news/70682

আক্কেলপুরে গৃহবধূকে জবাই করে হত্যা

জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার নুরনগর গ্রামে মরজিনা খাতুন (৩০) নামের এক গৃহবধূকে জবাই করে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সকালে গ্রামের একটি মাঠ থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ধর্ষণের পর তাঁকে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এলাকাবাসী ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার দুই সন্তানসহ মরজিনা খাতুন নুরনগর গ্রামে তাঁর বাবার বাড়িতে বেড়াতে আসেন। পরিবারের অন্যদের সঙ্গে খাওয়া-দাওয়া শেষে বৃহস্পতিবার রাতে একটি ঘরে মরজিনা ঘুমিয়ে পড়েন। গতকাল ভোরে তাঁর মা ঘরের দরজা খুলে দেখেন, মরজিনা ঘরে নেই। সকাল সাড়ে আটটার দিকে বাড়ি থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে বিকি ভিটা মাঠের গভীর নলকূপের নালায় একটি গলা কাটা লাশ দেখতে পায় লোকজন।
মরজিনার বাবা মকবুল হোসেন জানান, বাড়িতে তাঁর ৪৩ হাজার টাকা ও দুই ভরি স্বর্ণের গয়না ছিল। টাকা ও গয়না খুঁজে পাওয়া যায়নি। এক হাজার টাকা ও কয়েকটি কাপড় লাশের সঙ্গে পাওয়া গেছে।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা উপপরিদর্শক (এসআই) রওশন আলী জানান, গৃহবধূ মরজিনাকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। বাড়ি থেকে নিয়ে যাওয়া টাকা ও স্বর্ণালংকার দুর্বৃত্তরা নিয়ে গেছে। এ ঘটনায় থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি।

http://www.prothom-alo.com/detail/date/2010-06-12/news/70391

Thursday 10 June 2010

খুলনায় যুবককে কুপিয়ে হত্যা

খুলনা ॥ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় খুলনা মহানগরীর শামসুর রহমান রোডে এক যুবককে সন্ত্রাসীরা কুপিয়ে হত্যা করেছে। তার নাম জাহাঙ্গীর আলম কচি (২৮)। সে নগরীর টিবি ক্রস রোডের বাসিন্দা হাকিম এম ইলিয়াসের পুত্র বলে জানা গেছে। নিহতের পারিবারিক সূত্র জানিয়েছে, জাহাঙ্গীর আলম কচি একজন মৎস্য ব্যবসায়ী।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে ৩ অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী জাহাঙ্গীর নামের ওই যুবককে ধাওয়া করে শামসুর রহমান রোড ও তালতলা রোডের সংযোগস্থলে এনে ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথায়সহ বিভিন্ন স্থানে উপর্যুপরি কুপিয়ে ফেলে রেখে যায়। পরে পুলিশ এসে তাঁকে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কর্মরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। নিহতের পারিবারিক সূত্রে বলা হয়েছে, জাহাঙ্গীর চিংড়ি ব্যবসায়ী ছিলেন। অপর একটি সূত্র জানিয়েছে, মাদক ব্যবসার সাথে জড়িতদের সঙ্গে জাহাঙ্গীরের সখ্য ছিল। লেন দেন সংক্রানত্ম বিরোধকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের লোকেরা তাঁকে কুপিয়ে হত্যা করেছে।

http://www.dailyjanakantha.com/news_view.php?nc=14&dd=2010-06-11&ni=21311

জালালাবাদ গ্যাস সিবিএ সভাপতি তাহের খুন

সিলেট ॥ সিলেটে প্রকাশ্য দিবালোকে জালালাবাদ গ্যাস সিবিএ সভাপতি আবু তাহের খুন হয়েছেন। নগরীর কুমারপাড়ার ঝরনা-১ গেট সম্মুখে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় এ ঘটনা ঘটে। সিবিএর অভ্যনত্মরীণ কোন্দলের জের ধরে এ ঘটনা ঘটতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। জালালাবাদ গ্যাসের সিবিএ সভাপতি উর্ধতন টেকনিশিয়ান কাম সুপাইরভাইজার ও মহানগর শ্রমিক লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক আবু তাহের প্রতিদিনের ন্যায় মোটরসাইকেলযোগে অফিসে যাচ্ছিলেন। কুমারপাড়া ঝরনা আবাসিক এলাকায় পেঁৗছামাত্র মোটরসাইকেলযোগে হেলমেট পরিহিত দুই খুনী তাদের গতিরোধ করে। এ সময় খুনীরা মোটরসাইকেলের পেছনে থাকা জালালাবাদ গ্যাসের হিসাব সহকারী ফজুলুল বারী দিদারকে লাথি মেরে ফেলে আবু তাহেরকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে জবাই করে চলে যায়। জালালাবাদ গ্যাসের ডেপুটি ম্যানেজার ও ফজলুল বারীর ভাই মাহমুদুল হাসান জানান, কারা কেন এ ঘটনা ঘটিয়েছে তা সম্পর্কে প্রাথমিকভাবে কিছুই জানা যায়নি। গ্যাস অফিসের আধিপত্য নিয়ে এ ঘটনা কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'আমরা কর্মকর্তা, কর্মচারীদের মধ্যে ঝুট ঝামেলা আছে কিনা তা আমাদের পক্ষে জানা সম্ভব নয়।

http://www.dailyjanakantha.com/news_view.php?nc=14&dd=2010-06-11&ni=21309

সিলেটে আওয়ামী লীগের দু'গ্রুপে সংঘর্ষ আহত ১০

সিলেট ॥ সিলেটে আওয়ামী লীগের দু'গ্রম্নপের ধাওয়া পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষে ১০ জন আহত হয়েছে। এ সময় সাংবাদিকের ক্যামেরা ও মোটরসাইকেল ভাংচুর করা হয়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টায় নগরীর জিন্দাবাজর ও চোহাট্টায় এ সংঘর্ষ হয়। শ্রমিক লীগ নেতা ও জালালাবাদ গ্যাস সিবিএ সভাপিত আবু তাহের হত্যার প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মিছবাহ উদ্দিন সিরাজ সমর্থিত আওয়ামী লীগ সিলেট সিটি পয়েন্ট থেকে মিছিল বের করে। অপরদিকে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত সমর্থিত আওয়ামী লীগ নগরীর আম্বরখানা থেকে বাজেটকে স্বাগত জানিয়ে মিছিল বের করে। সিটি মেয়র কামরানের নেতৃত্বে মিছবাহ সমর্থিত গ্রম্নপের প্রতিবাদ নগরীর শহীদ মিনার এলাকায় পেঁৗছলে আওয়ামী লীগ নেতা শফিউল আলম চৌধুরী নাদেলের নেতৃত্বে বিপরীত দিক থেকে আসা অর্থমন্ত্রী সমর্থিত গ্রম্নপের মিছিল মুখোমুখি হয়। এ সময় উভয় পক্ষে ধাওয়া পাল্টাধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরম্ন হয়। পরে সংঘর্ষ বেধে গেলে পুরো জিন্দাবাজার এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। লোকজন দোকানপাট বন্ধ করে দিগ্বিদিক ছুটতে থাকেন। এ সময় ছাত্রলীগ ক্যাডাররা বিটিভির ফটোসংবাদিক আশরাফুল আলম নাসেরের ক্যামেরা একুশে টিভির ফটোসংবাদিক এফএম মুন্নার মোটরসাইকেল ভাংচুর করে। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অনলে মিছাবহ গ্রম্নপ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আশ্রয় নেয়।

http://www.dailyjanakantha.com/news_view.php?nc=14&dd=2010-06-11&ni=21308

সিলেটে জালালাবাদ গ্যাসের সিবিএ নেতা খুন

সিলেট নগরের ঝরনারপাড় এলাকায় আজ বৃহস্পতিবার সকালে খুন হয়েছেন জালালাবাদ গ্যাসের ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির সিবিএর সভাপতি আবু তাহের (৪৫)। তিনি সিবিএর সভাপতির পাশাপাশি জালালাবাদ গ্যাস কর্মচারী লীগেরও সভাপতি ছিলেন।
পুলিশ ও পরিবার সূত্র জানায়, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নগরের রায়নগর এলাকার জালালাবাদ গ্যাস কোয়ার্টার থেকে আবু তাহের তাঁর এক সহকর্মীকে নিয়ে মোটরসাইকেলে করে বের হন। ঝরনারপাড় এলাকায় আসামাত্র কয়েকটি মোটরসাইকেলে এসে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা তাঁদের গতিরোধ করে ঘিরে ধরে। পরে তাঁর গলায় ধারালো ছুরি দিয়ে টান দিয়ে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন ব্যক্তি পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই তাঁর মৃত্যু হয়। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
সিলেট মহানগর পুলিশের কমিশনার আফতাব উদ্দিন জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, সিবিএ রাজনীতির অভ্যন্তরীণ কোনো দ্বন্দের কারণে এ ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। পুলিশ দুর্বৃত্তদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চালাচ্ছে।

http://www.prothom-alo.com/detail/date/2010-06-10/news/69968

Monday 7 June 2010

চুয়াডাঙ্গার গ্রামে চাঁদার দাবিতে বোমা নিক্ষেপ

শনিবার রাত ৯টার দিকে চাঁদার দাবিতে আলমডাঙ্গার হাড়গাড়া গ্রামের মিন্টুর বাড়ির দেয়ালে বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে সন্ত্রাসীরা। সন্ত্রাসীরা পরপর দুটি শক্তিশালী বোমা নিক্ষেপ করে। এতে কেউ হতাহত হয়নি।
কয়েক দিন আগে গ্রামের মৃত গহর আলীর ছেলে মিন্টুর কাছে মোবাইল ফোনে চাঁদা দাবি করে এক সন্ত্রাসী। সে নিজেকে পূর্ববাংলার কমিউনিস্ট পার্টি_জনযুদ্ধের নেতা বলে পরিচয় দেয়। এ ছাড়া একই গ্রামের ফকরুল ডাক্তার ও মতিয়ার রহমানের কাছেও চাঁদা দাবি করা হয়।

http://dailykalerkantho.com accessed on 07/06/2010

কেরানীগঞ্জে বালু ব্যবসায়ীকে গুলি

কেরানীগঞ্জে গতকাল রোববার সন্ত্রাসীরা আনিসুর রহমান (৩৫) নামের এক বালু ব্যবসায়ীকে গুলি করেছেন। তাঁকে মিটফোর্ড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আনিসুর রহমানের স্ত্রী ঊর্মি আক্তার জানান, আইন্তা এলাকার আলী, সেন্টু ও মহসিনের সঙ্গে তাঁর স্বামী অংশীদারের ভিত্তিতে বালুর ব্যবসা করতেন। তাঁদের কাছে আনিসুরের ৭৫ হাজার টাকা পাওনা রয়েছে। গত শনিবার টাকা চাইতে গেলে তাঁরা আনিসুরকে টাকা দেবেন না বলে জানান এবং আবার টাকা চাইলে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। এর জের ধরে গতকাল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে স্থানীয় ইদু মিয়ার নেতৃত্বে এক দল সন্ত্রাসী আনিসুরের ওপর হামলা চালায়। তাঁরা আনিসুরকে লক্ষ্য করে তিনটি গুলি ছোড়ে। একটি গুলি আনিসুরের বাঁ পায়ে বিদ্ধ হয়। স্বামীকে রক্ষা করতে এলে তাঁরা ঊর্মিকেও মারধর করেন।
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল বাশার জানান, ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ দুটি গুলির খোসা উদ্ধার করেছে। এ ঘটনায় আনিসুরের শ্বশুর বাবুল মিয়া থানায় মামলা করেছেন।

http://www.prothom-alo.com/detail/date/2010-06-07/news/69167

ধুনটে অধ্যক্ষকে পিটিয়ে হাসপাতালে পাঠাল যুবলীগ নেতা

বগুড়ার ধুনট উপজেলা পরিষদ থেকে এক অধ্যক্ষকে তুলে নিয়ে রাস্তার ওপর বেধড়ক পিটিয়েছে উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক। যুবলীগ নেতা বনি আমিন মিন্টুর মারধরে কান্তনগর টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম কলেজের অধ্যক্ষ মাহমুদুল হাসান আসাদ গুরুতর আহত হয়েছেন। তাঁকে ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, রবিবার সকালে অধ্যক্ষ আসাদ দাপ্তরিক কাজে উপজেলা পরিষদের মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে গিয়েছিলেন। সেখানে কাজ করার সময় উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক বনি আমিন মিন্টু অধ্যক্ষকে তুলে নিয়ে যায়। তাঁকে উপজেলা পরিষদের বাইরে এনে রাস্তার ওপর মারধর করে। যুবলীগ নেতার বেধকড় পিটুনিতে অধ্যক্ষ আসাদ আহত হন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অধ্যক্ষ আসাদ জানান, প্রায় তিন বছর আগে তাঁর ভাগ্নের একটি মোবাইল ফোনসেট চুরি হয়। ওই চুরির ঘটনায় থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে যুবলীগ নেতা মিন্টুর ছোট ভাই কুদরতকে গ্রেপ্তার করেছিল। ওই ঘটনার জের ধরে অধ্যক্ষকে উপজেলা পরিষদ থেকে তুলে এনে মারধর করা হয়েছে।
উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক বনি আমিন মিন্টু এ ব্যাপারে বলে, 'আসাদ মিথ্যা অভিযোগে আমার ছোট ভাইকে পুলিশের হাতে ধরিয়ে দিয়েছিল। এ জন্য তাঁকে মারধর করেছি।' ধুনট থানার ওসি মোহাম্মদ ইয়াছিন বলেন, 'বিষয়টি শুনেছি। তবে থানায় এ ব্যাপারে কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

http://dailykalerkantho.com accessed on 07/06/2010

ছাত্রলীগের সংঘর্ষের পর ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা


কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। গতকাল রবিবার রাতে সিন্ডিকেটের এক জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আজ সোমবার সকাল ৯টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের আবাসিক হল ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর আগে গতকাল কমিটি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের দুই পক্ষে সংঘর্ষ হয়। এতে অন্তত আটজন আহত হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
গ্রীষ্মকালীন ছুটি শেষে ইবি ক্যাম্পাস খোলার প্রথম দিন গতকাল সকাল থেকেই ছাত্রলীগের নতুন কমিটিতে স্থান না পাওয়া আলী মোর্তজা খসরু, বর্তমান কমিটির যুগ্ম সম্পাদক মাহাবুব হোসেন খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু জার গিফারী গাফফার নেতা-কর্মীদের নিয়ে ক্যাম্পাসে সংঘবদ্ধ হন। অন্যদিকে বর্তমান কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক গ্রুপের নেতা-কর্মীরাও সংঘবদ্ধ হন। দুপুর ১২টার দিকে উভয় পক্ষ লাঠিসোঁটা, পিস্তল, রামদা ও চাপাতি নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। চলে কয়েক দফা ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া। এতে উভয় পক্ষের অন্তত আটজন আহত হন। এ সময় ছাত্রলীগের বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র অ্যাম্বুলেন্সটি ভাঙচুর করে। সংঘর্ষ চলার সময় দুটি গুলি ছোড়ার ঘটনাও ঘটে। এ সময় খুলনা-ঢাকা মহাসড়কে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায় এবং যানজটের সৃষ্টি হয়। বেলা ২টার পর পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলেও ক্যাম্পাসে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
সূত্র জানায়, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নবগঠিত কমিটিতে জাহাঙ্গীর হোসেনকে সভাপতি ও শামসুজ্জামান তুহিনকে সাধারণ সম্পাদক করে পাঁচ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করা হয় গত ১৯ মে। এ কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক অছাত্র এবং পেশাজীবী বলে অভিযোগ উঠলে গত ২২ মে আওয়ামী লীগের কার্যকরী সংসদের সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী ও দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনা এ কমিটি বিলুপ্ত করা হবে বলে ঘোষণা দেন। পরে ২৩ মে থেকে ছাত্রলীগের পদবঞ্চিত নেতা-কর্মীরা এ কমিটিকে প্রত্যাখ্যান করেন। এ নিয়েই দুই গ্রুপে উত্তেজনা শুরু হয়।
বর্তমান কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আবু জার গিফারী গাফফার কালের কণ্ঠকে বলেন, 'শেখ হাসিনার নির্দেশেই বর্তমান কমিটি বিলুপ্ত হয়েছে। আমরা এ কমিটি মানি না।'
অন্যদিকে কমিটির সাধারণ সম্পাদক শামসুজ্জামান তুহিন বলেন, 'ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের নিয়ে আমরা ক্যাম্পাসে অবস্থান করছিলাম। এ সময় কতিপয় ছাত্রলীগ নেতা বহিরাগতদের নিয়ে আমাদের ওপর হামলা চালালে আমরা তা প্রতিহত করি।'
প্রক্টর মাহবুব আরেফিন গতকাল রাত দেড়টায় কালের কণ্ঠকে জানান, দুই ঘণ্টাব্যাপী সিন্ডিকেটের বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। তিনি বলেন, আপাতত ১৪ জুন পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকবে। পরিস্থিতির উন্নতি না হলে পরবর্তী সময়ে নতুন সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এর আগে ছাত্রলীগের দুই পক্ষে সংঘর্ষ প্রসঙ্গে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম আলাউদ্দিন বলেন, ঘটনা তদন্তে ১৪ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। ছাত্রলীগের কমিটির বিষয়টি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের। তারাই এর সমাধান দিতে পারবে। সহিংসতা এড়াতে ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
শাবিপ্রবিতে হাতাহাতি: সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের এক ছাত্রকে হলে ওঠানো নিয়ে ছাত্রলীগের সুমন গ্রুপ ও আসাদ-মিঠু গ্রুপের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছিল। এ নিয়ে গতকাল দুপুরে সুমন গ্রুপের আবু সালেহের সঙ্গে আসাদ-মিঠু গ্রুপের ইকবালের কথাকাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে নেতা-কর্মীদের মধ্যে হাতাহাতি হয়। পরে সিনিয়র নেতা-কর্মীরা এসে পরিস্থিতি শান্ত করেন।
অন্যদিকে আসাদ-মিঠু গ্রুপের নেতা-কর্মীরা অর্থনীতি বিভাগের আব্দুর রহিম নামের এক ছাত্রকে পিটিয়ে আহত করেছে বলে জানা গেছে। এ ব্যাপারে ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আসাদুজ্জামান আসাদ জানান, ব্যক্তিগত কারণে এমনটি হয়েছে, এর সঙ্গে ছাত্রলীগের কোনো সম্পর্ক নেই।

http://dailykalerkantho.com accessed on 07/06/2010

কেরানীগঞ্জে বালু ব্যবসায়ীকে গুলি

কেরানীগঞ্জে গতকাল রোববার সন্ত্রাসীরা আনিসুর রহমান (৩৫) নামের এক বালু ব্যবসায়ীকে গুলি করেছেন। তাঁকে মিটফোর্ড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আনিসুর রহমানের স্ত্রী ঊর্মি আক্তার জানান, আইন্তা এলাকার আলী, সেন্টু ও মহসিনের সঙ্গে তাঁর স্বামী অংশীদারের ভিত্তিতে বালুর ব্যবসা করতেন। তাঁদের কাছে আনিসুরের ৭৫ হাজার টাকা পাওনা রয়েছে। গত শনিবার টাকা চাইতে গেলে তাঁরা আনিসুরকে টাকা দেবেন না বলে জানান এবং আবার টাকা চাইলে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। এর জের ধরে গতকাল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে স্থানীয় ইদু মিয়ার নেতৃত্বে এক দল সন্ত্রাসী আনিসুরের ওপর হামলা চালায়। তাঁরা আনিসুরকে লক্ষ্য করে তিনটি গুলি ছোড়ে। একটি গুলি আনিসুরের বাঁ পায়ে বিদ্ধ হয়। স্বামীকে রক্ষা করতে এলে তাঁরা ঊর্মিকেও মারধর করেন।
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল বাশার জানান, ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ দুটি গুলির খোসা উদ্ধার করেছে। এ ঘটনায় আনিসুরের শ্বশুর বাবুল মিয়া থানায় মামলা করেছেন।

http://www.prothom-alo.com/detail/date/2010-06-07/news/69167

ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে একজন গুলিবিদ্ধ

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়


http://rtnn.net/details.php?id=25045&p=1&s=5

টেন্ট (তাঁবু) দখলকে কেন্দ্র করে কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে আজ রোববার দুপুর ১২টার দিকে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এ সময় প্রতিপক্ষের গুলিতে একজন ছাত্র আহত হন।
ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি সংগঠনটির ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার কার্যনির্বাহী কমিটি ঘোষণা করে। এরপর থেকে নতুন সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও অন্যান্য কার্যনির্বাহী এবং কমিটিতে কোনো পদ পায়নি এমন বেশ কিছু স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতার মধ্যে দ্বন্দ্ব ও উত্তেজনা চলতে থাকে। পদবঞ্চিত মাহবুব-খসরু গ্রুপের কর্মীরা আজ সকালে ক্যাম্পাসে কলাভবনের পূর্বপাশে অবস্থিত ছাত্রলীগের নির্ধারিত টেন্টে অবস্থান গ্রহণ করে। এর কিছু পরে সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম ও সাধারণ সম্পাদক শামসুজ্জামান ওরফে তুহিনের পক্ষের কর্মীরা টেন্টে অবস্থান নিতে গেলে দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় প্রতিপক্ষের গুলিতে ছাত্রলীগ কর্মী মোহাম্মদ আলী ওরফে শিমুল আহত হন। তাঁকে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর শাহাদাত হোসেন আজাদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে প্রথম আলোকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ দুই পক্ষের মধ্যে একটি সমঝোতা সৃষ্টির চেষ্টা করছে। এ ঘটনার পর ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

http://www.prothom-alo.com/detail/date/2010-06-06/news/68948

ঝিনাইদহে আ. লীগের দুই গ্রুপে সংঘর্ষ আহত ১৮

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে শনিবার আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষে অন্তত ১৮ জন আহত হয়েছে। আহতদের ঝিনাইদহ, যশোর ও কালীগঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গ্রামবাসী ও কালীগঞ্জ থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কালীগঞ্জ উপজেলার একতারপুর গ্রামের আওয়ামী লীগের শরিফুল বিশ্বাস গ্রুপ এবং বারেক মণ্ডল গ্রুপের মধ্যে এলাকায় প্রভাব বিস্তার নিয়ে চরম দ্বন্দ্ব চলছিল। গত শুক্রবার শরিফুল বিশ্বাস ও তার লোকজন বারেক মণ্ডলকে মারধর করে। এ ঘটনায় দুই গ্রুপের মধ্যে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। শনিবার সকাল ১১টার দিকে উভয় গ্রুপ ঢাল, ভেলা, সড়কি, রামদা নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। সংঘর্ষে উভয় গ্রুপের অন্তত ১৮ জন আহত হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। কালীগঞ্জ থানার ওসি জানান, এলাকায় প্রভাব বিস্তার নিয়ে তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছিল। এখন পরিস্থিতি শান্ত।

http://dailykalerkantho.com/?view=details&archiev=yes&arch_date=06-06-2010&type=single&pub_no=186&cat_id=1&menu_id=56&news_type_id=1&index=3

Saturday 5 June 2010

ফের হামলায় আহত ১৪

মোরেলগঞ্জে টেন্ডারবাজি

বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে দুটি রাস্তার ২৫ লাখ টাকার টেন্ডার দখল নিয়ে পৌরসভা অফিসে হামলা, ভাঙচুর ও মেয়রসহ পাঁচজনকে মারধরের পর টেন্ডারবাজ চক্রটি আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। এ নিয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে বিরোধ ছড়িয়ে পড়েছে। টেন্ডারবাজ গ্রুপের হাতে বৃহস্পতি ও শুক্রবার ১৪ জন হামলার শিকার হয়েছেন। তাঁরা সবাই পৌর মেয়র মনিরুল হক তালুকদারের সমর্থক বলে জানা গেছে। মেয়র মনিরুল হক জানান, আওয়ামী লীগ নেতা কাউন্সিলর ছাবুল আক্তারের নেতৃত্বে কতিপয় টেন্ডারবাজ প্রকাশ্যে তিন দিন ধরে তাঁর কর্মী, সমর্থক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ওপর হামলা, ভাঙচুর ও তাঁদের মারধর করছে। টেন্ডারবাজ চক্রটি এতই বেপরোয়া হয়ে উঠেছে যে তাদের কারণে রাস্তা, কবরস্থান, মসজিদ, ড্রেনসহ ১০/১১ প্যাকেজের অধীনে পৌরসভার ২৫/৩০টি উন্নয়ন কাজ দিনের পর দিন বন্ধ হয়ে আছে। এমনকি তাদের হুমকির মুখে মোরেলগঞ্জ পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী মো. নাসিরউদ্দিন ও উপসহকারী প্রকৌশলী আবু তালেব পৌর অফিস থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন।
এদিকে মেয়র মনিরুল হকের এসব অভিযোগ অসত্য বলে দাবি করেছেন কাউন্সিলর ছাবুল আক্তার। হামলার ঘটনা কাল্পনিক বলে তিনি উল্লেখ করেন। ছাবুল আক্তার জানান, বেশ কিছুদিন ধরে পৌরসভায় মেয়রের অনুপস্থিতির কারণে কাউন্সিলররা প্যানেল মেয়রকে নিয়ে বরাদ্দের ২৮ টন গম ২০টি বিদ্যালয়ে বিতরণ করেন। এ খবর পেয়ে মেয়র পৌর কার্যালয়ে এসে উপস্থিত সবাইকে গালাগাল করে চলে যাওয়ার পর উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। টেন্ডারবাজির কোনো ঘটনা ঘটেনি বলে তিনি দাবি করেন।

http://dailykalerkantho.com/?view=details&type=single&pub_no=185&cat_id=1&menu_id=56&news_type_id=1&index=2

আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বগুড়ায় ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক খুন, এক কর্মী আহত

বগুড়া জেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক শাখাওয়াত হোসেন জুয়েলকে গতকাল শুক্রবার রাতে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। শহরের শিববাটি সেবক সমিতি ক্লাবের ঘরে এই ঘটনা ঘটে। এ সময় উজ্জ্বল (৩৫) নামে ছাত্রলীগের এক কর্মীও আহত হয়েছেন।

পুলিশ জানায়, গতকাল রাত দেড়টার দিকে শিববাটি সেবক সমিতি ক্লাবঘরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে কথাকাটাকাটির জের ধরে তাঁকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে রাতেই তার লাশ পাঠানো হয়। আহত উজ্জ্বল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

এ সম্পর্কে বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান, এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করা হয়নি।

http://www.samakal.com.bd/details.php?news=3&action=main&option=single&news_id=70397&pub_no=357

শ্রমিক লীগের নেতার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা

পাবনা অফিস | তারিখ: ০৫-০৬-২০১০

পাবনা সদর উপজেলার টেবুনিয়া বীজ উৎপাদন ও প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্রে শ্রমিক নিয়োগকে কেন্দ্র করে গত বৃহস্পতিবার দুর্বৃত্তদের হামলায় এক ব্যক্তির নিহত হওয়ার ঘটনায় হত্যা মামলা হয়েছে। মামলায় জেলা শ্রমিক লীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মোহাম্মদ আলীসহ ২৬ জনকে আসামি করা হয়েছে।
পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মতিয়ার রহমান বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে নিহত আবুল কাশেমের বাবা মো. আবদুল আজিজ এ মামলা করেন।
ওসি আরও বলেন, এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

http://www.prothom-alo.com/detail/date/2010-06-05/news/68581

সিরাজগঞ্জে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত ১০

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিরাজগঞ্জ | তারিখ: ০৫-০৬-২০১০

সিরাজগঞ্জে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে এক পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। গতকাল শুক্রবার শহরের এসএস রোড ও ১ নম্বর খলিফাপট্টিতে এ ঘটনা ঘটে।
থানার পুলিশ ও দলীয় সূত্র জানায়, গত বুধবার জেলা ছাত্রলীগের দ্বিবার্ষিক সম্মেলনের কাউন্সিল অধিবেশন হট্টগোলের কারণে পণ্ড হয়ে যায়। এরপর থেকে বিভিন্ন প্রার্থীর সমর্থকেরা কমিটি ঘোষণার দাবিতে মিছিল সমাবেশ করে আসছিলেন। গতকাল বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে নিজেকে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক দাবি করে স্থানীয় নেতা সাজ্জাদুল হক লোকজন নিয়ে শোডাউন এবং মিছিল বের করেন। অন্যদিকে সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী অন্য নেতা জাকির হোসেনের সমর্থকেরা কমিটি ঘোষণার দাবিতে মিছিল বের করেন। মিছিল দুটি শহরের ১ নম্বর খলিফাপট্টির সামনে মুখোমুখি হলে সংঘর্ষ বেধে যায়। সংঘর্ষ এসএস রোডে ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও ইট-পাটকেল নিক্ষেপ চলতে থাকে। সংঘর্ষের সময় ইটের আঘাতে পুলিশ সদস্য সৌদসহ ছাত্রলীগের হজরত, রাশেদ, রেজাউল, ভুট্টো, সাগর, মালেক, বসির, খোকাসহ ১০ জন আহত হন। জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নূরুল ইসলাম জানান, কমিটি ঘোষণা না হওয়া সত্ত্বেও সাজ্জাদুল হক দলবল নিয়ে শোডাউন করেছেন। এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানার জন্য সাজ্জাদুল হক ও জাকির হোসেনের সঙ্গে চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি।

http://www.prothom-alo.com/detail/date/2010-06-05/news/68588

আ.লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত ৩০

কালকিনি (মাদারীপুর) প্রতিনিধি | তারিখ: ০৫-০৬-২০১০

এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার সিডিখান ইউনিয়নে গতকাল শুক্রবার আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে উভয় পক্ষের ৩০ জন আহত হয়েছে।
আহত ব্যক্তিদের মধ্যে দিদার, জুয়েল ও কামালকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
কালকিনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম জানান, ঘটনাস্থলে র‌্যাবের সদস্য ও অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

http://www.prothom-alo.com/detail/date/2010-06-05/news/68527

Friday 4 June 2010

নাটোরে ঠিকাদার গুলিবিদ্ধ, প্রতিমন্ত্রীর ছেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ

ঠিকাদারি কাজে বাধা দেওয়ার ঘটনায় প্রতিবাদ করায় গতকাল সোমবার বিকেলে নাটোর সদর উপজেলার খোলাবাড়িয়ায় দুর্বৃত্তরা মোহাম্মদ আলী নামের এক ঠিকাদারকে গুলি করেছে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঠিকাদারের অভিযোগ, স্থানীয় সাংসদ যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী আহাদ আলী সরকারের ছোট ছেলে বকুল সরকারের হুকুমে দুর্বৃত্তরা তাঁকে গুলি করে।
নাটোর সদর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আপেল মাহমুদ প্রথম আলোকে বলেন, মোহাম্মদ আলীকে গুলি করার অভিযোগে রাতে চারজনকে আটক করা হয়। তাঁরা হলেন মাসুদ, পলাশ, উত্তম ও রবিউল। অ্যাম্বুলেন্সযোগে রাজশাহী যাওয়ার পথে নাটোর সদর উপজেলার ধালান এলাকা থেকে তাঁদের আটক করা হয়।
প্রতিমন্ত্রী আহাদ আলী সরকারের মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তাঁর ব্যক্তিগত সহকারী (পিএস) শিবনাথ রায় বলেন, ‘স্যার ব্যস্ত আছেন। তবে গুলির ঘটনাটি নিছক ঠিকাদারি নিয়ে হয়েছে। এর সঙ্গে প্রতিমন্ত্রী বা তাঁর ছেলেরা কেউ জড়িত নন।’
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্র জানায়, বিকেল পাঁচটার দিকে ঠিকাদার মোহাম্মদ আলী খোলাবাড়িয়া এলাকায় তাঁর একটি রাস্তা (কালীগঞ্জ সড়ক) উন্নয়নের কাজ দেখতে যান। চারটি মোটরসাইকেলে করে আটজন যুবক ঘটনাস্থলে গিয়ে মোহাম্মদ আলীকে রাস্তায় ইটের খোয়া ফেলতে নিষেধ করেন। এ নিয়ে ওই যুবকদের সঙ্গে তাঁর কথাকাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে ওই যুবকদের মধ্যে মুন্না (৩০) ও মাসুদ (২৮) পিস্তল দিয়ে মোহাম্মদ আলীকে গুলি করেন। গুলি দুটি তাঁর ডান পায়ের ঊরুতে লাগে। হঠাৎ গুলির শব্দে পথচারীরা এদিক-ওদিক ছোটাছুটি শুরু করে। খবর পেয়ে ওই ঠিকাদারের অংশীদার হাবিব হাসান ঘটনাস্থলে গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে নাটোর সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। অবস্থার অবনতি হলে মোহাম্মদ আলীকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।
ঠিকাদার মোহাম্মদ আলী নাটোর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এই প্রতিনিধির কাছে অভিযোগ করে বলেন, ‘বকুল সরকারের হুকুমে তাঁর সঙ্গী মাসুদ ও মুন্না আমাকে হত্যার জন্য গুলি করে।’
জানতে চাইলে বকুল সরকার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি, মোহাম্মদ আলী ঠিকাদারসহ আটজন মোটরসাইকেলে করে খোলাবাড়িয়া থেকে নাটোর আসছিলাম। পথে মুখোশ পরা কিছু সন্ত্রাসী আমাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে আমার পেছনের মোটরসাইকেলের মাসুদ নামের এক ছেলের হাতে ও পায়ে লাগে। এ সময় মোহাম্মদ আলী পড়ে যায়। আমরা দ্রুত চলে আসি। এরপর কী হয়েছে তা বলতে পারছি না।’
নাটোর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘মাসুদকে গ্রেপ্তারের জন্য সদর হাসপাতালে যাই। কিন্তু এর আগেই তিনি সরকারি অ্যাম্বুলেন্সে করে রাজশাহীতে চলে যান।’ ঘটনাস্থলটি জেলার নলডাঙ্গা থানার আওতায়। সেখানকার থানার ওসি ওবাইদুল কাদের বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে মোহাম্মদ আলী ঠিকাদার গুলিবিদ্ধ হওয়ার কথা শুনেছি। তবে এ ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগ করেননি।’

http://www.prothom-alo.com/detail/date/2010-06-01/news/67574

Thursday 3 June 2010

বিএসএফের বাধায় বাঁশঝাড়িয়া চরের দখল পাচ্ছে না বাংলাদেশ : ইছামতি-কালিন্দীতে জেগে ওঠা চরগুলো দখল করে নিয়েছে ভারত



04/05/2010
আলাউদ্দিন আরিফ, সীমান্ত এলাকা থেকে ফিরে
ইছামতি-কালিন্দী নদীতে ভারতের তীর ঘেঁষে জেগে ওঠা এক ডজনের বেশি চর দখল করে নিয়েছে ভারত। বিএসএফের আগ্রাসী তত্পরতায় বাংলাদেশ তীরে জেগে ওঠা ৩০০ একর ভূখণ্ডের বাঁশঝাড়িয়া চরের দখল নিতে পারছে না বাংলাদেশ। ভারতীয়রা নদীশাসনের সর্বাধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে গ্রোয়েন ও স্পার নির্মাণ করে কালিন্দি-রায়মঙ্গল নদীর স্রোত সরিয়ে দিয়ে দখল করতে চাইছে দক্ষিণ তালপট্টি দ্বীপ। সম্প্রতি ভারতের মিডিয়া বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াচ্ছে। ওই অপপ্রচারে অংশ নিচ্ছে বাংলাদেশের কিছু মিডিয়াও। সরকারের উচিত বিষয়টি সঠিক জরিপ করে ব্যবস্থা নেয়া। তালপট্টি ছাড়াও কালিন্দি-রায়মঙ্গল নদীতে সুন্দরবনের ভেতরে জেগে ওঠা আরও বেশকিছু চরের দিকেও শ্যেন দৃষ্টি পড়েছে ভারতের।
সরেজমিন অনুসন্ধানে জানা যায়, স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে গত ৩৯ বছরে ইছামতি-কালিন্দির ভাঙনে কয়েক হাজার একর জমি চলে গেছে ভারতের দখলে। এই শুকনো মৌসুমেও জোয়ারের তোড়ে ভাঙছে নদীর তীর। আর চর পড়ছে ভারতের অংশে। ভাঙন ঠেকানোর জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বাঁধ দেয়ার পরই আবার ভেঙে যায়। পাউবো কর্মকর্তারা বলছেন, বিএসএফের বাধা ও পর্যাপ্ত বরাদ্দ না থাকায় তারা শক্তভাবে বাঁধ তৈরি করতে পারছেন না। বাংলাদেশ অংশে নদীর তীরে এমব্যাংকমেন্ট ও ব্যাংক রিভেটমেন্টের কাজ ভারত সঠিকভাবে করতে না দিলেও যশোরের শার্শা ও ভারতের ২৪ পরগনার মধ্যবর্তী অংশে ইছামতির পলি অপসারণের জন্য নদী খনন করেছে ভারত। ড্রেজার দিয়ে মাটি তুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ভারতে। তৈরি করা হচ্ছে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ এবং বিএসএফের চলাচলের জন্য রাস্তা।
সাতক্ষীরা জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার বাঁশঝাড়িয়া এলাকায় সরেজমিনে দেখা গেছে, ইছামতি-কালিন্দীর বুকে জেগে ওঠা প্রায় ৩০০ একর আয়তনের চরটির দখল পাচ্ছে না বাংলাদেশ। চরটি এখন জঙ্গলে পরিণত হয়েছে। বাঁশঝাড়িয়া ও ভারতের বড় সাহেবখালী নামক স্থানের মধ্যবর্তী এলাকায় বাংলাদেশ ভূখণ্ড ঘেঁষে নদীর বুকে বালুচর জাগে পাকিস্তান আমলে। শুরু থেকেই চরটির প্রতি দৃষ্টি পড়ে ভারতের। তারা কয়েকদফা চরটি দখলে নেয়ার চেষ্টা করে। বিডিআরের বাধায় সেটি সম্ভব হয়নি। নদীর মাঝখানে জেগে ওঠা চরটির আয়তন দিনে দিনে অনেক বেড়েছে। বর্তমানে এ চরটি প্রায় ৩০০ একরে পরিণত হয়েছে।
চরটি বর্তমানে কেওড়া, বাইন, গেওয়া ও খলসেসহ নানা প্রজাতির গাছ-গাছালিতে ভরে গেছে। ভারত জঙ্গলটির মালিকানা আনুষ্ঠানিকভাবে দাবি না করলেও এদেশের জেলে ও মৌয়ালরা গেলেই বাধা দেয় বিএসএফ। যদিও চরটির প্রায় পুরোটাই বাংলাদেশের।
স্থানীয় কলেজ শিক্ষক ও সাংবাদিক ড. মিজানুর রহমান জানান, বাঁশঝাড়িয়ার চরটি এখন চোরাচালানি ও চোরাকারবারিদের নিরাপদ রুট হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। বাঁশঝাড়িয়া বিডিআর বিওপির আওতাধীন এ জঙ্গলের রক্ষণাবেক্ষণে বিডিআর জওয়ানরা সবসময় তত্পর। তারপরেও ভারতীয় ও বাংলাদেশী নাগরিকরা বিডিআরের চোখ ফাঁকি দিয়ে গাছপালা কেটে নিচ্ছে। কালীগঞ্জের স্বদরকাটি, মৌখালী, মহেশ্বরপুর ও বাহাদুরপুর গ্রামের লোকেরা জানান, চরটি রক্ষা করতে হলে বিডিআরকে নজরদারি আরও বাড়াতে হবে। কিছু ভারতীয় নাগরিক প্রতিনিয়ত জঙ্গলের কাঠ কেটে নিয়ে যাচ্ছে। প্রায়ই জঙ্গলের ভেতরে ভারতীয় ফেনসিডিল, শাড়ি-কাপড়সহ প্রভৃতি মালামাল পাওয়া যায়। ইতোপূর্বে চোরাপথে আসা ভারতীয় ফেনসিডিল, থ্রি-পিসের কাপড় ও থান কাপড় উদ্ধার করে বিডিআর। বাঁশঝাড়িয়া বিওপিতে কর্তব্যরত বিডিআর সদস্যরা জানান, চরটি বাংলাদেশের এতে কোনো সন্দেহ নেই। এটি রক্ষার জন্য আমাদের আন্তরিকতারও কোনো ঘাটতি নেই।
দক্ষিণ তালপট্টি দ্বীপ প্রসঙ্গে জানা গেছে, নদীশাসনের উন্নত কৌশল প্রয়োগ করে ভারত নদীর স্রোত ঠেলে দিয়ে দক্ষিণ তালপট্টির দখল নিতে চাইছে। তালপট্টি দ্বীপটি রায়মঙ্গল-হাড়িয়াভাঙা নদীর মধ্যবর্তী চ্যানেলে। ভারত চাইছে স্রোত সরিয়ে দিয়ে তালপট্টি দ্বীপটি দখলে নিতে। সম্প্রতি ভারতের মিডিয়ায় বলা হয়েছে, তালপট্টি দ্বীপ ডুবে গেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. আবদুর রব ও আইন বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুলসহ বিশেষজ্ঞরা জানান, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিকভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় ভারত এই দ্বীপটির দখল নিতে চাইছে। নিজেদের স্বার্থে ভারত দ্বীপটি সম্পর্কে বিভ্রান্তিকর অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশেরও বেশ কিছু মিডিয়া এতে মদত দিচ্ছে। বাংলাদেশ সরকারের উচিত উপযুক্ত জরিপের মাধ্যমে অনুসন্ধান করে বিষয়টি সবার কাছে পরিষ্কার করা।
সীমান্ত নদী ইছামতি-কালিন্দীর কালিঞ্চি থেকে বাঁশঝাড়িয়া পর্যন্ত সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, নদীর পুরো তীর ভারতীয় আগ্রাসনের শিকার। নদীর পশ্চিম তীরে ভারতীয় অংশে একের পর এক চর পড়ছে; আর ভেঙে বিলীন হচ্ছে পূর্বতীর বাংলাদেশ। ভিটেমাটি আর ফসলের জমি হারিয়ে হাহুতাশ করছে নদীতীরের লোকেরা। ভারতের অংশে নদীতীরের পুরোটাই ইট-পাথর দিয়ে শক্ত করে বাঁধা। বাংলাদেশের সীমানা পিলার ‘১ এমপি’র বিপরীতে নদীর তীরজুড়ে ভারতীয় অংশে স্থাপন করা হয়েছে শতাধিক ইটভাটা। প্রতিদিন ইটভাটা থেকে আধলা ইট ফেলে নদী ভরাট করা হচ্ছে। বাঁশের খুঁটি গেড়ে পানি চলাচলে প্রতিবন্ধকতা ও স্পার (গ্রোয়েন) তৈরি করে নদীর স্রোত ঠেলে দেয়া হচ্ছে বাংলাদেশের দিকে। ফলে বাংলাদেশ অংশে কিছু সিসি ব্লক থাকলেও সেগুলো জোয়ারভাটায় তলিয়ে যাচ্ছে। জোয়ারভাটার টানে সর্বগ্রাসী হয়ে ভাঙছে ইছামতি। বাংলাদেশ তীরের কাছ দিয়ে নদীর বুক থেকে প্রতিদিন ইঞ্জিনচালিত হাজার হাজার ভারতীয় নৌকা বালু তুলছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, আগে বাধা দিলেও পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহের পর মাটি তোলায় বিডিআর এখন বাধা দিচ্ছে না।
সাতক্ষীরার টাউন শ্রীপুর ইউনিয়নের রামনগর মৌজায় প্রায় ১০০ একর জমি গত এক দশকে ভেঙে ভারতের দিকে চলে গেছে। বাংলাদেশের কোমরপুর ও ভারতের শাকচুড়ার মধ্যবর্তী স্থানের বহু জমি চলে গেছে ভারতের দখলে। কোমরপুরের কৃষক মাজেদ গাজী (৬৫) জানান, ভাঙনে তার বাপ-দাদার ভিটেমাটি চলে গেছে। তার দেখা মতে, পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাঁধ ভেঙে প্রায় চারশ’ বিঘা জমি চলে গেছে। তার দেখাতেই তিনবার বাঁধ ভেঙেছে আর নতুন বাঁধ হয়েছে। ভোমরা ইউনিয়নের হাড়তদা মাঝেরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আবদুল হাই জানান, ভারতের চব্বিশ পরগনা জেলার দোলদানা এলাকায় যে ইটভাটাগুলো বসানো হয়েছে, আগে সেই জমিগুলোর অধিকাংশই ছিল বাংলাদেশ ভূখণ্ড। নদী ছিল তারও অনেক পশ্চিমে। এখন নদী সরে এসেছে প্রায় আধা কিলোমিটার পূর্বে। ওই এলাকাতেই ভারতীয় অংশে দেখা গেছে অসংখ্য ইটভাটা। নদীর মাঝখান থেকে শত শত ইঞ্জিনচালিত নৌকায় ভারতীয় পতাকা উড়িয়ে মাটি কেটে নেয়া হচ্ছে। নৌকায় কর্মরত ভারতীয় নাগরিকরা জানান, তাদের বাড়ি ভারতের চব্বিশ পরগনার বশিরহাট এলাকায়। প্রতিদিনই এখানে বালু নিতে আসে তারা। কেউ বাধা দেয় কিনা, এর উত্তরে তারা জানায়, হাসিনা সরকার আসার পর কেউ আর বাধা দেয় না। তাই হাসিনা সরকারের প্রতি তারা কৃতজ্ঞ।
দেবহাটা পূর্ব এলাকার ভাতশালা গ্রামের বাসিন্দা বাবুল আক্তার জানান, তার বাপ-দাদার ভিটেমাটিসহ ৪ একর জমি এখন ইছামতির পেটে। এখনও তাকে ওই জমির খাজনা দিতে হয়। তিনি জানান, এখন যেখানে নদীর পূর্বপাড়, আগে তা ছিল আনুমানিক ৪শ’ গজ পশ্চিমে। এখন ওই তীরে চর জেগে এই তীরে ভাঙছে। একই গ্রামের বাসিন্দা মকবুল বিশ্বাস জানান, তিনি ও তার আত্মীয়-স্বজনদের প্রায় ১০০ বিঘা জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। আর চর পড়েছে ওই তীরে।
ভারতের অংশে রাজনগর ও কালুতলা এলাকায়ও চর পড়ছে। এই তীরে দেবহাটার সুশীলগাজী খানপাড়া এলাকার বাসিন্দারা জানান, তাদের চোখের দেখাতেই ওয়াপদার ৩টি বাঁধ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। একবার বাঁধ ভাঙলে বাংলাদেশের ভেতরে দেড়-দুইশ’ গজ ভেতরে এনে আবার বাঁধ দেয়া হয়। সিসি ব্লক দিয়ে শক্তভাবে বাঁধ তৈরি করা সম্ভব না হওয়ায় প্রতি বছর ভেঙে যাচ্ছে সুশীলগাজী খানপাড়া গ্রামের লোকের জমি। ওই গ্রামের বাসিন্দা হানিফ জানান, এখন যেখানে নদীর পশ্চিম পাড়, আগে সেখানে তারা ফুটবল খেলতেন। কিন্তু এখন সেটা ভারতের হয়ে গেছে। দেবহাটার নওয়াপাড়া এলাকায়ও দেখা গেছে ভয়াবহ ভাঙন।
দেবহাটার টাউন শ্রীপুর এলাকার বিডিআর ক্যাম্পের কমান্ডার জানান, নদীর মাঝখান থেকে দুই দেশের সীমানা নির্ধারণ করা। যে পাড়েই চর পড়বে, সীমানা নির্ধারণ হবে নদীর মাঝখান থেকে। ফলে নদী ভেঙে ভারতীয় অংশে চর পড়লেও আইনগতভাবে তারা সেটার দখলে যেতে পারেন না। তবে এর প্রতিবাদ জানান দেবহাটা খানবাহাদুর আহসানউল্লাহ কলেজের সহকারী অধ্যাপক আবু তালেব। তিনি বলেন, ভারত গায়ের জোরে দাবি করছে সীমানা মাঝখান থেকে। ওই এলাকায় সীমানার বিষয়টি বিভিন্ন চুক্তিতে মীমাংসিত হয়ে গেছে।
সাতক্ষীরা জেলা পাউবো কর্মকর্তারা জানান, স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে নদীর ভাঙনে কয়েক লাখ বিঘা জমি ভারতের দখলে চলে গেছে। ইছামতি-কালিন্দীর পুরো ৭৫ কিলোমিটার সীমান্তেই বাংলাদেশ অংশে নদী ভাঙছে আর ভারতীয় অংশে চর পড়ছে। এখনও এক, তিন ও পাঁচ নম্বর ফোল্ডারে প্রায় ১০ কিলোমিটারের বেশি এলাকায় বেড়িবাঁধ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। ২৭ কিলোমিটার বাঁধ পুনর্নির্মাণ জরুরি। এ নিয়ে একটি প্রকল্পও জমা দেয়া আছে; কিন্তু বরাদ্দ না পাওয়ায় বাঁধটি সঠিকভাবে মেরামত করা যাচ্ছে না। তারা আরও জানান, বাঁশঝাড়িয়ায় জেগে ওঠা চর আমাদের হওয়া সত্ত্বেও বিএসএফের বাধায় আমরা দখলে যেতে পারছি না। টাউন শ্রীপুর ও হাড়তদা এলাকায় আরও দুটি নতুন চর জেগে উঠেছে, সেগুলোও ভারতের দখলে যাবে। ফলে বাংলাদেশ সীমান্তে ভাঙন আরও তীব্র হবে। তারা আরও বলেন, ভারত ইছামতি খননের যে প্রকল্প হাতে নিয়েছে, বাংলাদেশের উচিত তার প্রতিবাদ করা। খনন হওয়া উচিত ১৯৬২ সালের রেকর্ড অনুযায়ী।

http://www.amardeshonline.com/pages/details/2010/05/04/30231

রাজধানীতে ঝুট ব্যবসায়ী ও সিকিউরিটি গার্ড খুন : স্বামীকে কুপিয়েছে স্ত্রী



01/05/2010
স্টাফ রিপোর্টার
রাজধানীর কাঁঠালবাগানে গতকাল দুপুরে প্রকাশ্য দিবালোকে দুর্বৃত্তরা রোকনউদ্দিন বাবু (৪৮) নামের এক ঝুট ব্যবসায়ীকে গুলি করে হত্যা করেছে। নিহত রোকন স্থানীয় আওয়ামী লীগের কর্মী ছিলেন বলে স্বজনরা জানিয়েছেন। পুলিশের ধারণা, ঝুট ব্যবসা নিয়ে বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষের গ্রুপ তাকে গুলি করে হত্যা করেছে। পুলিশ জানায়, রোকন একটি মামলায় জেল খেটে ৪-৫ দিন আগে বের হয়। অপরদিকে, কাফরুলে ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে আহত সিকিউরিটি গার্ড আবদুল জলিল (৫৫) হাসপাতালে মারা গেছেন। এছাড়া মগবাজারে পারিবারিক কলোহে স্ত্রীর ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর আহত হয়েছেন জামাল উদ্দিন (২৮) নামে এক ব্যক্তি। প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, দুপুর দেড়টার দিকে রোকনউদ্দিন জুমার নামাজ পড়ে বাসায় ফিরছিলেন। বাসায় যাওয়ার সময় তিনি কাঁঠালবাগান পান্থপথের কাছে গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালের সামনে একটি ভিসিডি দোকানের সামনে এক ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলেন। আগে থেকেই সেখানে ওঁত্ পেতে থাকা ৩-৪ যুবক রোকনউদ্দিনের কাছে এসে দাঁড়ায়। কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই ওই যুবকরা অস্ত্র বের করে রোকনউদ্দিনকে লক্ষ্য করে ৫-৬ রাউন্ড গুলি ছোড়ে। তার বাম পাজর, বুক, পেট, মাথা ও হাতে ৪-৫টি গুলি লাগে। রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন রোকন। আশপাশের লোকজন প্রথমে তাকে স্থানীয় গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালে নিয়ে যান। অবস্থা সঙ্কটাপন্ন দেখে সেখান থেকে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। বেলা ২টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিত্সকরা মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় রোকনউদ্দিনকে হাসপাতালে নেয়ার পর সেখানে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ কর্মী সমর্থকরা ভিড় করে। তারা রোকনের লাশ ময়নাতদন্ত ছাড়াই জোরপূর্বক হাসপাতাল থেকে নেয়ার চেষ্টা করে। আইন লঙ্ঘন করে হাসপাতাল থেকে লাশ নেয়াকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ কর্মী ও হাসপাতালের কর্মচারীদের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে। এ সময় হাসপাতালের জরুরি বিভাগে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে হাসপাতাল ক্যাম্পের পুলিশ ও শাহবাগ থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়।
রোকনের ছেলে সজিব জানান, তার বাবা ও স্থানীয় আমিন উদ্দিন একসঙ্গে ঝুট ব্যবসা করতেন। কারও সঙ্গে তার বিরোধ আছে কিনা এ ব্যাপারে তারা কিছুই জানেন না। স্থানীয় একটি সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগের একটি গ্রুপের সঙ্গে রোকনের বিরোধ ছিল। রোকন গ্রুপ ওই এলাকার ঝুট ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করায় প্রতিপক্ষরা ক্ষুব্ধ ছিল। এর আগেও রোকনের এক সহযোগী ঝুট ব্যবসার বিরোধের কারণে সন্ত্রাসীদের হাতে খুন হন।
কলাবাগান থানার ওসি একেএম শাহিন মণ্ডল বলেন, ঝুট ব্যবসার বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষের গুলিতে খুন হয়েছে রোকনউদ্দিন। তিনি বলেন, একটি গ্রুপের সঙ্গে ঝুট ব্যবসা নিয়ে তার বিরোধ চলছিল বলে জানা গেছে। তবে কারা এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে এ ব্যাপারে এখও নিশ্চিত হওয়া যায়নি বলেন জানান ওসি। তিনি বলেন, ঘাতকদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। নিহত রোকনের বাবার নাম বশিরউদ্দিন। বাসা গ্রিন রোডের ৬৯,নম্বরে। তিনি দুই সন্তানের জনক ছিলেন।
সিকিউরিটি গার্ড খুন : কাফরুলে ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে আহত সিকিউরিটি গার্ড আবদুল জলিল বৃহস্পতিবার রাতে চিকিত্সাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। নিহত জলিলের ছেলে ফরিদ হোসেন জানান, গত ৩ এপ্রিল রাতে ডিউটি শেষে বাসায় ফিরছিলেন তার বাবা। রাত সাড়ে ১০টার দিকে কাফরুলের সেনপাড়া এলাকায় ছিনতাইকারীদের কবলে পড়েন। ছিনতাইকারীরা তার পেট ও বুকে ছুরিকাঘাত করে সঙ্গে থাকা মোবাইল ফোন ও টাকা নিয়ে যায়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। চিকিত্সাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টায় তার মৃত্যু হয়। আবদুল জলিলের বাসা ৪৪১/২-বি, সেনপাড়া পর্বতা এলাকায়।
স্বামীকে ছুরিকাঘাত : রাজধানীর মগবাজারে পারিবারিক কলোহে স্ত্রীর বঁটির আঘাতে আহত হয়েছেন জামাল উদ্দিন নামের এক ব্যক্তি। জানা যায়, জামাল উদ্দিনের দুই স্ত্রী। প্রথম স্ত্রী রীনা বেগমকে নিয়ে থাকেন ২১০/১, বড় মগবাজারের বাসায়। গতকাল দুপুরে বাজার করার টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে স্বামীর সঙ্গে রীনার ঝগড়া হয়। এক পর্যায়ে রান্নাঘর থেকে বঁটি এনে রীনা জামালকে এলোপাতাড়ি কোপায়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

http://www.amardeshonline.com/pages/details/2010/05/01/29953

বিনা টেন্ডারের ৩ বিদ্যুত্ কেন্দ্রে গচ্চা যাবে ৭৩৫৮ কোটি টাকা



30/04/2010
এম আবদুল্লাহ
টেন্ডার ছাড়া ১০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার ৩টি ভাড়া বিদ্যুেকন্দ্রের অনুমোদন দিয়েছে ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। গতকালের সভায় এ অনুমোদন দেয়া হয়। এর আগে দুটি কোম্পানির সঙ্গে এ সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক সই করেছে সরকার। ডিজেলচালিত এসব বিদ্যুেকন্দ্র থেকে উচ্চমূল্যে বিদ্যুত্ কিনতে গিয়ে তিন বছরে সরকারকে গচ্চা দিতে হবে ৭ হাজার ৩৫৮ কোটি টাকা। এ পরিমাণ অর্থ ভর্তুকি হিসেবে সরকারের কাছে চেয়েছে পিডিবি। অথচ এর আংশিক অর্থ ব্যয় করলে গ্যাসের উত্পাদন বাড়িয়ে গ্যাসভিত্তিক সাশ্রয়ী বিদ্যুেকন্দ্র স্থাপন করা যায়। সাড়ে ৭ হাজার কোটি টাকায় বর্তমান বাজারমূল্যে ১১শ’ মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুেকন্দ্র স্থাপন সম্ভব বলেও সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। এমনকি দু’মাস বেশি সময় দিয়ে ফার্নেস ওয়েলভিত্তিক কেন্দ্র স্থাপন করলেও ভর্তুকি অর্ধেকে নামিয়ে আনা যেত। এছাড়া সরকারি প্রতিষ্ঠান ইলেকট্রিসিটি জেনারেশন কোম্পানি অব বাংলাদেশ (ইসিজিবি) ২ হাজার কোটি টাকা অর্থায়নের অভাবে সিদ্ধিরগঞ্জে ১৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতার দুটি পিকিং প্লান্ট স্থাপন করতে পারছে না দীর্ঘদিন ধরে। তাছাড়া এরই মধ্যে স্থাপিত ব্যয়বহুল রেন্টাল বিদ্যুতের ভর্তুকি দিতেই পিডিবি ফতুর হয়ে যাচ্ছে। দিনে দিনে প্রতিষ্ঠানটি অর্থনৈতিক দেউলিয়াত্বের দিকে অগ্রসর হচ্ছে।
টেন্ডারে পাওয়া অর্ধেক মূল্যের ফার্নেস ওয়েলভিত্তিক বিদ্যুেকন্দ্রের প্রস্তাব ঝুলিয়ে রেখে প্রতি ইউনিট বিদ্যুত্ ১৪ টাকা ৪০ পয়সা দরে কেনার শর্তে ‘কুইক রেন্টাল’ নামে টেন্ডারবিহীন ডিজেলভিত্তিক যে বিদ্যুেকন্দ্র বসানো হচ্ছে, তার যৌক্তিকতা ও প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ৪ থেকে ৬ মাসের মধ্যে ব্যয়বহুল বিদ্যুেকন্দ্র ৩টি যখন চালু হবে, তখন শীত মৌসুমের কারণে বিদ্যুতের চাহিদা এমনিতেই কমে আসবে। কয়েকটি গ্যাসকূপ সংস্কার করে উত্পাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে সরকারি খাতের গ্যাসভিত্তিক কেন্দ্রগুলো থেকেও উত্পাদন ৫শ’ মেগাওয়াট পর্যন্ত বাড়ানো সম্ভব। এসব সাশ্রয়ী বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ না করে রেন্টাল বিদ্যুেকন্দ্রের দিকে অতিমাত্রায় ঝুঁকে পড়ে গোটা বিদ্যুত্ খাতকে আর্থিক ঝুঁকির মুখে ঠেলে দেয়া হচ্ছে বলেও মতপ্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
তীব্র বিদ্যুত্ সঙ্কটে গণঅসন্তোষের মুখে পড়া সরকার দ্রুত বিদ্যুত্ ভোগান্তি সহনীয় পর্যায়ে আনতে তোড়জোড় চালাচ্ছে। কিন্তু সরকারি তত্পরতায় কেবল স্বল্পমেয়াদি ব্যয়বহুল ব্যবস্থাই প্রাধান্য পাচ্ছে। সরকারি ও আইপিপি খাতের বড় প্রকল্পগুলোর তেমন কোনো অগ্রগতিই হচ্ছে না। এ অবস্থায় হঠাত্ করেই সরকার বিনা টেন্ডারে বিদ্যুেকন্দ্র বসাতে তত্পর হয়ে ওঠে। রাতারাতি আলোচনা করে যুক্তরাজ্যভিত্তিক এগ্রিকো ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডকে খুলনায় ১০০ মেগাওয়াট ও ঘোড়াশালে ৩ বছর মেয়াদি ১০০ মেগাওয়াট রেন্টাল কেন্দ্র স্থাপনের কাজ দেয়া হয়েছে। ২০ এপ্রিল এ সংক্রান্ত প্রাথমিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এ দুটি কাজ দেয়ার সময় বলা হয়েছিল কেবল অভিজ্ঞ বিদেশি কোম্পানিকে বিনা টেন্ডারে আলোচনার মাধ্যমে দেয়া হবে। এক সপ্তাহের মধ্যেই সরকার সে অবস্থান থেকে সরে এসে একইভাবে বিনা টেন্ডারে দেশ এনার্জি লিমিটেডের সঙ্গে সিদ্ধিরগঞ্জে ১০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার ৩ বছর মেয়াদি রেন্টাল কেন্দ্র স্থাপনের জন্য সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করে। দেশ এনার্জির মালিক এফবিসিসিআই সভাপতি আনিসুল হক।
এগ্রিকো ইন্টারন্যাশনালের সঙ্গে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী ১ম মাস থেকে ২৭তম মাস পর্যন্ত পিডিবি তাদের কাছ থেকে প্রতি ইউনিট বিদ্যুত্ কিনবে ১৪ দশমিক ৪০২৫ টাকা হারে। ২৮তম মাস থেকে ৩৬তম মাস পর্যন্ত বিদ্যুতের মূল্য হবে ইউনিটপ্রতি ১৪ দশমিক ৩৫৬২ টাকা। দেশ এনার্জির সঙ্গে সম্পাদিত প্রাথমিক চুক্তিতে বিদ্যুতের মূল্য নির্ধারিত হয়েছে প্রতি ইউনিট ১৩ দশমিক ৩২৯২৫ টাকা। অথচ মাত্র কয়েকদিন আগে ডিজেলচালিত ভেড়ামারা ১১০ মেগাওয়াটের জন্য চুক্তি করা হয়েছে ইউনিটপ্রতি ১২ দশমিক ৫৮৯৬ টাকায়।
বর্তমানে পিডিবি বিতরণ কোম্পানিগুলোর কাছে প্রতি ইউনিট বিদ্যুত্ বিক্রি করছে গড়ে ২ টাকা ৩৭ পয়সা দরে। এগ্রিকো থেকে ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত্ নিয়ে বিতরণ কোম্পানির কাছে বিক্রি করে প্রতি মাসে ১৪০ কোটি ৪০ লাখ ৪১ হাজার টাকা করে লোকসান দিতে হবে। আর দেশ এনার্জি থেকে ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত্ নিয়ে বিতরণ কোম্পানির কাছে বিক্রি করলে পিডিবির মাসিক লোকসান হবে ৬৪ কোটি টাকা। অর্থাত্ ৩০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত্ ক্রয়-বিক্রয় খাতে পিডিবির মাসিক লোকসান ২০৪ কোটি ৪০ লাখ ৪১ হাজার টাকা। এ অর্থ সরকারের কাছ থেকে ভর্তুকি হিসেবে চেয়েছে পিডিবি। এ হিসেবে সরকারকে ৩ বছরে এই ৩০০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের জন্য নিট গচ্চা দিতে হবে ৭ হাজার ৩৫৮ কোটি ৫৪ লাখ ৭৬ হাজার টাকা। সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদনের জন্য পেশকৃত সারসংক্ষেপ থেকে এ হিসাব পাওয়া গেছে।
এখানে উল্লেখ্য, তীব্র বিদ্যুত্ সঙ্কট মোকাবিলায় জরুরি ব্যবস্থা হিসেবে সরকার প্রথমে তেলভিত্তিক ৮টি রেন্টাল বিদ্যুত্ কেন্দ্রের জন্য দরপত্র আহ্বান করে। ৫৩০ মেগাওয়াট ক্ষমতার এসব বিদ্যুেকন্দ্র চলতি গরমের মৌসুম শুরুর আগেই চালুর কথা ছিল। কিন্তু টেন্ডার আহ্বান, মূল্যায়ন ও অনুমোদন প্রক্রিয়ায় বিলম্বের কারণে এসব রেন্টাল বিদ্যুেকন্দ্র স্থাপনের মূল লক্ষ্যই ভেস্তে যায়। তবুও বিলম্বে ৫টি কেন্দ্রের জন্য চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। তন্মধ্যে ৪টি স্থাপনের কাজ চলছে। একটির ঠিকাদার (জামালপুর) অপারগতা জানিয়েছে। বাকি ৩টি সিদ্ধান্তহীনতায় এখনও ঝুলে আছে। সেগুলো সময়মত কার্যাদেশ দিলে আগামী ২/৩ মাসের মধ্যে ৭ থেকে ৮ টাকা দরে বিদ্যুত্ পাওয়া সম্ভব হতো বলে পিডিবি সূত্র জানিয়েছে।
ঝুলে থাকা বিদ্যুেকন্দ্র ৩টি হচ্ছে মদনগঞ্জ ১১০ মেগাওয়াট, রাজশাহীর কাটাখালী ৫০ মেগাওয়াট ও সৈয়দপুর ৫০ মেগাওয়াট। ফার্নেস ওয়েলভিত্তিক এসব রেন্টাল বিদ্যুেকন্দ্রের প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের প্রস্তাব ছিল ৭ থেকে ৮ টাকার মধ্যে।
এদিকে সর্বশেষ পাওয়া খবরে জানা গেছে, মদনগঞ্জ ১১০ মেগাওয়াট রেন্টাল বিদ্যুেকন্দ্রের জন্য সামিটের সঙ্গে গতকাল প্রথমিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। তবে টেন্ডারে সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠানকে না দিয়ে বেশি দরে সামিটকে দেয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। জানা গেছে, সামিটের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে ৭ টাকা ৯৬ পয়সা দরে। অথচ টেন্ডারে সর্বনিম্ন দরদাতার সঙ্গে নেগোসিয়েশনে ৭ টাকা ৭৭ পয়সা দর পাওয়া গিয়েছিল। বেশি দরে সামিটকে কাজ দেয়ার কারণে এক্ষেত্রে দৈনিক ৬ লাখ টাকা করে বছরে ২০ কোটি টাকা এবং ৫ বছরে ১০০ কোটি টাকা অতিরিক্ত গুনতে হবে সরকারকে। কেবল দলীয় বিবেচনায় এটা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এছাড়া সামিটের মালিকানাধীন খুলনা পাওয়ার কোম্পানিকে আরও ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুেকন্দ্র স্থাপনের কাজ দেয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে। সেক্ষেত্রে বিদ্যুতের দর নির্ধারিত হয়েছে ৭ টাকা ৮০ পয়সা। সাভারের কবিরপুরে ১০০ মেগাওয়াটের আরও একটি ফার্নেস ওয়েলভিত্তিক বিদ্যুেকন্দ্রের জন্য ওরিয়ন গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে প্রাথমিক সমঝোতা হয়েছে বলেও সূত্র জানিয়েছে।
এসব বিষয়ে পিডিবি বা বিদ্যুত্ মন্ত্রণালয়ের কেউ নাম প্রকাশ করে কথা বলতে রাজি হননি। পিডিবি চেয়ারম্যান এসএম আলমগীর কবিরের সঙ্গে কথা বলার জন্য তার মোবাইল ফোনে বার বার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে পিডিবি এবং মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা তাদের উদ্বেগ ও অসন্তোষের কথা জানিয়েছেন।

http://www.amardeshonline.com/pages/details/2010/04/30/29796

জকিগঞ্জে বরাক সুরমা কুশিয়ারার ভাঙনে ভারতে গেছে ২৬শ’ একর জমি : আরও ৪শ’ একর দখলে নিতে চায় ভারত



28/04/2010

আলাউদ্দিন আরিফ, সীমান্ত এলাকা থেকে ফিরে
সিলেটের জকিগঞ্জ ও জৈন্তাপুরে সীমান্ত নদীর ভাঙনে সৃষ্ট চরের দখল নিতে আগ্রাসী তত্পরতা চালাচ্ছে বিএসএফ। বরাক ও সুরমা-কুশিয়ারার ভাঙনে এরই মধ্যে জকিগঞ্জের প্রায় ২৬শ’ একরের বেশি জমি ভারতের দখলে চলে গেছে। আরও ৪শ’ একর জমির দখল নিতে তত্পর ভারত। বরাক, সুরমা ও কুশিয়ারায় জেগে ওঠা চরগুলো দখলে নিতে বিগত ৩৭ বছরে বিডিআর-বিএসএফের মধ্যে ৭৭ বার মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়েছে। বিএসএফ হামলা চালিয়েছে ১৩৪ বার। অনুপ্রবেশ করেছে ৪শ’ বারের বেশি। তাদের গুলিতে মারা গেছে ৫৫ জনেরও বেশি বাংলাদেশী নাগরিক। আহতের সংখ্যাও অনেক। ভারতের মনিপুর রাজ্য থেকে বরাক নদী সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার অমলসীদে এসে দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে সুরমা ও কুশিয়ারা নাম নিয়েছে। বরাক বাংলাদেশে প্রবেশের আগে প্রায় দেড় কিলোমিটার এলাকা পর্যন্ত আন্তর্জাতিক সীমানা। বরাকের মোহনায় পূর্ব অংশে ভারত আর পশ্চিম অংশে বাংলাদেশ। অমলসীদে সুরমা-কুশিয়ারার উত্সমুখে আন্তর্জাতিক সীমারেখা চলে এসেছে সুরমার পশ্চিম তীরে। এখানে জেগে ওঠা ২৫৬ একর আয়তনের একটি চর ভারত দাবি করছে তাদের ভূমি হিসেবে। তবে এই জমিতে বিএসএফ কখনও তাদের চৌকি বসায়নি। চর জেগে ওঠার পর থেকেই এই জমি চাষাবাদ করে আসছিলেন বাংলাদেশের কৃষকরা। কিন্তু এখন বিএসএফের বাধায় চাষাবাদ করা সম্ভব হয় না।
স্থানীয় বাসিন্দা ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের দেয়া তথ্যমতে, ২৫৬ একরের ওই চর ছাড়াও সুরমা-কুশিয়ারার ভাঙনে একটি পুরো গ্রামসহ আরও প্রায় ২৬শ’ একরেরও বেশি জমি চলে গেছে ভারতের দিকে। পানি উন্নয়ন বোর্ড জকিগঞ্জ লক্ষ্মীগঞ্জ অফিসের কর্মকর্তা ও অমলসীদের স্থানীয় বাসিন্দা ফজলুর রহমান জানান, জকিগঞ্জে কুশিয়ারা নদীর মাধ্যমে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের ৪৭ কিলোমিটার, সুরমা নদী ২৭ কিলোমিটার সীমানা নির্ধারণ করেছে। এই বিশাল সীমান্তজুড়েই রয়েছে নদীভাঙন সমস্যা। তাদের হিসাব অনুযায়ী সুরমা ও কুশিয়ারার ভাঙনে জকিগঞ্জের অমলসীদে বরাকের ভাঙনের মুখে পূর্ব অলিগড় নামে পুরো একটি গ্রাম নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। নদী চলে এসেছে বাংলাদেশ ভূখণ্ডের ভেতরে। সেই সঙ্গে বাংলাদেশ অংশে চর পড়ে আন্তর্জাতিক সীমারেখাও এগিয়ে এসেছে বাংলাদেশ ভূখণ্ডের দিকে। অলিগড়, রারাই, মানিকপুর, শষ্যকুড়ি এলাকার প্রায় এক হাজার একর; জকিগঞ্জ পৌরসভা এলাকায় ৫০-৬০ একর, হাইদ্রাবন এলাকায় ৫০ থেকে ৫৫ একর, ভূঁয়ার মোড় এলাকায় এক হাজার একর, লোহার মহল, গাগলাজুর এলাকায় প্রায় ৬০ একর, সুপ্রাকান্দি এলাকায় প্রায় ৪০ একর, গধাধর-বীরশ্রী এলাকায় প্রায় ৫৫ একর, বড়পাথর ও পীরনগর এলাকায় প্রায় ৬০ একর, শাহ্শরিফ মোকাম এলাকায় ৩০ থেকে ৩৫ একর, উজিরপুর এলাকায় প্রায় ৭০ একর জমি ভেঙে চর পড়েছে বাংলাদেশের অংশেই। তবে নদী দিয়ে সীমানা চিহ্নিত হওয়ায় ভারতীয়রা ওই চরগুলো দখলের তত্পরতা চালাচ্ছে।
ভূঁইয়ার মোড় এলাকার বাসিন্দা শহীদুর রহমান জানান, ওই গ্রামের প্রায় এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে নদী ভাঙছে। এখানে কুশিয়ারা নদী ইংরেজি বর্ণ ‘ইউ’-এর আকার নিয়ে বাংলাদেশের দিকে এগিয়ে আসছে। চর পড়ছে বিপরীত দিকে। সম্প্রতি এখানকার একটি স্কুল নদীতে ভেঙে গেছে। সুরমান নদীতে অমলসীদ অংশে ৫০ একর, বারটকরি ও উত্তরকূল এলাকায় ৩০ একর, মুন্সিরবাজার এলাকায় ৩০ থেকে ৪০ একর, শিবেরচক ও ডহরের মুড়া এলাকায় ২০ থেকে ২৫ একর, কালীগঞ্জের বাল্লা সীমান্ত এলাকায় প্রায় ৬০ একর জমি ভারতের দখলে চলে গেছে।
বিপুল পরিমাণ জমি চলে যাওয়ার কারণ হিসেবে স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের অফিসের কর্মকর্তারা জানান, খরস্রোতা বরাকের তীব্র স্রোত সরাসরি বাংলাদেশ ভূখণ্ডে এসে ধাক্কা লাগে। পানির তোড়ে তীব্র স্রোতে ভেঙে যায় বেড়িবাঁধসহ মানুষের ঘরবাড়ি। আর চর পড়ে উল্টোপাশে। এভাবেই আমাদের মূল্যবান ভূখণ্ড চলে যাচ্ছে।
অমলসীদ গ্রামের বাসিন্দা নূরুদ্দীন (৫০) জানান, অমলসীদের পূর্ব অলিগড় গ্রামটির পুরোটাই নদীতে ভেঙে গেছে। গ্রামের সর্বশেষ বাড়িটিতে এখন তারা আছেন। কয়েক বছর আগে পাথরের সিসি ব্লক দিয়ে এমব্যাংকমেন্ট করায় তাদের বাড়িটি রক্ষা পেয়েছে। সেই সঙ্গে কমেছে নদী ভাঙনের তীব্রতা। তিনি আরও জানান, তাদের বাপদাদা, আত্মীয়স্বজনের ভিটেমাটি সবই গেছে। এখন সেগুলো ভারতের অংশ হয়ে গেছে। একই গ্রামের সাহাবুদ্দীন, আবদুল জাব্বার, গনি মিয়া, ফোরকান মিয়া, রহমান মিয়া, জুনু মিয়া, ফাতাই মিয়াসহ অনেকেই জানান নদীর ভাঙনে তাদের ভিটেমাটি, ফসলের জমি হারানোর কথা। যে এলাকায় আগে তাদের ভিটেমাটি ছিল সেখানে এখন বিএসএফের ক্যাম্প। ওইসব জমিতে চাষাবাদ করে ভারতের কৃষকরা। আর ভাঙনের শিকার জকিগঞ্জের লোকজন চলে যাচ্ছে অন্য এলাকায়।
জকিগঞ্জ ও জৈন্তাপুর এলাকার বাসিন্দারা জানান, জকিগঞ্জের অমলসীদ সীমান্তের ২৫৬ একর ও জৈন্তাপুরের ডিবির ও কেন্দ্রী হাওরের ১৩৫ একর জমি দখল করে নিতে চায় ভারত। এসব জমি দীর্ঘদিন থেকে অমীমাংসিত অবস্থায় রয়েছে। এ নিয়ে বিডিআর-বিএসএফের উচ্চপর্যায়ে বেশ কয়েকবার বৈঠক হয়েছিল। কিন্তু কোনো মীমাংসা করা সম্ভব হয়নি। সীমান্তবর্তী এই ৪শ’ একর জমির দখল নিতে বিএসএফ মরিয়া হয়ে ওঠার কারণ সম্পর্কে জানা গেছে, প্রতিরক্ষা ও ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে এই জমি ভারতের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অমলসীদে বাংলাদেশ অংশ উঁচু এবং বিপরীতে ভারতের রানীনগর এলাকা নিচু হওয়ায় বিডিআর সবসময় কিছু সুবিধাজনক অবস্থানে থাকে। তাই বারবার আক্রমণ করেও ওই ২৫৬ একর জমি দখলে নিতে পারেনি। জৈন্তাপুরের ডিবি ও কেন্দ্রী হাওরের জমিগুলো অত্যন্ত উর্বর হওয়ায় ভারত সেগুলো দখলে নিতে চায়। এই জমি দখলে নেয়ার জন্য মাঝে মধ্যেই ভারতীয় নাগরিকদের নামিয়ে দেয় মাছ ধরতে। এসব নিয়ে কয়েক দফা বিডিআরের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়েছে।
জকিগঞ্জ পৌরসভার পাশে কুশিয়ারার অপর পাড়ে ভারতের করিমগঞ্জ শহর। করিমগঞ্জে মাঝনদীতে জেটি স্থাপন করেছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। জেটির কারণে কুশিয়ারার স্রোত বাধাপ্রাপ্ত হয়ে ধাক্কা খাচ্ছে বিপরীত দিকে হাইদ্রাবন এলাকায়। ফলে ওই এলাকায় নদীভাঙন ভয়াবহ রূপ নিয়েছে।
সুরমা ও কুশিয়ারার তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দারা জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ড সঠিকভাবে তীর সংরক্ষণ করলে নদীভাঙন রোধ করা সম্ভব হতো। কোনো কোনো সময় বরাদ্দ না থাকায়, কখনও কখনও বিএসএফের বাধায় সঠিকভাবে নদীর তীর সংরক্ষণ করা সম্ভব হয় না। এতে করে ভাঙনের তীব্রতা বাড়ে।
জকিগঞ্জের কালীগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা বলেন, পুরো জকিগঞ্জের প্রায় ৩ দিকেই নদী দিয়ে সীমানা চিহ্নিত। এখানে নদী ভেঙে বিপরীত দিকে চর পড়ে যেসব জমি চলে যাচ্ছে, আইনের কারণে সেগুলো আপনাআপনিই ভারতের সঙ্গে মিশে যায়। সেগুলো আর কোনোদিনই ফিরে পাওয়া সম্ভব হয় না। তাই সরকারের উচিত সীমান্ত নদীর ভাঙনকে প্রাধান্য দিয়ে সঠিকভাবে তীর সংরক্ষণের কাজ করা। তারা আরও বলেন, যেসব এলাকায় নদীর তীরে সঠিকভাবে এমব্যাংকমেন্ট ও রিভেটমেন্ট করা সম্ভব হয়েছে ওইসব এলাকায় ভাঙন অনেকটা রোধ করা সম্ভব হয়েছে।
http://www.amardeshonline.com/pages/details/2010/04/28/29498

ফেনী ও মুহুরীর ভাঙনে বিশাল ভূখণ্ড চলে গেছে ভারতের দখলে : বিএসএফের বাধায় মুহুরীর চরের দখল পাচ্ছে না বাংলাদেশ



27/04/2010
আলাউদ্দিন আরিফ, সীমান্ত এলাকা থেকে ফিরে
মুহুরী ও ফেনী নদীর অব্যাহত ভাঙনে বাংলাদেশের বিশাল ভূখণ্ড চলে গেছে ভারতের অপদখলে। ভারতীয় বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের (বিএসএফ) আগ্রাসী তত্পরতায় মুহুরী নদীতে বাংলাদেশ ভূখণ্ড ভেঙে গড়ে ওঠা ‘মুহুরীর চর’-এর দখল নেয়া যাচ্ছে না। বাংলাদেশের কৃষক ওই জমিতে গেলেই গুলি করে বিএসএফ। ফেনী নদীর ভাঙনে খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রাম জেলার বিস্তীর্ণ এলাকা মিশে গেছে ভারতের সঙ্গে। এখনও ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে ফেনীতীরের সড়ক, ফসলের জমি ও বিস্তীর্ণ জনপদ। বিএসএফের বাধার কারণে ওই এলাকায় প্রতিরক্ষামূলক কোনো স্থাপনাই তৈরি করতে পারছে না পানি উন্নয়ন বোর্ড। এখনও ফেনী নদীর কমপক্ষে ১৫টি পয়েন্টে বাংলাদেশ অংশ ভেঙে চর পড়ছে ভারতীয় অংশে।
মুহুরী, কহুয়া ও ফেনী বাংলাদেশের ছোট ৩টি সীমান্ত নদী। প্রস্থে কম হলেও নদীগুলো খরস্রোতা। ভারতের দক্ষিণ ত্রিপুরার পাহাড়ি অঞ্চলে এবং বাংলাদেশের খাগড়াছড়িতে ভারী বৃষ্টিপাত হলেই উপচে পড়ে নদীগুলো। প্লাবিত করে পরশুরাম, ফেনী, ফুলগাজী আর খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রামের বিস্তীর্ণ জনপদ। সেইসঙ্গে নদী দুটির ভাঙনও ভয়াবহ রূপ ধারণ করে। নদী দিয়ে সীমান্ত চিহ্নিত হওয়ায় বাংলাদেশ অংশ ভেঙে ভারতে চর পড়লে সেটা বিএসএফ দখল করে নেয়। এসব নিয়ে বেশ কয়েকবার বিডিআরের সঙ্গে বিএসএফের সংঘর্ষ হয়েছে। বাংলাদেশ অংশে নদীতীর সংরক্ষণের জন্য কোনো উদ্যোগ নিলেই বিএসএফ বাধা দেয়। একারণে দীর্ঘদিন থেকেই অরক্ষিত পড়ে আছে ফেনী নদীর তীর।
ফেনী জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড, ফেনীর পরশুরাম উপজেলার বিলোনিয়া, চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি, মিরেরশ্বরাই, খাগড়াছড়ির রামগড় ও মাটিরাঙা উপজেলার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে নদীভাঙনের ভয়াবহ চিত্র।
সরেজমিন অনুসন্ধানে জানা গেছে, ফেনী জেলার পরশুরাম উপজেলার মুহুরী নদীর তীরবর্তী বিলোনিয়ায় ২ কিলোমিটার এলাকায় স্বাধীনতা-পরবর্তী সময় থেকে এখন পর্যন্ত সীমানা চিহ্নিত করা হয়নি। ফলে প্রায়ই বিএসএফ ও ভারতীয় নাগরিকরা বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে। দক্ষিণ ত্রিপুরার বিলোনিয়া এলাকার বহু ভারতীয় নাগরিক পরশুরাম ও ফেনী এসে ব্যবসা-বাণিজ্য করছে। ভারতের দক্ষিণ ত্রিপুরা উপজেলার বিলোনিয়া শহর ও পরশুরামের বিলোনিয়া স্থলবন্দরের কাছে মুহুরী নদীতে বাংলাদেশ ভূখণ্ড ভেঙে তৈরি হয়েছে ‘মুহুরীর চর’। স্থানীয় বাসিন্দা ও বিডিআর সদস্যদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী বিলোনিয়ায় মুহুরীর চরে ৯৩ দশমিক ৩৩ একর জমি বাংলাদেশের। বিএসএফ ওই জমিতে বাংলাদেশীদের যেতে দিচ্ছে না।
পরশুরাম উপজেলার মুহুরী নদীর তীরে সাইট পিলার ২১৫৯/৩ এস থেকে ২১৫৯/৪৮-এর মধ্যবর্তী স্থানে এখনও সীমানা চিহ্নিত করা সম্ভব হয়নি। পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের গঠিত একটি টাস্কফোর্সের রিপোর্টেও বিষয়টি স্থিতাবস্থায় রেখে সীমানা নির্ধারণের পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
বিলোনিয়ার উত্তর কাউতলী গ্রামের বাসিন্দা জহুরুল হক (৬০) জানান, একসময় মুহুরী নদী বর্তমান দক্ষিণ ত্রিপুরার বিলোনিয়া শহরের পাশ দিয়ে সোজা পূর্ব দিকে প্রবাহিত ছিল। ধীরে ধীরে নদীটি ভেঙে ইংরেজি ‘ডব্লিউ’ আকৃতি নিয়ে চলে আসে বাংলাদেশ অংশে। কোনো ধরনের সংরক্ষণমূলক বাঁধ না থাকায় কাউতলী ও বিলোনিয়া গ্রাম এখনও নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে। আর আয়তন বাড়ছে মুহুরীর চরের। গত ৩ দশকে মুহুরী নদীর ভাঙন প্রায় অর্ধকিলোমিটার বাংলাদেশের ভেতরে চলে এসেছে। উত্তর কাউতলী গ্রামের কৃষক আবদুল আজিজ (৬৫) জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকজন নদীতীর সংরক্ষণের কাজ করতে গেলেই বিএসএফ গুলি করে। ফলে কাজ করা সম্ভব হয় না। সেখানে কংক্রিটের ব্লক দিয়ে পাড় বাঁধা সম্ভব হয় না, যার কারণে উত্তর কাউতলী ও নিজ কালিকাপুর মৌজার বড় একটি অংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। চর পড়েছে ভারতের অংশে। একই এলাকার বাসিন্দা তসলিম হোসেন জানান, তারা নদীর পাড়ে হাঁটতে গেলেও বিএসএফ আগ্নেয়াস্ত্র তাক করে, ভয় দেখায়। বছরখানেক আগে নদীর তীর দিয়ে যাওয়ার সময় এক মহিলাকে গুলি করেছিল বিএসএফ।
পরশুরামের মজুমদারহাট কোম্পানি সদর ক্যাম্পের দায়িত্বে থাকা বিডিআর সদস্যরা জানান, মুহুরীর চরের প্রায় ৯৩ দশমিক ৩৩ একর জমি বাংলাদেশের, সেটা তারা জানেন। বিএসএফ দাবি করছে ওই জমি তাদের। বিষয়টি দু’দেশের মধ্যে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত। আমরা ভারতীয় কাউকে সেখানে চাষাবাদ করতে দিচ্ছি না। প্রতিপক্ষ বিএসএফও আমাদের কৃষকদের সেখানে চাষাবাদ করতে দিচ্ছে না। তবে দু’দেশের কৃষকদের গরু-ছাগল সেখানে চরে বেড়ায়। মজুদারহাট ক্যাম্পের বিডিআর জওয়ানরা আরও জানান, নদীতীর সংরক্ষণের দায়িত্ব পানি উন্নয়ন বোর্ডের। তারা সেখানে কাজ করছে না। তবে আগে কয়েকবার সেখানে কাজ করতে গেলে বিএসএফ বাধা দিয়েছিল।
এলাকার বাসিন্দারা জানান, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা মুহুরী নদী থেকে অবাধে কোনো নিয়মনীতি ছাড়াই বালু তুলছেন। পাউবোর বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত করে বালু তোলায় আগামী বর্ষায় আরও বিপুল পরিমাণ জমি নদীভাঙনে হারিয়ে যাবে বলে স্থানীয়রা আশঙ্কা করছেন। কিন্তু প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছেন না।
সীমান্তবর্তী কহুয়া নদীতেও ভাঙন মারাত্মক রূপ নিয়েছে। পরশুরাম উপজেলার বাউরপাথর এলাকায় বেশকিছু জমি চলে গেছে ভারতের দিকে। বিএসএফের বাধায় এই এলাকায় পাউবো বাঁধ নির্মাণ করতে না পারায় প্রায় ৪শ’ একর জমিতে চাষাবাদ করা সম্ভব হয় না।
ফেনী জেলা পাউবো কর্মকর্তারা জানান, দুই কিলোমিটার এলাকায় সীমানা চিহ্নিত না থাকায় তারা তীর সংরক্ষণমূলক কাজ করতে পারছেন না। দু’দেশের সমঝোতায় সীমানা চিহ্নিত করার কথাও বলেন তারা।
এদিকে ফেনী নদীর ভাঙনে বিলীন হচ্ছে শফিটিলা, লাছারিপাড়া, সোনাইপুল, বাগানবাজার, বুদ্ধগ্রাম, কয়লারমুখ, অলিনগর, তাইন্দং, লক্ষ্মীছড়া, দারোগাপাড়া, আন্দারমানিক, হাবিবুল্লারচর, নলুয়া, পানুয়াছড়া, শান্তিপুরসহ বিভিন্ন এলাকা।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, খাগড়াছড়ি জেলার মাটিরাঙা উপজেলার শফিটিলা এলাকায় সীমানা পিলার ২২৩০/৪ আরবি থেকে ২২৩০/৬ আরবি’র মধ্যবর্তী স্থানে শূন্যরেখা থেকে নদী প্রায় ২০০ ফুট বাংলাদেশের ভেতরে ঢুকে গেছে। বাংলাদেশের বিস্তীর্ণ এলাকা ভেঙে চর জেগে উঠেছে ভারতের দিকে। শফিটিলা বিডিআর বিওপি সংলগ্ন পাকা রাস্তার কাছে ফেনী নদী ইংরেজি ‘ইউ’ বর্ণের আকার নিয়ে পাকা রাস্তা সংলগ্ন বাংলাদেশ ভূখণ্ডে বড় ধরনের ভাঙন সৃষ্টি করেছে। ভাঙনের কারণে এখন শফিটিলা বিডিআর বিওপি পাকা সড়কটি হুমকির সম্মুখীন। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এই স্থানে নদীর অপর তীরও বাংলাদেশের জমি। ভাঙনের হাত থেকে রক্ষার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড কিছু সিসি ব্লক ও জিও ব্যাগ ভর্তি করে রেখেছে ৫-৬ বছর আগে থেকে। দীর্ঘদিন পড়ে থাকায় জিও ব্যাগ ও সিসি ব্লকগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। অথচ বিএসএফের বাধায় নদীতীর সংরক্ষণ করা যাচ্ছে না। ফলে মাটিরাঙা ধর্মাবাড়ী সিআইও ক্যাম্পের রাস্তাটি এখন নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
খাগড়াছড়ি জেলার রামগড় উপজেলার লাছারিপাড়া এলাকার বিস্তীর্ণ অংশ বিলীন হচ্ছে ফেনী নদীর ভাঙনে। সীমানা পিলার ২২১৮/২ আরবি থেকে ২২১৯/৬ আরবি’র মধ্যবর্তী এলাকায় শূন্যরেখা থেকে এক-দেড়শ’ ফুট বাংলাদেশের ভেতরে চলে এসেছে। এই এলাকায় নদীর গতি কলসি আকৃতির ভূভাগ সৃষ্টি করেছে। পাউবোর বিশেষজ্ঞরা জানান, নদীর তীর সঠিকভাবে মেরামত করা সম্ভব না হলে নদী তার গতিপথ পরিবর্তন করে কলসির মতো ভূভাগে বাংলাদেশের সঙ্কীর্ণ একটি অংশ ভেঙে যাবে। এতে বাংলাদেশের শতাধিক একর জমি মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে, যা পরবর্তী সময়ে অপদখল করে নেবে ভারত। এ এলাকায় পাউবোর সিসি ব্লক প্রস্তুত থাকলেও ৫-৬ বছর থেকে ভারতের বাধার কারণে নদীর তীরে বসানো যাচ্ছে না।
খাগড়াছড়ি জেলার রামগড় উপজেলার সোনাইপুল এলাকায় সীমানা পিলার ২২১৩/২ আরবি এবং ২২১৪/২ আরবি’র মধ্যবর্তী স্থানে দুইশ’ থেকে আড়াইশ’ ফুট বাংলাদেশের ভেতরে চলে এসেছে। এই স্থানে ফেনী নদীর আকৃতি অনেকটা ইংরেজি ‘ইউ’ বর্ণের মতো হয়ে গেছে। বাংলাদেশের অংশ ‘ইউ’ শেপের বাইরের দিকে। এ স্থানে বাংলাদেশ অংশে নদীর তীর ঘেঁষেই রামগড়-ফেনী সড়ক অবস্থিত। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, তীর সংরক্ষণমূলক কাজ সম্ভব না হলে সড়কটি হুমকির মুখে পড়বে। যে কোনো সময় নদীগর্ভে হারিয়ে যেতে পারে সড়কের এই অংশটি।
চট্টগ্রাম জেলার ফটিকছড়ি উপজেলার বাগানবাজার এলাকায় সীমানা পিলার ২২১২/২-এর নিকটবর্তী এলাকায় নদীভাঙনে শূন্যরেখা থেকে আনুমানিক ১৬৪ থেকে ২০০ ফুট বাংলাদেশের ভেতরে ঢুকে গেছে এবং চর পড়েছে ভারতের দিকে। এই এলাকায় ফেনীর ভাঙনে বাংলাদেশের মূল্যবান ভূখণ্ড ভারতের দিকে চলে যাচ্ছে। ২০০৩-০৪ অর্থবছরে এখানকার ভাঙন প্রতিরোধে ৫০০ মিটার সিসি ব্লক তৈরি করে রাখা হলেও ভারতীয় বাধার কারণে এখন পর্যন্ত তীর সংরক্ষণের কাজ করা সম্ভব হয়নি। অথচ বাগানবাজারের বিপরীতে ভারতের দৌলবাড়ী। সেখানে ভারত নদীর তীর সংরক্ষণের কাজ করছে। সীমান্তরেখা স্পষ্ট না হওয়ায় বিডিআর সেখানে বাধা দিয়ে আসছে।
চট্টগ্রামের মিরেশ্বরাই উপজেলার বদ্ধুগ্রামে সীমানা পিলার ২২০৫/৬ আরবি’র কাছে ফেনী নদীর তীর ভেঙে বাংলাদেশের অনেক ভেতরে চলে এসেছে। চর জেগেছে ভারতে। একই উপজেলার কয়লারমুখ এলাকায় সীমান্ত পিলার ২২০৪-এর নিকটবর্তী এলাকাতেও বাংলাদেশ অংশের নদী ভেঙে চর পড়েছে ভারত অংশে। এর উজান ও ভাটি দু’দিকেই বাংলাদেশ শত শত বিঘা জমি হারাচ্ছে। এই এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ড তীর সংরক্ষণ কাজ হাতে নিলেও বিএসএফের বাধার কারণে তার বাস্তবায়ন সম্ভব হচ্ছে না।
চট্টগ্রাম জেলার ফটিকছড়ি উপজেলার আন্দারমানিক এলাকায় পিলার ২২১০/২ আরবি’র পাশে ফেনী নদীর ভাঙন বাংলাদেশের ভেতরে এসে প্রবেশ করেছে এবং চর জেগেছে ভারতের দিকে। একই উপজেলার হাবিবুল্লার চরে পিলার ২২১০/২ ও ২২০৯/৪-এর মধ্যবর্তী স্থানে নদীভাঙনে ১৩০ থেকে ১৬৫ ফুট পর্যন্ত বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করেছে। ফটিকছড়ির নলুয়া এলাকার মেইন পিলার ২২১১ ও ২২১২-এর মধ্যবর্তী অংশে দেড়শ’ থেকে ২শ’ ফুট ভারতে চর পড়ে বাংলাদেশে ভাঙছে। ফটিকছড়ির পানুয়াছড়া এলাকায় মেইন পিলার ২২০৮-এর নিকটবর্তী এলাকায় শূন্যরেখা থেকে প্রায় একশ’ ফুট ও খাগড়াছড়ি জেলার মাটিরাঙা উপজেলার শান্তিপুর এলাকায় মেইন পিলার ২২৩৮ এবং ২২৩৯-এর মধ্যবর্তী স্থানে এক থেকে দেড় ফুট পর্যন্ত সীমান্তবর্তী এলাকা নদীগর্ভে হারিয়ে গেছে। চট্টগ্রামের মিরেরশ্বরাই উপজেলায় ভারত ঢাউস সাইজের পাইপ বসিয়ে টেনে নিচ্ছে ফেনী নদীর পানি।
খাগড়াছড়ি জেলার মাটিরাঙা উপজেলার তাইন্দং এলাকায় সীমানা পিলার ২২৪৯/৮-এর কাছে, লক্ষ্মীছড়িতে সীমানা পিলার ২২১৬/২ আরবি থেকে ২২১৬/৬-এর মধ্যবর্তী এলাকা এবং দারোগাপাড়ায় মূল পিলার ২২১৫ ও ২২১৬-এর মধ্যবর্তী এলাকায় ফেনী নদীর ভাঙনের কারণে বাংলাদেশের বিস্তীর্ণ এলাকা ভারতের দখলে চলে যাচ্ছে।

http://www.amardeshonline.com/pages/details/2010/04/27/29368

সন্ত্রাসীদের গুলিতে মালিবাগে কাপড় ব্যবসায়ী খুন : ওয়ারীতে দোকান কর্মচারী গুলিবিদ্ধ



27/04/2010

মেডিকেল রিপোর্টার
রাজধানীর মালিবাগে আবুজর গিফারি কলেজের সামনে সন্ত্রাসীর গুলিতে পুরনো ঢাকার ইসলামপুরের এক কাপড় ব্যবসায়ী খুন হয়েছেন। গতরাত সাড়ে ১০টার দিকে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। নিহত আসাদুজ্জামান বাবু (৩৫) ইসলামপুরের আইডিয়াল টেক্সটাইল নামের কাপড়ের দোকানের মালিক।
নিহতের প্রতিবেশী সাইফুল জানান, ব্যবসায়িক কাজকর্ম সেরে রাত সাড়ে ১০টার দিকে ১৫৯ নম্বর মালিবাগের বাসায় প্রবেশ করার সময় ওঁত্ পেতে থাকা সন্ত্রাসীরা বাবুকে লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়ে। তার ঘাড়, পেট ও হাতে ৩টি গুলি লাগে। প্রতিবেশীরা উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিত্সক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ সময় তার স্ত্রী, মা ও ভাইসহ আত্মীয়স্বজনের কান্নায় মেডিকেলে শোকাবহ পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
বাবুর বড়ভাই প্রিন্স সাংবাদিকদের জানান, পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। নিহত বাবুর পিতার নাম আবুল হোসেন। ৩ ভাই ২ বোনের মধ্যে বাবু তৃতীয়।
মতিঝিল থানার ওসি তোফাজ্জল হোসেন বিডিনিউজকে বলেন, ইসলামপুরের কাপড়ের ব্যবসায়ী বাবু ও তার ভাই প্রিন্স ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে বাসায় ফিরছিলেন। রাত ১০টার দিক বাসায় ঢোকার সময় কয়েকজন সন্ত্রাসী পেছন থেকে বাবুকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। বাবু মালিবাগ বাজার রোডের ১৫৯ নম্বর বাসায় ভাড়া থাকতেন।
এদিকে এর আগে রাত ৮টার দিকে সূত্রাপুরের ওয়ারীতে সন্ত্রাসীদের গুলিতে আহত হন খোকন (৩০) নামের এক দোকান কর্মচারী। সূত্রাপুর থানাধীন ওয়ারীর ফুলার স্ট্রিটের ২/১-এ তেল-মবিলের দোকান মডার্ন ট্রেডের কর্মচারী খোকন। রাত ৮টার দিকে কয়েকজন চাঁদাবাজ দোকানে এসে মালিককে খোঁজ করে না পেয়ে কর্মচারী খোকনের দুই পায়ে গুলি করে ক্যাশবাক্স লুট করে নিয়ে যায়।
http://www.amardeshonline.com/pages/details/2010/04/27/29372