Friday 4 June 2010

নাটোরে ঠিকাদার গুলিবিদ্ধ, প্রতিমন্ত্রীর ছেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ

ঠিকাদারি কাজে বাধা দেওয়ার ঘটনায় প্রতিবাদ করায় গতকাল সোমবার বিকেলে নাটোর সদর উপজেলার খোলাবাড়িয়ায় দুর্বৃত্তরা মোহাম্মদ আলী নামের এক ঠিকাদারকে গুলি করেছে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঠিকাদারের অভিযোগ, স্থানীয় সাংসদ যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী আহাদ আলী সরকারের ছোট ছেলে বকুল সরকারের হুকুমে দুর্বৃত্তরা তাঁকে গুলি করে।
নাটোর সদর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আপেল মাহমুদ প্রথম আলোকে বলেন, মোহাম্মদ আলীকে গুলি করার অভিযোগে রাতে চারজনকে আটক করা হয়। তাঁরা হলেন মাসুদ, পলাশ, উত্তম ও রবিউল। অ্যাম্বুলেন্সযোগে রাজশাহী যাওয়ার পথে নাটোর সদর উপজেলার ধালান এলাকা থেকে তাঁদের আটক করা হয়।
প্রতিমন্ত্রী আহাদ আলী সরকারের মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তাঁর ব্যক্তিগত সহকারী (পিএস) শিবনাথ রায় বলেন, ‘স্যার ব্যস্ত আছেন। তবে গুলির ঘটনাটি নিছক ঠিকাদারি নিয়ে হয়েছে। এর সঙ্গে প্রতিমন্ত্রী বা তাঁর ছেলেরা কেউ জড়িত নন।’
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্র জানায়, বিকেল পাঁচটার দিকে ঠিকাদার মোহাম্মদ আলী খোলাবাড়িয়া এলাকায় তাঁর একটি রাস্তা (কালীগঞ্জ সড়ক) উন্নয়নের কাজ দেখতে যান। চারটি মোটরসাইকেলে করে আটজন যুবক ঘটনাস্থলে গিয়ে মোহাম্মদ আলীকে রাস্তায় ইটের খোয়া ফেলতে নিষেধ করেন। এ নিয়ে ওই যুবকদের সঙ্গে তাঁর কথাকাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে ওই যুবকদের মধ্যে মুন্না (৩০) ও মাসুদ (২৮) পিস্তল দিয়ে মোহাম্মদ আলীকে গুলি করেন। গুলি দুটি তাঁর ডান পায়ের ঊরুতে লাগে। হঠাৎ গুলির শব্দে পথচারীরা এদিক-ওদিক ছোটাছুটি শুরু করে। খবর পেয়ে ওই ঠিকাদারের অংশীদার হাবিব হাসান ঘটনাস্থলে গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে নাটোর সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। অবস্থার অবনতি হলে মোহাম্মদ আলীকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।
ঠিকাদার মোহাম্মদ আলী নাটোর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এই প্রতিনিধির কাছে অভিযোগ করে বলেন, ‘বকুল সরকারের হুকুমে তাঁর সঙ্গী মাসুদ ও মুন্না আমাকে হত্যার জন্য গুলি করে।’
জানতে চাইলে বকুল সরকার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি, মোহাম্মদ আলী ঠিকাদারসহ আটজন মোটরসাইকেলে করে খোলাবাড়িয়া থেকে নাটোর আসছিলাম। পথে মুখোশ পরা কিছু সন্ত্রাসী আমাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে আমার পেছনের মোটরসাইকেলের মাসুদ নামের এক ছেলের হাতে ও পায়ে লাগে। এ সময় মোহাম্মদ আলী পড়ে যায়। আমরা দ্রুত চলে আসি। এরপর কী হয়েছে তা বলতে পারছি না।’
নাটোর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘মাসুদকে গ্রেপ্তারের জন্য সদর হাসপাতালে যাই। কিন্তু এর আগেই তিনি সরকারি অ্যাম্বুলেন্সে করে রাজশাহীতে চলে যান।’ ঘটনাস্থলটি জেলার নলডাঙ্গা থানার আওতায়। সেখানকার থানার ওসি ওবাইদুল কাদের বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে মোহাম্মদ আলী ঠিকাদার গুলিবিদ্ধ হওয়ার কথা শুনেছি। তবে এ ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগ করেননি।’

http://www.prothom-alo.com/detail/date/2010-06-01/news/67574

No comments:

Post a Comment