Thursday 3 June 2010

রাজধানীতে ঝুট ব্যবসায়ী ও সিকিউরিটি গার্ড খুন : স্বামীকে কুপিয়েছে স্ত্রী



01/05/2010
স্টাফ রিপোর্টার
রাজধানীর কাঁঠালবাগানে গতকাল দুপুরে প্রকাশ্য দিবালোকে দুর্বৃত্তরা রোকনউদ্দিন বাবু (৪৮) নামের এক ঝুট ব্যবসায়ীকে গুলি করে হত্যা করেছে। নিহত রোকন স্থানীয় আওয়ামী লীগের কর্মী ছিলেন বলে স্বজনরা জানিয়েছেন। পুলিশের ধারণা, ঝুট ব্যবসা নিয়ে বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষের গ্রুপ তাকে গুলি করে হত্যা করেছে। পুলিশ জানায়, রোকন একটি মামলায় জেল খেটে ৪-৫ দিন আগে বের হয়। অপরদিকে, কাফরুলে ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে আহত সিকিউরিটি গার্ড আবদুল জলিল (৫৫) হাসপাতালে মারা গেছেন। এছাড়া মগবাজারে পারিবারিক কলোহে স্ত্রীর ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর আহত হয়েছেন জামাল উদ্দিন (২৮) নামে এক ব্যক্তি। প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, দুপুর দেড়টার দিকে রোকনউদ্দিন জুমার নামাজ পড়ে বাসায় ফিরছিলেন। বাসায় যাওয়ার সময় তিনি কাঁঠালবাগান পান্থপথের কাছে গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালের সামনে একটি ভিসিডি দোকানের সামনে এক ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলেন। আগে থেকেই সেখানে ওঁত্ পেতে থাকা ৩-৪ যুবক রোকনউদ্দিনের কাছে এসে দাঁড়ায়। কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই ওই যুবকরা অস্ত্র বের করে রোকনউদ্দিনকে লক্ষ্য করে ৫-৬ রাউন্ড গুলি ছোড়ে। তার বাম পাজর, বুক, পেট, মাথা ও হাতে ৪-৫টি গুলি লাগে। রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন রোকন। আশপাশের লোকজন প্রথমে তাকে স্থানীয় গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালে নিয়ে যান। অবস্থা সঙ্কটাপন্ন দেখে সেখান থেকে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। বেলা ২টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিত্সকরা মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় রোকনউদ্দিনকে হাসপাতালে নেয়ার পর সেখানে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ কর্মী সমর্থকরা ভিড় করে। তারা রোকনের লাশ ময়নাতদন্ত ছাড়াই জোরপূর্বক হাসপাতাল থেকে নেয়ার চেষ্টা করে। আইন লঙ্ঘন করে হাসপাতাল থেকে লাশ নেয়াকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ কর্মী ও হাসপাতালের কর্মচারীদের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে। এ সময় হাসপাতালের জরুরি বিভাগে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে হাসপাতাল ক্যাম্পের পুলিশ ও শাহবাগ থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়।
রোকনের ছেলে সজিব জানান, তার বাবা ও স্থানীয় আমিন উদ্দিন একসঙ্গে ঝুট ব্যবসা করতেন। কারও সঙ্গে তার বিরোধ আছে কিনা এ ব্যাপারে তারা কিছুই জানেন না। স্থানীয় একটি সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগের একটি গ্রুপের সঙ্গে রোকনের বিরোধ ছিল। রোকন গ্রুপ ওই এলাকার ঝুট ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করায় প্রতিপক্ষরা ক্ষুব্ধ ছিল। এর আগেও রোকনের এক সহযোগী ঝুট ব্যবসার বিরোধের কারণে সন্ত্রাসীদের হাতে খুন হন।
কলাবাগান থানার ওসি একেএম শাহিন মণ্ডল বলেন, ঝুট ব্যবসার বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষের গুলিতে খুন হয়েছে রোকনউদ্দিন। তিনি বলেন, একটি গ্রুপের সঙ্গে ঝুট ব্যবসা নিয়ে তার বিরোধ চলছিল বলে জানা গেছে। তবে কারা এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে এ ব্যাপারে এখও নিশ্চিত হওয়া যায়নি বলেন জানান ওসি। তিনি বলেন, ঘাতকদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। নিহত রোকনের বাবার নাম বশিরউদ্দিন। বাসা গ্রিন রোডের ৬৯,নম্বরে। তিনি দুই সন্তানের জনক ছিলেন।
সিকিউরিটি গার্ড খুন : কাফরুলে ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে আহত সিকিউরিটি গার্ড আবদুল জলিল বৃহস্পতিবার রাতে চিকিত্সাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। নিহত জলিলের ছেলে ফরিদ হোসেন জানান, গত ৩ এপ্রিল রাতে ডিউটি শেষে বাসায় ফিরছিলেন তার বাবা। রাত সাড়ে ১০টার দিকে কাফরুলের সেনপাড়া এলাকায় ছিনতাইকারীদের কবলে পড়েন। ছিনতাইকারীরা তার পেট ও বুকে ছুরিকাঘাত করে সঙ্গে থাকা মোবাইল ফোন ও টাকা নিয়ে যায়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। চিকিত্সাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টায় তার মৃত্যু হয়। আবদুল জলিলের বাসা ৪৪১/২-বি, সেনপাড়া পর্বতা এলাকায়।
স্বামীকে ছুরিকাঘাত : রাজধানীর মগবাজারে পারিবারিক কলোহে স্ত্রীর বঁটির আঘাতে আহত হয়েছেন জামাল উদ্দিন নামের এক ব্যক্তি। জানা যায়, জামাল উদ্দিনের দুই স্ত্রী। প্রথম স্ত্রী রীনা বেগমকে নিয়ে থাকেন ২১০/১, বড় মগবাজারের বাসায়। গতকাল দুপুরে বাজার করার টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে স্বামীর সঙ্গে রীনার ঝগড়া হয়। এক পর্যায়ে রান্নাঘর থেকে বঁটি এনে রীনা জামালকে এলোপাতাড়ি কোপায়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

http://www.amardeshonline.com/pages/details/2010/05/01/29953

No comments:

Post a Comment