Monday 20 August 2012

নিজেদের অসহায় বললেন সাঈদীর পরিবার, সাক্ষী ও ভক্তরা : সাঈদীর সাক্ষীদের বাড়ি বাড়ি পুলিশ ও সরকারি দলের যৌথ অভিযান

স্টাফ রিপোর্টার মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আটক উপমহাদেশের প্রখ্যাত আলেমে দ্বীন মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর পক্ষের সাক্ষীদের বাড়িতে শবেকদরের রাতে যৌথ অভিযান চালিয়েছে পুলিশ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগ। আওয়ামী নেতাকর্মীদের হুমকি ও পুলিশি গ্রেফতার অভিযানের মুখে আল্লামা সাঈদীর পক্ষের সাক্ষী ও তার ভক্তরা এখন এলাকা ছাড়া। তাদের নিজ বাড়িতে না ফিরতে হুমকি দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এখন ও বাড়ি বাড়ি তল্লাশি চলছে বলে জানান স্থানীয়রা। সাঈদীর পরিবার এ ঘটনায় নিজেদের অসহায়ত্ব প্রকাশ করে সরকার গায়ের জোরে কথিত বিচারের মাধ্যমে একজন নিরপরাধ মানুষকে ফাঁসিতে ঝুলাতে চায় বলে অভিযোগ করেন। বলেন, সরকারদলীয় নেতাকর্মীরা মাওলানা সাঈদীর পক্ষে সাক্ষ্য দেয়ার পর জীবন নিয়ে কেউ ফিরে আসতে পারবে না বলে এলাকায় আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। পুলিশ তাদের নিয়ে পাড়ায় পাড়ায় মহড়া দিচ্ছে। তবে পুলিশের দাবি সাক্ষীদের গ্রেফতার করতে নয়, তাদের খোঁজখবর নিতে বাড়ি বাড়ি গিয়েছে। প্রসঙ্গত, মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ একাধারে সাক্ষী হাজির করতে ব্যর্থ হলে পুলিশের তৈরি করা জবানবন্দিই সাক্ষ্য হিসেবে গ্রহণ করে ট্রাইব্যুনাল। রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হলে আসামি পক্ষে ৪৮ জন সাক্ষীর তালিকা জমা দেয়। কিন্তু ট্রাইব্যুনাল সর্বোচ্চ ২০ জন সাক্ষ্য দিতে পারবেন জানিয়ে ২৮ আগস্ট থেকে সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু করার আদেশ দেন। সেদিন আসামি পক্ষের আইনজীবীরা ট্রাইব্যুনালের এ সিদ্ধান্তকে ভুল আখ্যা দিয়ে এটি ন্যায়বিচারের চরম লঙ্ঘন বলে মন্তব্য করেন। এভাবে সাক্ষী লিমিট করে দেয়াটা আসামিকে হাত পা বেঁধে জবাই করে দেয়ার শামিল বলেও মন্তব্য করেন তারা। এসবের পর সাঈদীর পক্ষে সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হওয়ার আগেই পুলিশ ও ক্ষমতাসীন দলের বিরুদ্ধে এমন হয়রানির অভিযোগ উঠল। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পিরোজপুরের জিয়ানগর উপজেলার নলবুনিয়া, টেংরাখালী, হোগলাবুনিয়া ও গদরহাওলা গ্রামে পবিত্র শবেকদরের রাতে পুলিশ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা বিভিন্ন বাড়িতে অভিযান চালিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। আবদুর রশীদ, খায়রুল আলম, মোশররফ হোসেন, হেমায়েত শরীফ, ছাবেল ফকির, ইসমাইল, আবদুর রবসহ প্রায় একাধিক বাড়িতে পুলিশ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা হানা দেয়। রাত ১১টা থেকে ভোর রাত পর্যন্ত এ অভিযান চলে। আওয়ামী লীগ নেতারা জীবনের প্রতি মায়া থাকলে সাঈদীর পক্ষ ছাড়তে সাক্ষীদের হুশিয়ার করে দেয়। পুলিশের অভিযান ও আওয়ামী কর্মীদের জীবন নাশের হুমকির মুখে গত তিন দিন ধরে উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রাম কার্যত পুরুষশূন্য। স্থানীয় সূত্র জানায়, বুধবার রাতে পুলিশ প্রথমে ২টি গাড়ি নিয়ে অভিযানে নামে। পরে নসিমন টাইপের গাড়ি নিয়ে ছোট রাস্তা দিয়ে গ্রামে ঢুকে বিভিন্ন বাড়িতে বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় আওয়ামী লীগের নেতারা সাঈদীর পক্ষে মুখ খুললে জেলে যাওয়া লাগবে বলেও হুমকি দেয়। তাদের এমন আকস্মিক অভিযানের কারণে গ্রামগুলোতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তবে মুসল্লিরা মসজিদে ইবাদতে থাকায় পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। গত বৃহস্পতি ও শুক্রবার এসব গ্রামে সরেজমিন সাঈদীর পক্ষের কোনো সাক্ষী বা ভক্তদের বাড়িতে পাওয়া যায়নি। মহিলারা জানান, অভিযানের পর পুরুষরা গ্রেফতার ও হামলার আশঙ্কায় গা ঢাকা দিয়েছে। মাওলানা সাঈদীর ছেলে মাসুদ সাঈদী বলেন, আমাদের আইনজীবীরা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও সরকারের বানানো সাক্ষীদের জেরার মাধ্যমে এ কথা প্রমাণ করেছেন যে ১৯৭১ সালে, মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী কোনো ভূমিকা আল্লামা সাঈদীর ছিল না। কথিত যুদ্ধাপরাধরে সঙ্গে তার বিন্দুমাত্র সংশ্লিষ্টতা নেই। এ সত্য প্রমাণ হওয়ার পর এবং ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক ডিফেন্স সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণের দিন নির্ধারণের পরপরই আমাদের সাক্ষীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও পুলিশ বেপরোয়া অভিযান চালাচ্ছে। তিনি বলেন, সরকারের আচরণ দেখে মনে হচ্ছে, তারা গায়ের জোরে একজন নিরপরাধ মজলুমকে কথিত যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে শাস্তির মুখোমুখি করতে চায়। ‘যুদ্ধাপরাধ নয় জনপ্রিয়তায় আমার বাবার বড় অপরাধ।’ যোগ করেন মাসুদ।’ ডিফেন্স টিমের মুখপাত্র অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম বলেন, এ গ্রেফতার অভিযান প্রমাণ করে মাওলানা সাঈদীকে বিচারের নামে জোর করে সাজা দিতে মরিয়া সরকার। তিনি বলেন, আমরা আসামির বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আনা অভিযোগকে শতাব্দীর নিকৃষ্ট মিথ্যাচার হিসেবে প্রমাণ করতে সচেষ্ট। কিন্তু বিচারচলাকালে সরকারের এমন আচরণ একজন নাগরিকের প্রতি জঘন্য অবিচারের দৃষ্টান্ত স্থাপন করছে। এসব অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে জিয়ানগর উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান বলেন, ছাত্রলীগ, যুবলীগের কাউকে হুমকি দেয়ার কথা না। এ ধরনের কোনো খবর আমি জানি না। পিরোজপুর সদর থানার ওসি আবদুল মালেক বলেন, এ খবরের সত্যতা আমার কাছে নেই। সাঈদীর মামলার সাক্ষী সব জিয়ানগর থানায়। ওখানে যোগাযোগ করতে পারেন। জিয়ানগর থানার সেকেন্ড অফিসার আবদুল মালেক বলেন, সাক্ষীরা কোথায় থাকে কি করে জানতে গিয়েছি। তাদের গ্রেফতার করতে যাইনি। তিন দিন ধরে তারা গ্রামছাড়া কেন জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, তা জানি না। এমন কথা আমরা শুনিনি। উল্লেখ্য, গত ১৪ তারিখে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ জামায়াতের নায়েবে আমির মাওলানা সাঈদীর পক্ষে জমা দেয়া ৪৮ জন সাক্ষীর তালিকা থেকে মাত্র ২০ জনকে স্বাক্ষ্য দিতে দেয়া হবে বলে নির্দেশ দেয় ট্রাইব্যুনাল। আদেশে বলা হয়, ২৩ তারিখের মধ্যে নতুন করে ২০ জনের তালিকা এবং ২৮ তারিখ থেকে স্বাক্ষ্য গ্রহণ শুরু করা হবে। http://www.amardeshonline.com/pages/details/2012/08/18/159877

ওসমানীনগরে আ.লীগ নেতার বাড়িতে মাদরাসা ছাত্রীকে ধর্ষণ : কামরাঙ্গীরচরে ইজ্জত হারাল আরেক শিশু

ডেস্ক রিপোর্ট সিলেটে ওসমানীনগরে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা সারজান খাঁর বাড়িতে এক মাদরাসা ছাত্রীকে রাতভর আটক রেখে গণধর্ষণ করেছে একদল বখাটে। কামরাঙ্গীরচরে ৭ বছরের শিশু গণধর্ষণের শিকার হয়েছে। দিনাজপুরের বীরগঞ্জে ধর্ষণকালে জনতা আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে এক বখাটেকে। হবিগঞ্জের নবীগঞ্জে তুচ্ছ ঘটনার জেরে এক গৃহবধূকে মাথার চুল কেটে ন্যাড়া করে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। বিস্তারিত আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে : কামরাঙ্গীরচরে শিশুকে গণধর্ষণ : ঢাকার কামরাঙ্গীরচরে ৭ বছরের এক শিশু গণধর্ষণের শিকার হয়েছে। ধর্ষক এলাকার প্রভাবশালী ও একটি রাজনৈতিক সংগঠনের নেতার ছেলে হওয়ায় বিষয়টি প্রথমে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা চলছে বলে জানা গেছে। ধর্ষকের বাবা কামরাঙ্গীরচর থানার একজন এসআইকে বিপুল উেকাচ দিয়ে নিজ সন্তানকে ধর্ষণ মামলার এজাহার থেকে নাম বাদে সক্ষমও হয়েছেন। বৃহস্পতিবার রাতে এলাকার কোম্পানীরঘাট বাছেত মোল্লার বাড়ির নিচতলায় এ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। এলাকাবাসী জানান, গত ১৬ আগস্ট বৃহস্পতিবার ইফতারের পর রাত আনুমানিক ৮টার দিকে কোম্পানীঘাট এলাকার ভাড়াটিয়া মো. কামাল হোসেনের মেয়ে ঘর থেকে বের হয়ে কামরাঙ্গীরচর থানা এলাকার কোম্পানীঘাট সংলগ্ন বাছেত মোল্লার মার্কেটে বাসার জন্য তেল আনতে যায়। এ সময় বাছেত মোল্লার বখাটে ছেলে মো. রনি ও প্রতিবেশী আবদুর রাজ্জাকের বখাটে ছেলে আবু বকর তাকে বাসেত মোল্লার বাড়ির নিচতলায় খালি জায়গায় নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। ধর্ষণের এক পর্যায়ে মেয়েটির শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ধর্ষকরা পালিয়ে যায়। পরে মেয়েটির চিত্কার শুনে এলাকাবাসী তাকে উদ্ধার করে প্রথমে মিটফোর্ড হাসপাতালে ভর্তি করে। এর পর অবস্থার অবনতি হলে পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালের সিসি ইউনিটে ভর্তি করা হয়। তবে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। মেয়েটি এখন হাসপালের বেডে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছে। এ বিষয়টি ধামাচাপা দিতে এলাকার একটি রাজনৈতিক সংগঠনের নেতা বাছেত মোল্লা ধর্ষিতার বাবা কামাল হোসেন ও মা শিরিন আকতারকে চাপ প্রয়োগ করে। তারা মীমাংসা করতে রাজি না হলে তাদের এলাকা ছাড়তে হবে বলে ভয়-ভীতি দেখায়। কিন্তু এলাকাবাসীর চাপের মুখে বাছেত মোল্লা বিষয়টি মীমাংসা করতে ব্যর্থ হয়েছেন। পরে তিনি কামরাঙ্গীরচর থানার একজন এসআই মফিজুল ইসলামকে বিপুল পরিমাণ উেকাচ দিয়ে নিজের সন্তান রনিকে ধর্ষণ মামলার এজাহার থেকে নাম বাদ দিতে সক্ষম হয়েছেন। এ ব্যাপারে কামরাঙ্গীরচর থানার এসআই মফিজুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, মেয়েটিকে জুস খাওয়ানোর প্রলোভন দেখিয়ে বাছেত মোল্লার বাড়ির নিচে নিয়ে আবু বকর একাই ধর্ষণ করে। এ ব্যাপারে থানায় মামলা হয়েছে—যার নন্বর ১৬। তিনি উেকাচ নিয়ে রনির নাম বাদ দেয়ার কথা অস্বীকার করেন। ওসমানীনগরে আ.লীগ নেতার বাড়িতে মাদরাসা ছাত্রীকে গণধর্ষণ : সিলেটের ওসমানীনগরে এক আওয়ামী লীগ নেতার বাড়িতে মহিলা মাদরাসার এক ছাত্রীকে দুই দিন আটকে রেখে গণধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে গত ১৪ আগস্ট ওসমানীনগরের ঘোঁষগাও গ্রামে। এ ঘটনায় ধর্ষিতার বাবা ওসমানীনগর থানায় একটি মামলা দায়ের করলেও স্থানীয় কিছুসংখ্যক আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ধর্ষিতার পরিবার থানা পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জনা যায়, গত ১৪ আগস্ট রাতে থানার ঘোষগাঁও গ্রামের এক দিনমজুরের মাদরাসাপড়ুয়া চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রী বাথরুমে যাওয়ার পথে আগে থেকে ওত পেতে থাকা একই গ্রামের নেপুর মিয়া, শানুর মিয়া, আইয়ব আলীসহ চার-পাঁচজনের একটি দল তাকে জোর করে অপহরণ করে আওয়ামী লীগ নেতা সারজান খাঁর বাড়িতে তুলে নেয়। সেখানে প্রায় ২ দিন আটকে রেখে তারা গণধর্ষণ করে। ধর্ষিতার বাবার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল ওসমানীনগর থানা পুলিশ আওয়ামলী লীগ নেতা সারজান খাঁর বাড়ি থেকে মেয়েটিকে উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসি বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে। বীরগঞ্জে ধর্ষক আটক : দিনাজপুরের বীরগঞ্জে বুধবার সন্ধ্যায় উপজেলার শতগ্রাম ইউনিয়নের অর্জুনাহার আশ্রয়ণের বাসিন্দা চন্দন রায়ের অনুপস্থিতিতে বাড়িতে প্রবেশ করে তার স্ত্রীকে ধর্ষণের সময় এলাকাবাসী ধর্ষককে আটক করে পুলিশে দিয়েছে। ধর্ষক একই এলাকার খড়িকাদাম গ্রামের দর্শন রায়ের ছেলে ও বীরগঞ্জ সাব-রেজিষ্ট্রার অফিসের দলিল লেখক নগেন্দ্র নাথ রায়। নবীগঞ্জে গৃহবধূর চুল কর্তন : হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার করগাঁও ইউনিয়নের গুমগুমিয়া গ্রামে তুচ্ছ ঘটনার জের ধরে শেখ সুহেনা বেগম নামের এক গৃহবধূকে মারধর করে মাথার চুল কেটে দিয়েছে প্রতিবেশী দুর্বৃত্তরা। এ ব্যাপারে নির্যাতিতার স্বামী আহমদ আলী থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। ওই এলাকার আলী আহমদের বসতঘরে প্রতিবেশী নুরুজ্জামানের একটি মোরগ প্রবেশ করে জিনিসপত্র নষ্ট করে। এ নিয়ে দু’পরিবারে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে নুরুজ্জামানের ভাই রহমত আলী ও ভাগ্নে জাকির হোসেন মিলে সুহেনাকে মারধর করে এবং জোরপূর্বক তার মাথার চুল কেটে ফেলে। পরে আহত অবস্থায় সুহেনাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। http://www.amardeshonline.com/pages/details/2012/08/18/159903

Saturday 18 August 2012

হবিগঞ্জে স্কুলছাত্রের ১০টুকরা লাশ উদ্ধার

Sat 18 Aug 2012 9:17 PM BdST হবিগঞ্জ, ১৮ আগস্ট (রিয়েল-টাইম নিউজ ডটকম)-- হবিগঞ্জের মাধবপুর এক স্কুল শিক্ষার্থীর ১০ টুকরা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহতের পরিবারের দাবি, তাকে হত্যা করে লাশ ফেলে রাখা হয়েছে। শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মাধবপুরের রাজাপুর থেকে লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত ওই স্কুল শিক্ষার্থী উপজেলার রাজাপুর গ্রামের সেলিম মিয়ার ছেলে শাহজাহান মিয়া (১৫)। সে স্থানীয় একটি স্কুলের দশম শ্রেনীর শিক্ষার্থী। স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় উপজেলার মনতলা রেলস্টেশনের কাছে রাজাপুর নামকস্থানে স্থানীয় লোকজন শাহজাহানের টুকরো টুকরো লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেয়। খবর পেয়ে জিআরপি পুলিশ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে লাশ উদ্ধার করে। শাহজাহানের পরিবার ও এলাকার লোকজন জানান, নিহতের গায়ে কাদা ও আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তাদের ধারণা, শাহজাহানকে হত্যা করে ট্রেনের নিচে ফেলা রাখা হয়েছে। রিয়েল-টাইম নিউজ ডটকম/প্রতিনিধি/একেএ/মাম_২১১৬ ঘ. http://www.real-timenews.com/details.php?id=50854&p=1&s=4

নতুন জামা না দিতে পেরে দুই সন্তানকে পদ্মায় ফেলে দিলেন বাবা

Sat 18 Aug 2012 5:51 PM BdST
কুষ্টিয়া, ১৮ আগস্ট (রিয়েল-টাইম নিউজ ডটকম)-- ঈদের নতুন পোষাক কিনে দিতে না পেরে কুষ্টিয়ার লালন শাহ সেতুর উপর থেকে দুই সন্তানকে পদ্মায় ফেলে দিয়ে হত্যা করেছে এক পাষণ্ড বাবা। শনিবার দুপুরে নির্মম এ ঘটনাটি ঘটিয়েছেন কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার বারদাগ গ্রামের বাসিন্দা আবদুল মালেক। এলাকাবাসী জানিয়েছে, আব্দুল মালেকের দুই সন্তান মুন্নি (১০) ও মানসুর (৫) ঈদের জন্য বাবার কাছে নতুন জামা কাপড় চায়। নতুন জামার জন্য সন্তানেরা জেদ করলে বাবা তার দুই সন্তানকে ঈদের জামা কাপড় কিনে দেওয়ার জন্য সকালে বাড়ি থেকে বের হয়। কিন্তু আব্দুল মালেক দুই সন্তানকে বাজারের দিকে না দিয়ে লালন শাহ ব্রিজের দিকে নিয়ে যেতে থাকে। বাজারে না গিয়ে ব্রিজের ওপর কেন যাচ্ছো সন্তানদের এমন প্রশ্নের কোনো জবাব না দিয়ে মালেক প্রথমে মুন্নীকে সেতুর ওপর থেকে ধাক্কা দিয়ে নদীতে ফেলে দেয়। এ ঘটনা দেখে শিশুপুত্র মানসুর জীবন বাঁচানোর তাগিদে চিৎকার করতে করতে দৌঁড়াতে থাকে। কিন্তু বাঁচতে পারেনি পাষণ্ড পিতার হাত থেকে। কিছুদূর যাওয়ার পরই মানসুরকে ধরে ফেলে মালেক। পরে তাকেও হাত পা ধরে বোনের মতই পদ্মা নদীতে ফেলে দিয়ে নিজেও লাফ দেয়। এলাকাবাসী মালেককে উদ্ধার করতে পারলেও তার দুই সন্তানকে নদী থেকে উদ্ধার করতে পারেনি। মালেককে অসুস্থ অবস্থায় উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পুলিশ পাহারায় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মালেক জানান ‘অভাবের সংসার, পেটে ভাত নাই, সন্তান বাঁচি রাখি কী করব? তাই ব্রিজের ওপর নিয়ে ওদেরকে ফেলি দিছি।’ নিহত সন্তানদের মা মমতাজ খাতুন বলেন, শনিবার সকাল ৯টার দিকে দুই ছেলেমেয়েকে জামা কাপড় কেনা ও চুল কাটানোর কথা বলে নিয়ে যায় মালেক। এরপর তাদের কেউ আর ফিরে আসেনি। পরে তিনি শুনতে পান, ছেলে-মেয়েকে তার স্বামী নদীতে ফেলে দিয়েছেন। ভেড়ামারা থানার সহকারি উপপরিদর্শক (এএসআই) আবদুল মতিন বলেন, মালেককে পুলিশ পাহারায় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। দুই সন্তানকে পদ্মা নদীতে ফেলে দেওয়ার কথা সুস্থ অবস্থায় তিনি স্বীকার করেছেন। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এদিকে দুই সন্তানকে উদ্ধারে এলাকাবাসী ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা নদীতে নেমেছেন। উদ্ধার তৎপরতা চলছে। রিয়েল-টাইম নিউজ ডটকম/প্রতিনিধি/একেএ/মাম_১৭৪৯ ঘ. http://www.real-timenews.com/details.php?id=50850&p=1&s=4

Thursday 9 August 2012

নিজগ্রামে সোহেলের দাফনসম্পন্ন : বিক্ষোভে উত্তাল রাবি ক্যাম্পাস : ভিসির অপসারণ দাবি, ছাত্রলীগের ১৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা, আটক ১

রাবি ও কাউনিয়া (রংপুর) প্রতিনিধি ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত ছাত্রলীগ নেতা আবদুল্লাহ আল হাসান সোহেলের দাফনসম্পন্ন হয়েছে। রংপুরের কাউনিয়া উপজেলায় নিজগ্রামে জানাজা শেষে পারিবারিক গোরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। এদিকে সোহেল হত্যার ঘটনায় গতকাল শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন মহলের বিক্ষোভে উত্তাল ছিল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। সকাল থেকেই বিভিন্ন সংগঠনের বিক্ষোভ ও মৌন মিছিল, মানববন্ধন, মুখে কালো কাপড় ও কালোব্যাজ ধারণ, সংবাদ সম্মেলন, নিন্দা ও বিবৃতিসহ এসব কর্মসূচি থেকে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবিসহ সরকারদলীয় ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের কর্মকাণ্ডের তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়। শিক্ষক শিক্ষার্থীরা এ সময় বর্তমান ভিসির আমলে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ৪ ছাত্রের নিহত হওয়ার কথা উল্লেখ করে তার অপসারণ দাবি করেন তারা। এদিকে এ ঘটনায় ছাত্রলীগের ১৪ জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে। আসামিদের একজনকে আটক করেছে পুলিশ। সোহেলের দাফনসম্পন্ন : রংপুরের কাউনিয়া উপজেলায় নিজ গ্রামে সাবদী মাদরাসা মাঠে গতকাল সোহেলের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। তার বাবা মৌলভী আবদুস সালাম জানাজায় ইমামতি করেন। জানাজা শেষে পারিবারিক গোরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। তার আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, ছেলেকে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করেছিলাম। আশা ছিল সোহেল মানুষের মতো মানুষ হয়ে বাড়ি ফিরবে, কিন্তু আজ আমার ছেলে লাশ হয়ে ফিরল। তিনি সরকারের প্রতি আকুল আবেদন জানিয়ে বলেন, আমিই যেন এই দেশের শেষ বাবা হই যার ছেলে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে লাশ হয়ে ঘরে ফিরল। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে সোমবার বিকালে ঢাকা থেকে সোহেলের লাশ রাত সাড়ে ১১টায় তার গ্রামের বাড়িতে পৌঁছায়। তখন আশপাশের গ্রামের নারী, পুরুষ, শিশু-কিশোরের ঢল নামে তাদের প্রিয় সোহেলকে এক নজর দেখতে। ১৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা, আটক ১ : এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সভাপতি গ্রুপের সমর্থক তৌহিদ আল তুহিনকে প্রধান আসামি করে ১৪ জন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত আরও ২-৩ জনের বিরুদ্ধে মতিহার থানায় একটি হত্যামামলা হয়েছে। সোমবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে অপর সাংগঠনিক সম্পাদক মো. নোমান বাদী হয়ে এ মামলা করেন। মামলার অন্যতম আসামি ও ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আশরাফুজ্জামান সোহেলকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গতকাল দুপুরে একই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ছাত্রলীগের সংবাদ সম্মেলন চলার সময় ক্যাফেটেরিয়ার সামনে থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। মামলার অন্য আসামিরা পলাতক রয়েছে। মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনিছুর রহমান আমার দেশ-কে বলেন, সোহেল হত্যার ঘটনায় ছাত্রলীগের তুহিনসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মামলার তদন্তের স্বার্থে অনেক কিছুই এখন বলা সম্ভব হচ্ছে না। এরই মধ্যে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেফতারের প্রক্রিয়া চলছে বলে তিনি জানান। শিক্ষকদের মৌন মিছিল : সোহেল হত্যার বিচার, হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ ও দুর্নীতিবাজ ভিসির অপসারণ দাবিতে ক্যাম্পাসে মৌনমিছিল করে জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম। বেলা ১১টায় মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয় সিনেট ভবনের সামনে থেকে শুরু হয়ে ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ শেষে প্রশাসন ভবনের সামনে শেষ হয়। জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. মো. ফজলুল হকের পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, ফোরামের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ড. মো. শামসুল আলম সরকার। তিনি বলেন, বর্তমান ভিসি প্রতিনিয়ত ৭৩’র আইনের পরিপন্থী কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। সিন্ডিকেটে বেশ কয়েকজন ভিন্নমতালম্বী সদস্য থাকার পরও সোহেল হত্যা তদন্তের জন্য সিন্ডিকেটে দলীয় লোকদের সমন্বয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। এর আগেও এরকম অনেক তদন্ত কমিটি হয়েছে কিন্তু কোনো প্রতিবেদন আলোর মুখ দেখেনি। এ কমিটি থেকে নিরপেক্ষ তদন্ত আশা করা যায় না উল্লেখ করে প্রফেসর শামসুল বলেন, এ তদন্ত কমিটি ভেঙে দিয়ে সব মতের শিক্ষকদের সমন্বয়ে কমিটি চাই। তিনি বলেন, বর্তমান প্রশাসনের সময়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪ জন ছাত্র নৃশংস হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে। কিন্তু কোনোটির বিচার হয়নি। ভিসির মদতেই সোহেলকে হত্যা করা হয়েছে, কারণ তিনিই পদ্মা সেতুর চাঁদা তোলার দায়িত্ব ছাত্রলীগকে দিয়েছেন এবং কার্যক্রমের উদ্বোধনও করেছেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা দিতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ। প্রফেসর শামসুল বর্তমান ভিসির পদত্যাগ দাবি করে বলেন, আমরা এ ভিসিকে আর চাই না। অবিলম্বে তার অপসারণ চাই। সমাবেশে শিক্ষকরা নিহত সোহেলের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন। একই দাবিতে আজ শিক্ষকরা সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত কর্মবিরতি ও কালোব্যাজ ধারণ কর্মসূচি পালন করবেন। দাবি পূরণ না হলে পরে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করবেন বলেও জানান শিক্ষকরা। এসময় ইবির সাবেক ভিসি প্রফেসর মু. রফিকুল ইসলাম, সাদা দলের আহ্বায়ক মু. আজাহার আলী, বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের ডিন ড. মো. আমজাদ হোসেনসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শতাধিক শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন। ৩০১ শিক্ষকের বিবৃতি : একইদিন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩০১ জন শিক্ষক এক বিবৃতিতে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষোভ ও নিন্দা জানিয়ে বলেন, বর্তমান প্রশাসনের সর্বোচ্চ কর্তাব্যক্তির অর্বাচীন ও দলবাজির নির্মম পরিণতি এ হত্যাকাণ্ড। পদ্মা সেতুর অর্থায়নের জন্য উঠানো চাঁদার ভাগিভাগি নিয়ে এই অনাকাঙ্ক্ষিত হত্যাকাণ্ডের সম্পূর্ণ দায়দায়িত্ব ভিসির ওপর বর্তায়। কারণ, তিনি নিজ উদ্যোগে সরকারদলীয় ছাত্র সংগঠনের মাধ্যমে বিতর্কিত চাঁদা তোলা কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। নিহত ছাত্রের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে শিক্ষকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা রক্ষায় অবিলম্বে এই দলবাজ ভিসির অপসারণ ও খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। বিবৃতিদাতা শিক্ষকদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন : প্রফেসর মু. আজহার আলী, এম রফিকুল ইসলাম, এম আমিনুল ইসলাম, ড. মামনুনুল কেরামত, ড. আবদুর রহমান সিদ্দিকী, সিএম মোস্তফা, ড. বেলাল হোসেন, এম আবুল হাশেম, এম নজরুল ইসলাম, এবিএম শাহজাহান, ড. শামসুল আলম সরকার, ড. আমজাদ হোসেন, ড. এম ফজলুল হক, এফ নজরুল ইসলাম প্রমুখ। সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের শোভাযাত্রা ও মানববন্ধন : সোহেলের সহপাঠী সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা গতকাল মুখে কালো কাপড় বেঁধে ক্যাম্পাসে শোভাযাত্রা, মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে। সকাল সাড়ে ১০টায় বিভাগের সামনে থেকে শোভাযাত্রাটি শুরু হয়ে প্রশাসন ভবনের সামনে এসে ৫ মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। পরে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে এসে মানববন্ধন ও সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে শিক্ষার্থীরা। এসময় বক্তব্য রাখেন মাস্টার্সের শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল মামুন, অভিজিত রায়, ৪র্থ বর্ষের ইতি, ৩য় বর্ষের শীলা, বিপ্লব, আরিফ প্রমুখ। বক্তব্যের সময় অনেকেই সহপাঠীকে হারিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। প্রগতিশীল ছাত্রজোটের বিক্ষোভ : একই ঘটনার প্রতিবাদে বেলা সাড়ে ১১টায় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে প্রগতিশীল ছাত্রজোট। ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক এসএম ইফতেখারুল আলম শিপলুর পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ছাত্র ইউনিয়ন সভাপতি শিপন আহমেদ। তিনি বলেন, বর্তমান প্রশাসন নিরাপত্তার নামে ক্যাম্পাসকে ক্যান্টনমেন্টে পরিণত করেছে। এখানে একের পর এক ছাত্র হত্যার ঘটনা ঘটছে। যেখানে সোহেল নিহত হয়েছে, সেখানে পুলিশের দুটি ক্যাম্প থাকার পরও পুলিশ কোনো ভূমিকা রাখতে পারেনি। তিনি অবিলম্বে ছাত্রলীগের নৈরাজ্য ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার, লোক দেখানো তদন্ত কমিটি বাতিল ও অবহেলার কারণে প্রশাসনের পদত্যাগ দাবি করেন। ছাত্রলীগের সংবাদ সম্মেলনে পদ্মা সেতুর টাকা ভাগের বিষয় অস্বীকার : এদিকে পদ্মা সেতু নির্মাণে আদায় করা চাঁদার টাকার ভাগবাটোয়ারা নিয়ে ছাত্রলীগ নেতা সোহেল নিহতের বিষয়টি সংবাদমাধ্যমগুলোতে প্রচারের পর গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে তা অস্বীকার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ। দুপুর ২টায় এক সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রলীগ সভাপতি আহম্মেদ আলী ও সাধারণ সম্পাদক আবু হুসাইন বিপু বলেন, তুচ্ছ ঘটনায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করেই রোববার রাতের ঘটনায় সোহেল নিহত হয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে কোনোভাবেই পদ্মা সেতুর চাঁদার টাকা ভাগবাটোয়ারার কোনো সম্পর্ক নেই। এর আগে বিভিন্ন প্রিন্ট এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় ছাত্রলীগের একাধিক নেতাকর্মী পদ্মা সেতুর টাকা ভাগবাটোয়ারা নিয়েই সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি করেন। এদের মধ্যে আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক মেহেদী হাসান বারী অন্যতম। তবে তিনি গতকাল তার দেয়া আগের বক্তব্য অস্বীকার করেন। ছাত্রলীগের দুজনকে বহিষ্কার : এ ঘটনায় রাবি শাখা ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি তাদের দুই নেতাকে দল থেকে স্থায়ী বহিষ্কার করেছে। সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সভাপতি বদিউজ্জামান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়—ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আখেরুজ্জামান তাকিম এবং সাংগঠনিক সম্পাদক তৌহিদ আল তুহিনকে সংগঠনের শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও সংগঠনবিরোধী কর্মকাণ্ডের জন্য সংগঠন থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হলো। তদন্ত কমিটির কাজ শুরু : এদিকে সিন্ডিকেট কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটি তাদের তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেছে বলে জানান কমিটির আহ্বায়ক প্রফেসর ড. গোলাম কবির। তিনি আমার দেশকে বলেন, আজ (গতকাল) কমিটির সব সদস্যের কাছে চিঠি পৌঁছানোর পর আমাদের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তবে তদন্ত কমিটি একপক্ষীয় এবং আগের কোনো তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ ও সুষ্ঠু বিচার না হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রশাসন গঠন করে দিয়েছে; এতে আমাদের করার কিছু নেই। এর আগে প্রতিবেদন জমা ও শাস্তির সুপারিশ করা হয়েছে। কিন্তু প্রশাসন সে ব্যাপারে পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। এরই মধ্যে গঠিত তদন্ত কমিটিকে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা একপক্ষীয় ও দলীয় উল্লেখ করে তা প্রত্যাখ্যান করেছেন। উল্লেখ্য, গত রোববার রাতে ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক গ্রুপের নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ৩য় বর্ষের ছাত্র ও ছাত্রলীগ নেতা আবদুল্লাহ আল হাসান সোহেল। ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা অভিযোগ করেন, পদ্মা সেতু নির্মাণে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায় করা চাঁদার টাকার ভাগবাটোয়ারা নিয়ে সোহেলকে হত্যা করা হয়। এদিকে সোহেল হত্যা মামলায় গ্রেফতারকৃত এজাহারভুক্ত আসামি ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আশরাফুজ্জামান সোহেলকে ২ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। মতিহার থানার ওসি আনিছুর রহমান বলেন, গ্রেফতারের পর তাকে রাজশাহী মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে হাজির করে ৩ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানানো হলে আদালত ২ দিনের রিমান্ড মুঞ্জুর করেন। আশরাফুজ্জামান সোহেল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র।