ফরিদপুর অফিস | তারিখ: ২২-০৭-২০১০
ফরিদপুরে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের দ্বন্দ্ব ভয়ংকর রূপ নিয়েছে। সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর ছেলে আয়মন আকবরের ফরিদপুর আগমন ঠেকাতে শ্রমমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনের সমর্থকেরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। তারা ফরিদপুর-সালথা সড়কের কৈজুরি ইউনিয়নের চুঙ্গির মোড় এলাকায় সড়কি, দা, ঢালসহ অবস্থান নেয়।
এদিকে উভয় পক্ষ আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে শহরের একই স্থানে একই সময় একই দাবিতে পৃথক সমাবেশ ডাকলেও তা হয়নি। আগের রাতে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে স্থানীয় নেতাদের বৈঠক এবং কেন্দ্রীয় নেতাদের হস্তক্ষেপে দুটি সমাবেশই স্থগিত করা হয়। দুই পক্ষই সমাবেশ ডেকেছিল যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে। তবু বাড়তি সতর্কতা হিসেবে আজ জনতা ব্যাংকের মোড়, আলীপুরের মোড়, গোল পুকুর ড্রিম শপিং কমপ্লেক্স, প্রেসক্লাবের সামনেসহ শহরের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
এর আগে গতকাল বুধবার জেলা আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় মামলা হয়েছে। পুলিশ এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে গতকাল রাতে শহরের বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি করে ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতারা জানান, সাজেদা চৌধুরীর ছেলে আয়মন আকবর ফরিদপুর, সালথা ও নগরকান্দায় বিভিন্ন আনুষ্ঠানে যোগ দিতে আজ সকালে আসার কথা ছিল। তাঁর প্রথম অনুষ্ঠান ছিল সকাল ১০টায় সালথায়। সেখানে উপজেলা পরিষদ আয়োজিত এসএসসির জিপিএ-৫ প্রাপ্তদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেওয়ার কথা ছিল তাঁর। ঢাকা থেকে ফরিদপুরের উদ্দেশে রওনা দিয়ে ফরিদপুর-সালথা আঞ্চলিক সড়ক দিয়ে সালথা উপজেলা বিদ্যালয়ে পৌঁছানোর কথা ছিল আয়মন আকবরের।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আয়মন আকবরকে প্রতিহত করতে ফরিদপুর সদরের কৈজুরি ও কানাইপুর ইউনিয়নে শ্রমমন্ত্রী-সমর্থিত প্রায় দুই হাজার লোক চুঙ্গির মোড় এলাকায় সমবেত হয়। সকাল আটটা থেকে তারা কজুরি ও কানাইপুর এলাকার ওয়াহিদ মোল্লা, লতিফ মাস্টার ও সিরাজ ব্যাপারীর নেতৃত্বে প্রকাশ্যে ঢাল, সড়কি, লাঠি, রামদাসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে মহড়া চালায়। দুপুর ১২টার দিকে আয়মন আকবরের আসার কর্মসূচি বাতিল হওয়ার খবর আসার পর লোকজন প্রতিরোধ তুলে নেয়।
প্রতিরোধ কর্মসূচিতে নেতৃত্বদানকারী অন্যতম নেতা জেলা শ্রমিক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বেলায়েত হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আয়মন আকবরকে প্রতিহত করতেই আমরা সবাই সমবেত হয়েছিলাম।’
সালথা উপজেলার চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন জানান, জিপিএ-৫ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আয়মন আকবর প্রধান অতিথি ছিলেন। তিনি না এলেও সংবর্ধনা অনুষ্ঠান হয়েছে এবং সালথার ইউএনও এস এম তুহিনুর আলম উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, ‘আয়মন আকবরকে প্রতিহত করার জন্য কৈজুরির চুঙ্গির মোড়ে প্রতিরোধ কর্মসূচি পালিত হয়েছে বলে শুনেছি।’
ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. আওলাদ আলী ফকির প্রথম আলোকে বলেন, ‘চুঙ্গির মোড়ে পুলিশ যায়নি। তবে ওখানে কয়েক হাজার লোক দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সমবেত হয়েছে, এ খবর পেয়ে আমি তা শ্রমমন্ত্রী-সমর্থিত নেতাদের জানাই। এরপর শ্রমমন্ত্রীর ভাই খন্দকার মোহতেশাম হোসেন ও জেলা আওয়ামী লীগের নেতা মোকাররম মিয়া ঘটনাস্থলে গিয়ে বেলা সাড়ে ১২টার দিকে সমবেতদের সরিয়ে দেন।
http://www.prothom-alo.com/detail/date/2010-07-22/news/80874
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment