Saturday 8 January 2011

বায়রার মতবিনিময় সভা : শ্রম ও প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি

অর্থনৈতিক রিপোর্টার

জনশক্তি রফতানি নিয়ে যে ষড়যন্ত্র ও তামাশা চলছে তার জন্য দায়ী সরকারের নীতি ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী। এ খাতে অচলাবস্থার জন্য একদিকে দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে অপরদিকে জনশক্তি রফতানিকারক ১১শ’ আন্তর্জাতিক রিক্রুট এজেন্সি বেকার হয়ে পড়ছে। এজন্য শ্রম, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেনকে অযোগ্য অভিহিত করে তার পদত্যাগ দাবি করা হয়েছে। গত রাতে রাজধানীর হোটেল পূর্বাণীতে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সির (বায়রা) মতবিনিময় সভায় সংগঠনটির সদস্যরা এ দাবি জানান।
মতবিনিময় সভায় ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই সভাপতি একে আজাদ, বায়রার সভাপতি মোহাম্মদ আবুল বাশার, মহাসচিব আলী হায়দার চৌধুরী এবং কয়েকশ’ সদস্য উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে শ্রম, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও আসেননি। সদস্যদের মধ্য থেকে বক্তব্য রাখেন আলহাজ আবুল হোসেন, মিজানুর রহমান মজুমদার, মো. আবুল বাশার, সিফাত উল্লাহ, সিরাজ মিয়া, নুমান শামীম প্রমুখ।
সভায় বলা হয়, জনশক্তি রফতানির ক্ষেত্রে মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য বন্ধ করতে হবে। তাহলে সরকার নির্ধারিত খরচেই জনশক্তি রফতানি করা সম্ভব। সভায় দাবি ওঠে রিক্রুট এজেন্সিকে রাখতে হবে অথবা বাংলাদেশ ওভারসিজ এমপ্লয়মেন্ট সার্ভিসেস লিমিটেডকে (বোয়েলস) রাখতে হবে। একসঙ্গে দুই নীতি চলতে পারে না। এ দাবি বাস্তবায়ন করতে প্রয়োজনে বায়রা সদস্যরা মন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে লাইসেন্স জমা দেবেন। শ্রম, কর্মসংস্থান ও প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী দেশে গণ্ডগোল বাধাচ্ছে। এ মন্ত্রীকে অপসারণ ও দাবি আদায়ের জন্য প্রয়োজনে মানববন্ধন, মহাসড়ক অবরোধ ও মন্ত্রণালয় ঘেরাও করার কথা বলা হয়।
অনুষ্ঠানে মন্ত্রীকে উদ্দেশ করে বায়রা সদস্যরা বলেন, বর্তমানে এ খাতের দুরবস্থা তা সত্ত্বেও ক্ষমতা গ্রহণ করে কেন নতুন করে ৮০ জনকে রিক্রুটিং লাইসেন্স দেয়া হলো? মন্ত্রণালয় থেকে রিক্রুটিং এজেন্সিকে কেন হেনস্তা করা হচ্ছে? মন্ত্রী বখরা চান কিনা সে ব্যাপারে প্রশ্ন করা হয়।
সভায় বলা হয়, সরকার জনশক্তি রফতানি বিষয়ে যে নীতি গ্রহণ করছে তাতে সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন তো ডুববেই সঙ্গে সরকার নিজেও ডুবে যাবে। বায়রা সভাপতি মোহাম্মদ আবুল বাশার বলেন, সরকারের সঙ্গে আমার সম্পর্ক আছে কিন্তু সদস্যরা যে সিদ্ধান্ত নেবে তা বাস্তবায়ন করার জন্য যা করা দরকার তাই করা হবে।
জনশক্তি রফতানি বিষয়ে সরকার যে নীতিমালা গ্রহণ করতে চাচ্ছে তার মাধ্যমে সরকারের কিছু আমলাই লাভবান হবে উল্লেখ করে এফবিসিসিআই সভাপতি একে আজাদ বলেন, সবচেয়ে বড় রফতানি খাত নিয়ে যারা তামাশা করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। এক্ষেত্রে কোনো ব্যক্তিস্বার্থের দিকে নজর দেয়া যাবে না। এ খাতে ষড়যন্ত্র করে কিছু আমলা টাকা বানানোর চেষ্টা করছে। যারা এ ধরনের ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত তাদের বিষদাঁত ভেঙে দেবার কথা বলেন তিনি। তবে তিনি বলেন, আমরা ব্যবসা করি সরকার ও বায়রাকে মুখোমুখি করতে চাই না। অচিরেই এ খাতের সমস্যা নিয়ে মন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে সমাধান করা হবে বলে আপাতত সবাইকে আশ্বস্ত করেন তিনি।
সরকারের নীতির বিষয়ে তিনি বলেন, অতীতে দেখা গেছে কোনো সরকারই ব্যবসা করার নীতি গ্রহণ করলে তা বাস্তবায়িত হয় না। সরকার যেভাবে কাজ করছে তাতে তাদের সুবিধা না হয়ে হিতে বিপরীত হতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

No comments:

Post a Comment