Saturday 29 January 2011

দেশ যেভাবে চলছে তাতে মনে হয় কোনো সরকার নেই : কর্নেল অলি

চট্টগ্রাম ব্যুরো

মহাজোটের অংশীদার লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (এলডিপি) চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীর বিক্রম এমপি বলেছেন, ক্ষমতার হাতবদল হয়েছে কিন্তু দেশের মানুষের দিনবদল হয়নি। গত দুই বছরে সরকার দ্রব্যমূল্য, আইনশৃঙ্খলা, দুর্নীতি, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও টেন্ডারবাজির মতো ক্ষেত্রগুলো নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়েছে। দেশ যেভাবে চলছে তাতে মনে হয় দেশে কোনো সরকার নেই। জনগণের অসন্তোষ দিন দিন বাড়ছে। এই অসন্তোষ গণবিদ্রোহে রূপ নিতে পারে। মনে রাখতে হবে ‘প্রয়োজন’ আইন মানে না। গতকাল দুপুরে নগরীর একটি রেস্টুরেন্টে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি প্রশাসনে গতি ফিরিয়ে আনতে দেশকে ১১টি প্রদেশে বিভক্ত করে প্রাদেশিক শাসন ব্যবস্থা চালুর দাবি জানান। এছাড়া ২০১১ সাল সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হবে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
কর্নেল অলি বলেন, দেশে আইনের শাসন নেই। যারা ক্ষমতায় আছেন আইন তাদের জন্য একরকম আর বিরোধী দলের জন্য অন্যরকম। রাগ, ক্ষোভ, প্রতিহিংসা, কথায় কথায় টিপ্পনি, অসম্মানজনক বক্তব্য প্রদান, দুর্নীতি, টেন্ডারবাজি, অস্ত্রবাজি, স্বজনপ্রীতি ও প্রশাসনের সর্বস্তরে দলীয়করণ দেশকে ধ্বংস ও অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। দিন যত যাচ্ছে সরকার ততই অসহিষ্ণু হয়ে উঠছে।
বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতনের মাধ্যমে সরকার চরম অসহিষ্ণুতার পরিচয় দিচ্ছে। অপরদিকে সরকারি দলের নেতাকর্মী এবং মন্ত্রী এমপিদের অনেকে টেন্ডারবাজি, স্বজনপ্রীতি, দলীয়করণসহ নানা ধরনের কর্মকাণ্ডে জড়িত হয়ে পড়লেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। এক্ষেত্রে সরকার যেন অন্ধ ও বধির।
কর্নেল অলি বলেন, প্রতিদিন দেশে দুর্নীতি বেড়ে চলেছে। এত বেশি দুর্নীতি আগে কখনও হয়নি। দুর্নীতিতে মন্ত্রী-এমপিদের নামও আসছে। গত দুই বছরে কোনো দুর্নীতিবাজকে গ্রেফতার করতে পারেনি সরকার। টিআইবি দুর্নীতির কথা বলছে বলে সরকার তাদের প্রতি ভালো আচরণ করছে না। গত দুই বছরে দেশে আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটেছে উল্লেখ করে কর্নেল অলি বলেন, গরু ছাগলের হাট থেকে শুরু করে নাপিতের দোকান পর্যন্ত চাঁদাবাজদের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না। দ্রব্যমূল্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গত ৪০ বছরের মধ্যে দ্রব্যমূল্য এখন সর্বোচ্চ। সাধারণ মানুষ দিশেহারা। বিদ্যুত্ ও গ্যাস খাতের অবস্থাও ভয়াবহ। কেউ দেশে বিনিয়োগ করার সাহস পাচ্ছেন না। জনশক্তি রফতানিতে ধস নেমেছে। কমে গেছে রেমিট্যান্স প্রবাহ।
তিনি বলেন, প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের একটি করে কম্পিউটার দিয়েই সরকার মনে করছে তারা ডিজিটাল বাংলাদেশ করে ফেলেছে। অথচ ইউরোপ আমেরিকার মতো উন্নত দেশগুলো কখনও নিজেদের ডিজিটাল বলে দাবি করে না। ডিজিটাল বাংলাদেশ বিষয়টিই এখনও পরিষ্কার নয়।

No comments:

Post a Comment