Wednesday 18 August 2010

পটুয়াখালীতে আ.লীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষে আহত কমপক্ষে ৫০

Tue 17 Aug 2010 10:13 PM BdST

পটুয়াখালী, ১৭ আগস্ট (আরটিএনএন ডটনেট)-- দলীয় এমপি গোলাম মাওলা রনির ‘ভাইয়া’ বাহিনীর সদস্যদের হামলায় যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে স্থানীয় আওয়ামী লীগের ডাকা সমাবেশ পণ্ড হয়ে গেছে। তাদের দফায় দফায় হামলায় পটুয়াখালীর উপকূলীয় উপজেলা গলাচিপার পানপট্টির জনপদ রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, ১৫ আগস্টের পলাতক ঘাতকদের বের করে ফাঁসির রায় কার্যকর ও ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলাকারীদের বিচারের দাবিতে স্থানীয় পানপট্টি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ এবং জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে দলীয় এমপি গোলাম মাওলা রনির সমর্থকরা আজ মঙ্গলবার বিকালে উপজেলার পানপট্টি হাইস্কুল চত্বরে একই সময় একই স্থানে সমাবেশ করতে গেলে এ হামলার ঘটনা ঘটে।

এ সময় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। পরে ৬ রাউন্ড শর্টগানের ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান প্যাদাসহ উভয় গ্রুপের অন্তত ৫০ জন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা-কর্র্মী আহত হয়েছে।

গ্রেপ্তার ও পুনরায় হামলার ভয়ে কেউই চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি হয়নি বলে জানা যায়।

আহতদের মধ্যে সুনিল, কামরুল, সোহাগ, সেলিম, ডিপটি খান, উজ্জল, রেফায়েত, মহব্বত, নিপু আকনের নাম জানা গেছে।

পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে এমপি রনির ক্যাডার আজিজুল (২২) নামে এক যুবককে রামদাসহ আটক করে এবং ঘটনাস্থল থেকে বিপুল পরিমাণ রামদা, চাইনিজ কুড়াল, রড ও চাপাতিসহ দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করে।

এদিকে এ ঘটনার রেষ ছড়িয়ে পড়ে গলাচিপা শহরে। বিকেল ৬টার দিকে এমপি রনির লোকেরা দখল করে নেয় গলাচিপা উপজেলা আওয়ামী লীগ অফিস। শহরে চলছে এমপি রনির লোকদের মহড়া। সেখানে এখন থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এতে শহরবাসির মধ্যে চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

গলাচিপা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. হারুন অর রশিদ, সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা টিটো ও সহ-সভাপতি হাজী আবদুল ওহাব খলিফা জানান, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, ১৫ আগস্টের পলাতক ঘাতকদের বের করে ফাঁসির রায় কার্যকর ও ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলাকারীদের বিচারের দাবিতে উপজেলার পানপট্টি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের উদ্যোগে মঙ্গলবার বিকালে পানপট্টি হাইস্কুল মাঠে সমাবেশ শুরু করে। এ সময় এমপি গোলাম মাওলা রনির নেতৃত্বে তার ক্যাডারা রামদা, চাপাতি ও হকিস্টিক নিয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে হামলা চালিয়ে সভা পণ্ড করে দেয়।

অপরদিকে এমপি গোলাম মাওলা রনির বক্তব্য জানার জন্য তার মোবাইলে বারবার ফোন করা হলে তিনি মোবাইল ফোন রিসিভ করেননি।

তবে এমপির সমর্থিত উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রেজাউল করিম জানান, জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার বিকালে পানপট্টিতে আমাদের নির্ধারিত দোয়া মোনাজাতের অনুষ্ঠান ছিল। কিন্তু উপজেলা চেয়ারম্যান ও তার সমর্থকরা আমাদের কর্মসূচি বানচাল করার জন্য তারা একই সময় একই দিন সেখানে পাল্টা কর্মসূচি ঘোষণা করে। তা সত্ত্বেও দোয়া-মোনাজত অনুষ্ঠানে এমপি সাহেব ওয়াজ শুরু করলে উপজেলা চেয়ারম্যানের লোকজন তাদের দিকে মাইকের হর্ন ফিরিয়ে দিয়ে বক্তৃতা শুরু করে।

এতে এলাকাবাসি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠলে তারা আমাদের অনুষ্ঠানস্থলে হামলা চালায়। এতে আমাদের ১৫/২০ জন নেত-কর্মী আহত হয়। তবে দলীয় অফিস দখলের কথা তিনি স্বীকার করে বলেন, আমাদের অফিস আমরা দখল করে নিয়েছি।

গলাচিপা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মিজানুর রহমান জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সেখানে ৬ রাউন্ড ফাঁকা গুলি করতে হয়েছে। আওয়ামী লীগ অফিস দখলের কথাও শুনেছি।

শহরের পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণের বাইরে রয়েছে। শহরজুড়ে এখন থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। তিনি বলেন, দুগ্রুপই এমন ইস্যু নিয়ে সভা আহবান করেছে তা ছিল স্পর্শকাতর। যার কারণে সেখানে ১৪৪ ধারা জারি করাও সম্ভব ছিল না। তবে আমরা চেষ্টা করছি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার।

গলাচিপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ রবিউল ইসলাম জানায়, গলাচিপার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে একজনকে আটক করা হয়েছে।

আরটিএনএন ডটনেট/প্রতিনিধি/এফএন/এমআই_ ১৯৫৭ ঘ.

No comments:

Post a Comment