খুলনা অফিস
শিক্ষাবর্ষের তিন মাস শেষ হতে চললেও বোর্ডের বিনামূল্যের সব বই খুলনার শিক্ষার্থীরা এখনও হাতে পায়নি। ফলে শিক্ষকরা ক্লাসের রুটিন বা সিলেবাস তৈরি করতে পারেননি। অনেক স্কুল বইয়ের অভাবে এবার মাসিক পরীক্ষা নিতে পারছে না। আর শিক্ষার্থীদের প্রস্তুতি ক্লাসে যাওয়া-আসার মধ্যে সীমাবদ্ধ। ঠিক এ অবস্থার মধ্যেই শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রথম সাময়িক পরীক্ষার সময়সূচি ঘোষণা করেছে। এতে উদ্বিগ্ন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। যেসব শিক্ষার্থী বই পায়নি, তাদের অভিভাবকদের বাইরে থেকে পুরনো বই সংগ্রহ অথবা বই ফটোকপি করে নেয়ার জন্য পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। এর ফলে মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত অভিভাবকরা বাড়তি টাকা গুনতে হিমশিম খাচ্ছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, গত ২২ ডিসেম্বর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদফতরের সূত্র মোতাবেক শিক্ষা মন্ত্রণালয় সরকারি-বেসরকারি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোর ২০১০ শিক্ষাবর্ষের ছুটির তালিকা ও শিক্ষাপঞ্জি অনুমোদন করে। জানুয়ারি মাসে এ নির্দেশনা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে পাঠানো হয়। সময়সূচি অনুযায়ী আগামী ১৭ থেকে ২৯ এপ্রিলের মধ্যে স্কুলগুলোতে প্রথম সাময়িক পরীক্ষা শুরু করতে হবে। এর মধ্যেই ক্লাসের সিলেবাস শেষ করতে হবে। এ অবস্থায় শিক্ষকরা সব বিষয়ের বই হাতে না পেয়ে ক্লাসের সিলেবাস তৈরি করতে পারছেন না।
এইচ.আর.এইচ প্রিন্স আগাখান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক কালিপদ মণ্ডল জানান, বইয়ের অভাবে এবার মাসিক পরীক্ষা নেয়া হয়নি। হাতে বই না থাকায় ব্লাক বোর্ডে লিখে কোনো রকমে ক্লাস নেয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, এবার পরীক্ষায় সৃজনশীল প্রশ্ন থাকায় শিক্ষার্থীদের প্রস্তুতি নেয়া কঠিন হয়ে পড়বে।
বিকে ইউনিয়ন ইনস্টিটিউশন স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোস্তফা আকতারুজ্জামান বলেন, চাহিদা অনুযায়ী বই পাওয়া যাচ্ছে না। ডিইও অফিসে চাহিদা অনুযায়ী আমরা লিস্ট দিয়েছি। তারা বলছেন, বই এলে খবর দেয়া হবে। কবে বই আসবে, এ ধরনের কোনো নির্দিষ্ট সময় দিতে পারেননি তারা।
সরকারি করোনেশন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জিএম আইয়ুব হোসাইন বলেন, ৮ম শ্রেণীর গার্হস্থ্য বিজ্ঞান বই এখনও কেউ পায়নি। আর জানুয়ারি মাসের পর ৬ষ্ঠ ও ৯ম শ্রেণীর যে ছাত্রীরা নতুন ভর্তি হয়েছে, তাদের মধ্যে কিছু ছাত্রী এখনও বই পায়নি।
সালমা খাতুন নামের একজন অভিভাবক বলেন, প্রতিদিন বাজারে বই কিনতে গিয়ে ঘুরপাক খেতে হচ্ছে, কিন্তু বই পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে ছেলে-মেয়েরা ক্লাসের পড়াও সম্পন্ন করতে পারছে না। এর মধ্যে পরীক্ষার সময়সূচি ঘোষণায় তিনি হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। একাধিক অভিভাবক একইভাবে তাদের হতাশার কথা জানিয়েছেন।
http://www.amardeshonline.com/pages/details/2010/03/29/24806
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment