Wednesday 24 March 2010

একদিনে তিন জোড়া খুন : গুলশানে স্বামী-স্ত্রী সূত্রাপুরে দোকান কর্মচারী আড়াইহাজারে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ



স্টাফ রিপোর্টার
রাজধানী ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে তিন জোড়া খুন অর্থাত্ ৬টি নৃশংস হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। গুলশানে ঘরে ঢুকে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা মেয়ের সামনে বাবা সাদিকুর রহমান (৫৫) ও মা রোমানা নার্গিসকে (৪৫) এলোপাতাড়ি গুলি করে হত্যা করেছে। মা-বাবাকে অস্ত্রধারীরা ফিল্মি কায়দায় যখন হত্যা করছিল তখন ঘাতকদের ভয়ে মেয়ে ইতি (১৪) বাথরুমে গিয়ে আত্মগোপন করে। স্কুলছাত্রী মেয়েকে বিয়ে দিতে রাজি না হওয়ায় এ জোড়া খুনের ঘটনা ঘটে। হত্যার পর দুর্বৃত্তরা অস্ত্র উঁচিয়ে ফিল্মি কায়দায় গুলি ছুড়তে ছুড়তে পালিয়ে যায়। প্রকাশ্য দিবালোকে এ হত্যার ঘটনা ঘটলেও আশপাশের লোকজন কেউ তাদের সাহায্যে এগিয়ে আসেনি। বরং গুলির শব্দে আতঙ্কে মানুষজন যে যেদিক পারে আত্মগোপন করে। খোদ রাজধানীতে ঘরে ঢুকে প্রকাশ্য দিবালোকে এ লোমহর্ষক হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। নগরীর সূত্রাপুরে একটি সাইবার ক্যাফেতে হেলাল (২৯) ও রতন (২৭) নামে দুই কর্মচারীকে হত্যা করা হয়েছে। পুলিশ গতকাল সকালে তাদের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে। এছাড়া নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে স্থানীয় ছাত্রদল নেতা আবদুস সালামকে (২৮) কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনার জের ধরে গ্রামবাসী আওয়ামী লীগ কর্মী লাল মিয়াকে (৩০) পিটিয়ে হত্যা করে। এ দুই হত্যার ঘটনায় আড়াইহাজার এলাকায় দুই গ্রুপের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করেছে।
গুলশানে জোড়া খুন : এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, গুলশানের জিপি-ক-৫৪/৪ কালাচাঁদপুরে চারতলা ভবনের দ্বিতীয়তলার ফ্ল্যাটে থাকতেন ব্যবসায়ী সাদিকুর রহমান। তার ছোট মেয়ে ইতির সঙ্গে (১৪) স্থানীয় বখাটে যুবক রুবেলের প্রেমর সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বাবা-মা বিষয়টি বুঝতে পেরে মেয়েকে শাসন করেন। তাকে বুঝিয়ে-শুনিয়ে বখাটে যুবকের কাছ থেকে মেয়েকে ফিরিয়ে আনের। বিষয়টি বুঝতে পেরে রুবেল তার বন্ধুদের নিয়ে প্রায়ই ইতিকে উত্ত্যক্ত করত। স্কুলে আসা-যাওয়ার পথে তাকে নানাভাবে উত্ত্যক্ত করার পাশাপাশি অপহরণ করারও হুমকি দেয়। রুবেলের এ আচরণে ত্যক্তবিরক্ত হয়ে পিতা সাদিক থানায় একটি জিডিও করেন। কিন্তু থানা পুলিশ এ ব্যাপারে তেমন কোনো ভূমিকা রাখেনি। অবশেষে সাদিক বখাটে যুবকের ভয়ে জিডি প্রত্যাহার করে নেন। জিডি প্রত্যাহার করলেও রুবেল ও তার বন্ধুদের বখাটেপনা থেমে থাকেনি। একপর্যায়ে রুবেল ইতিকে তার কাছে বিয়ে দেয়ার জন্য চাপ দেয়। কিন্তু পিতা সাদেক ও তার মা এ বখাটের কাছে মেয়ে বিয়ে না দেয়ার সিদ্ধান্তে অনড় থাকেন। এতে ক্ষুব্ধ হয় রুবেল। সে নানাভাবে ভয়ভীতি দেখায়। তাতেও যখন কাজ না হয় তখন রুবেল তার কয়েক বন্ধুকে নিয়ে খুনের পরিকল্পনা করে।
মঙ্গলবার রাত ২টায় রুবেল ও তার বন্ধু মিথুন সাদিকুরের বাসায় গিয়ে দরজার কলিংবেল টেপে। কিন্তু বাসার লোকজন ভয়ে কেউ দরজা খোলেনি। ভেতর থেকে বাবা সাদিকুর বলেন, তোমরা যা বলার আগামীকাল সকালে এসে বলো। রুবেল সকালে আসার কথা বলে চলে যায়। গতকাল সকাল সাড়ে ৮টার দিকে রুবেল ও মিথুন ওই বাসায় যায়। ঘরে ঢুকে রুবেল সাদিকুরকে বলে, আমার কাছেই আপনার মেয়েকে বিয়ে দিতে হবে। আমিই আপনার মেয়েকে বিয়ে করব। এ কথা শুনে সাদিকুর ও তার স্ত্রী হতভম্ব হয়ে যান। তারা বলেন, তোমার সঙ্গে আমরা মেয়ে বিয়ে দেব না। এতে ক্ষুব্ধ হয় রুবেল ও মিথুন। তারা বাসার ভেতরে উচ্চস্বরে চিত্কার-চেঁচামেচি শুরু করে। পরিস্থিতি খারাপ বুঝতে পেরে সাদেকুর দম্পতি কৌশল নেয়। তারা রুবেলকে বলে, এভাবে তো বিয়েশাদি হয় না। বিয়ে একটি শুভ কাজ, শুভ কাজ এভাবে জোড়াজুড়ি করে করা উচিত নয়। কিন্তু এ কথা মানতে রাজি হয়নি রুবেল। সে বাসা থেকে মেয়েকে জোর করে তুলে নেয়ার হুমকি দেয়। বাবা-মা এর প্রতিবাদ করলে একপর্যায়ে অস্ত্র বের করে রুবেল। পিস্তল দিয়ে সাদিকুর ও তার স্ত্রীর মাথায় ঠেকিয়ে কয়েক রাউন্ড গুলি চালায়। রক্তাক্ত অবস্থায় তারা মেঝেতে লুটিয়ে পড়েন। এরপর তারা মেয়েটিকে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। ভয়ে কিশোরী ইতি বাথরুমে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেয়। দরজা খোলার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে তারা হুমকি দিয়ে বলে আমাদের পথ পরিষ্কার, এখন বিয়েতে বাধা দেবে কে?
ফ্ল্যাটের মধ্যে গোলাগুলির শব্দে পাশের বাসার লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। অন্যান্য বাসার লোকজন ভয়ে দরজা বন্ধ করে দেন। তারা বুঝতেই পারেননি ফ্ল্যাটের ভেতরে এভাবে খুনের ঘটনা ঘটেছে। পাশের বাসার লোকজন মনে করেছিলেন বাসায় ডাকাত পড়েছে। সাহস করে তাই কেউ বাইরে বের হননি। অস্ত্রধারীরা সিঁড়ি বেয়ে নিচে আসার সময় ইতির বড় বোন বীথি চিত্কার করে দারোয়ানকে গেট বন্ধ করতে বলেন। দারোয়ান কলাপসিবল গেট বন্ধ করে দিলে অস্ত্রধারীরা ভেতরে আটকা পড়ে। তারা তখন দারোয়ানের মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে গেট খুলতে বাধ্য করে। দারোয়ান অস্ত্রের মুখে গেট খুলে দিলে সন্ত্রাসীরা বাইরে বেরিয়ে আসে। অস্ত্রধারীরা ঘরের বাইরে এসে ফিল্মি কায়দায় কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি করে বীরদর্পে চলে যায়।
এদিকে গুলিবিদ্ধ রক্তাক্ত সাদিকুর ও নার্গিসকে ইউনাইটেড হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিত্সকরা তাদের মৃত ঘোষণা করেন। ইউনাইটেড হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিত্সক শোয়েব আহমেদ বলেন, প্রথমে মাথায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় নার্গিসকে হাসপাতালে আনা হয়। তার মাথার মগজ বেরিয়ে গিয়েছিল। এর পাঁচ মিনিট পরেই আনা হয় সাদিকুরকে। তিনি বলেন, নার্গিস ঘটনাস্থলেই মারা যান। সাদিকুর হাসপাতালে মারা যান। দুজনেরই মাথায় গুলি লেগেছে। নিহতের বড় মেয়ে সুমাইয়া ইয়াসমিন বিথী জানান, রুবেল নিজেই প্রথমে তার বাবাকে গুলি করে। তার মা এগিয়ে এলে পরে মায়ের মাথায় গুলি করে। এ সময় তার ছোট বোন ইতি বাথরুমে লুকিয়ে ছিল। বিথী জানান, গুলি করার দৃশ্য দেখে তিনি বাসা থেকে দৌড়ে গিয়ে পার্কিং এলাকার একটি গাড়ির ভেতর আশ্রয় নেন। এরই মধ্যে আশপাশের লোকজন জড়ো হতে শুরু করলে সন্ত্রাসীরা গুলি করতে করতে পালিয়ে যায় বলেও জানান তিনি। বিথী অভিযোগ করেন, সন্ত্রাসীরা তার ছোট বোন ইতিকে অপহরণ করতে চেয়েছিল। তিনি বলেন, এ সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে গুলশান থানায় একটি জিডি করেছিলেন বাবা। পরে হুমকি দিয়ে সেই জিডি প্রত্যাহার করে নিতে বাধ্য করে তারা।
নিহত সাদেকুর রহমান ঢাকা মহানগর নার্সারি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ছিলেন। তিনি ব্যবসায়ী সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সদস্য। এছাড়াও তার মাছের ব্যবসা রয়েছে। মহাখালী এলাকায় একটি মাছের ঘের পরিচালনা করতেন তিনি। স্ত্রী ও তিন ছেলেমেয়ে নিয়ে কালাচাঁদপুরের ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকতেন। গ্রামের বাড়ি লক্ষ্মীপুর সদরে। তার বড় মেয়ে সাথী জাপান প্রবাসী। দ্বিতীয় কন্যা বীথি মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বিবিএর ছাত্রী। ছোট মেয়ে ইতি কালাচাঁদপুর হাইস্কুলের নবম শ্রেণীর ছাত্রী। পুলিশ জানায়, এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মিথুনের মাকে আটক করেছে পুলিশ। রুবেলের বাড়িতে তালা লাগিয়ে পরিবারের সবাই পালিয়ে গেছে। গুলশান থানার সাব-ইন্সপেক্টর (এসআই) সিদ্দিকুর রহমান জানান, ঘাতকদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। ঘটনার পরই পুলিশের পাশাপাশি র্যাব ও গোয়েন্দারা তদন্ত শুরু করেছে। ঘাতকদের গ্রেফতারের জন্য বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালাচ্ছে তারা।
সাইবার ক্যাফে থেকে জোড়া লাশ উদ্ধার : সূত্রাপুরের টিকাটুলী এলাকার একটি সাইবার ক্যাফে থেকে গতকাল সকালে দু’যুবকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পুলিশ জানায়, এ দু’যুবকের মৃত্যু নিয়ে রহস্য সৃষ্টি হয়েছে। নিহতরা এ সাইবার ক্যাফের কর্মচারী বলে জানা যায়। তাদের একজনের নাম হেলাল ও অপরজনের নাম রতন।
স্থানীয়রা জানান, সাইবার ক্যাফের মালিকের নাম রিয়াজ উদ্দীন। হেলাল ও রতন রাতে সাইবার ক্যাফেতেই ঘুমাত। পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, টিকাটুলীর ২৯/৪ নম্বর কেএম দাস লেনের জিনিয়াস নেট বংলাদেশ সাইবার ক্যাফেটি গতকাল সকাল থেকে বন্ধ থাকায় সন্দেহ হয়। নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরও না খোলায় স্থানীয় অন্য দোকানদাররা বাইরে থেকে ডাকাডাকি শুরু করে। কিন্তু কোনো সাড়া না পেয়ে তারা পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ এসে দোকান খুলে ভেতরে গেলে হেলাল ও রতনকে মৃত অবস্থায় পায়।
সূত্রাপুর থানার ওসি হানিফ আলী জানান, মৃত দু’যুবকের দেহে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। দুজনের মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না। আশপাশের লোকজন জানান, পূর্বশত্রুতার জের ধরে এ দুজনকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হতে পারে। লাশ দুটি ময়নাতদন্তের জন্য মিটফোর্ড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আড়াইহাজারে জোড়া খুন : এদিকে স্টাফ রিপোর্টার নারায়ণগঞ্জ ও আড়াইহাজার প্রতিনিধি জানান, নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে ছাত্রদল এক নেতা খুনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজিত গ্রামবাসী বাড়ি থেকে ধরে এনে আওয়ামী লীগের এক কর্মীকে পিটিয়ে হত্যা করেছে। নিহতরা হলেন ইউনিয়ন ছাত্রদল সাংগঠনিক সম্পাদক ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক সাংস্কৃতিক সম্পাদক আবদুস সালাম (২৮) ও আওয়ামী লীগ কর্মী লালমিয়া (৩০)। সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে জানা গেছে, বুধবার রাতে থানার কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা প্রফেসর নূরুজ্জামান ওরফে চান মিয়ার সহযোগীরা ছাত্রদল নেতা সালামকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করে। এ হত্যাকাণ্ডের জের ধরে উত্তেজিত গ্রামবাসী ও স্বজনরা আওয়ামী লীগ কর্মী লাল মিয়াকে পিটিয়ে হত্যা করে। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টায় ইজাকান্দি ও বুধবার ভোর ৬টায় কদমীচর গ্রামে এ জোড়া খুনের ঘটনা ঘটে। আড়াইহাজার থানা পুলিশ আবদুর রশিদকে গ্রেফতার করেছে।
গ্রামবাসী জানিয়েছেন, ছাত্রদল নেতা সালাম মঙ্গলবার রাত ৯টায় নিজ বাড়ি কদমীচর থেকে তার শ্বশুরবাড়ি ইজারকান্দি যাওয়ার উদ্দেশে রওনা হন। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টায় সালাম ইজারকান্দি স্কুলের কাছে পৌঁছলে আওয়ামী লীগ নেতা নূরুজ্জামানের সহযোগীরা হামলা চালিয়ে কুপিয়ে সালামকে হত্যা করে। রাতেই কদমীচর গ্রামে ছড়িয়ে পড়ে আওয়ামী লীগ নেতা নূরুজ্জামানের ভাই রশিদ ও লাল মিয়ার নেতৃত্বে ১০/১২ জনের একটি দল সালামকে খুন করে। ফলে কদমীচর গ্রামবাসী ও নিহত সালামের স্বজনের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। উত্তেজনার একপর্যায়ে গতকাল ভোর ৬টায় প্রায় দুইশ গ্রামবাসী ও সালামের স্বজনরা টেঁটা-বল্লমসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা প্রফেসর নূরুজ্জামানের বাড়িতে হামলা চালায়। এ সময় তারা প্রফেসর নূরুজ্জামানের ভাই আবদুর রশিদ, লাল মিয়া ও বোন মরিয়মকে অপহরণ করে সালামের বাড়িতে এনে বেদম প্রহার শুরু করে। খবর পেয়ে আড়াইহাজার থানা পুলিশ গুরুতর আহত অবস্থায় লাল মিয়া, আবদুর রশিদ ও বোন মরিয়মকে জনতার রোষানল থেকে উদ্ধার করে সোনারগাঁও থানা এলাকার আয়েশা আজাদ কমপ্লেক্স ক্লিনিকে নিয়ে গেলে কতব্যরত ডাক্তার লাল মিয়াকে মৃত ঘোষণা করেন। পুলিশ ছাত্রদল নেতা সালাম হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে আবদুর রশিদকে গ্রেফতার করেছে। হত্যা-পাল্টা হত্যার ঘটনায় এলাকায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপি মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে। চরম উত্তেজনা পরিস্থিতি সামাল দিতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশ লাশ ২টি ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসাপাতল মর্গে পাঠিয়েছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মামলার প্রস্তুতি চলছিল। এ ব্যাপারে আড়াইহাজার থানার ওসি সৈয়দ নজরুল ইসলাম জানিয়েছেন, উভয়পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিনের বিরোধের জের ধরে এ জোড়া খুনের ঘটনা ঘটেছে।
এদিকে অপর একটি সূত্র জানিয়েছে, নিহত সালামের বড় ভাই বিএনপি নেতা কালামের সঙ্গে চরের আধিপত্য ও বালুমহালের ইজারা নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা প্রফেসর নূরুজ্জামানের দীর্ঘদিন থেকে বিরোধ চলে আসছে। এ বিরোধকে কেন্দ্র করে উভয়ের মধ্যে ১৫/১৬টি মামলা বিচারাধীন। আড়াইহাজার থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট খোরশেদ আলম মোল্লা, থানা ছাত্রদল সভাপতি জুয়েল আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক শফিউদ্দিন সফু ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে দোষীদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
সিদ্ধিরগঞ্জে তরুণী খুন : এদিকে সিদ্ধিরগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি জানান, সিদ্ধিরগঞ্জে অজ্ঞাত এক তরুণী (১৮) খুন হয়েছেন। গতকাল বিকালে পুলিশ আদমজীর নাভানা ভূঁইয়া সিটির পাশের একটি ডোবা থেকে তার লাশ উদ্ধার করে। নিহতের মুখে ও গলায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তার পরনে ছিল লাল সালোয়ার ও হলুদ রংয়ের কামিজ। পুলিশের ধারণা মঙ্গলবার রাতের কোনো এক সময়ে ওই তরুণীকে ধর্ষণ শেষে হত্যা করে লাশ ওই ডোবায় ফেলে রাখা হয়েছে। পুলিশ তরুণীর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। এ ব্যাপারে থানায় মামলা হয়েছে।

http://www.amardeshonline.com/pages/details/2010/03/25/24320

No comments:

Post a Comment