Thursday 25 March 2010

বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুত্ অফিস ঘেরাও মিছিল, সড়ক অবরোধ

ডেস্ক রিপোর্ট
তীব্র লোডশেডিংয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে জামালপুর, শেরপুরের নালিতাবাড়ী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, জয়পুরহাট ও নাটোরে কৃষক এবং সাধারণ জনতা বিদ্যুত্ অফিস ঘেরাও, সড়ক অবরোধ এবং বিক্ষোভ মিছিল করেছে। আমাদের প্রতিনিধিদের খবর—
জামালপুর : লোডশেডিংয়ের প্রতিবাদ ও বিদ্যুতের দাবিতে জামালপুর-ময়মনসিংহ-ঢাকা সড়ক অবরোধ এবং বিক্ষোভ মিছিল করেছে এলাকাবাসী। গতকাল দুপুর ১২টা থেকে জামালপুর-ময়মনসিংহ-ঢাকা সড়কের নান্দিনাবাজার এলাকায় গাছের গুঁড়ি ফেলে এবং রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ সৃষ্টি করে কৃষক ও জনতা। এ সময় বিক্ষুব্ধ কৃষকরা স্থানীয় পল্লীবিদ্যুত্ অফিসে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করে। এ সময় ওই সড়কে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। আটকাপড়ে দু’শতাধিক যান। পুলিশ ও পল্লীবিদ্যুত্ কর্মকর্তারা উপস্থিত হয়ে বিদ্যুত্ সরবরাহের আশ্বাস দিলে ৩ ঘণ্টা পর অবরোধ তুলে নেয় তারা।
নালিতাবাড়ী : বিদ্যুতের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশ ও বিদ্যুত্ অফিস ঘেরাও হয়েছে নালিতাবাড়ীতে। বিদ্যুত্ পাম্প সেচমালিক সমিতির পক্ষ থেকে কৃষকের সমন্বয়ে স্থানীয় লোকজন গতকাল সন্ধ্যায় উপজেলার নন্নীবাজারে এ সমাবেশ, মিছিল ও ঘেরাও কর্মসূচি পালন করে।
বিদ্যুত্ পাম্প সেচ মালিক সমিতির সহ-সভাপতি মাহমুদুল হক খোকনের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন রহুল আমীন, বাদল হোসেন, মোস্তাফিজুর রহমান আবদুল্লাহ, নূরুল আমীন, মোখলেছুর রহমান রিপন প্রমুখ। বক্তারা বলেন, ২৪ ঘণ্টায় নালিতাবাড়ীতে বর্তমানে বিদ্যুত্ থাকছে ২ থেকে ৩ ঘণ্টা। যতক্ষণ বিদ্যুত্ পাওয়া যাচ্ছে ততক্ষণও লো-ভোল্টেজের কারণে প্রতিদিন মোটরসহ বিভিন্ন বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি জ্বলে যাচ্ছে। বাসাবাড়িতে অকেজো হয়ে পড়ছে ফ্রিজ। বোরো ক্ষেতে সেচ দেয়া যাচ্ছে না। উঠতি ফসল সেচের অভাবে নষ্ট হতে চলেছে। বিগত সময়ের সব রেকর্ড ভঙ্গ করে লোডশেডিংয়ে এখন এলাকাবাসী বিপর্যস্ত। বিপাকে পড়েছে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীরাও।
নাটোর : নাটোর সদর উপজেলার কৃষিভাণ্ডার হিসেবে পরিচিত হালতিবিল এলাকার সেচযন্ত্রে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুত্ সরবরাহের দাবিতে নাটোর পল্লীবিদ্যুত্ সমিতি-১-এর অফিস ঘেরাও করা হয়। গতকাল হালতিবিল এলাকার শতাধিক কৃষক বিদ্যুতের দাবিতে নাটোর পল্লীবিদ্যুত্ অফিস ঘেরাও করে স্লোগান দিতে থাকে। এ সময় গেটে ঢুকতে পুলিশ এবং পলম্লীবিদ্যুত্ সমিতির নিরাপত্তাকর্মীরা মিছিলকারীদের বাধা দেয়। পরে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যস্থতায় মিছিলকারীদের পল্লীবিদ্যুত্ সমিতির অফিস চত্বরে ঢুকতে দেয়া হয়। হালতিবিল এলাকার কৃষকদের পক্ষ থেকে কৃষক জিয়াউল হক, মোঃ জায়েদ আলী মণ্ডল এবং আমিরুল ইসলামের নেতৃত্বে নাটোর পল্লীবিদ্যুত্ সমিতি-১-এর মহাব্যবস্থাপক মোঃ রেজাউল করিমের কাছে একটি স্মারকলিপি দেয়া হয়। এতে বলা হয়, হালতিবিল এলাকার ১৭টি গ্রামে ২২ হাজার হেক্টর চাষ করা বোরো ধানের জমিতে ব্যবহৃত সেচযন্ত্রে দিন-রাতে ২ ঘণ্টারও কম সময় বিদ্যুত্ পাওয়া যায়। আগামী ৩৫ দিনের জন্য সেচযন্ত্রে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুত্ সরবরাহের জোর দাবি জানান তারা। স্মারকলিপিটি নিয়ে নাটোর পল্লীবিদ্যুত্ সমিতির মহাব্যবস্থাপক রাত ১১টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত হালতিবিল এলাকায় বিদ্যুত্ সরবরাহের আশ্বাস দেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ : সকালে শহরের পাওয়ার হাউস মোড় থেকে বিদ্যুতের দাবিতে একটি মিছিল প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করে। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জেলা কৃষক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মুসফিকুর রহমান টিটো, উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি মারাফুল ইসলাম আজিজী, সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম প্রমুখ। তারা বরেন্দ্র অঞ্চলের হাজার হাজার বিঘা জমির ধান রক্ষায় কমপক্ষে ১৮-২০ ঘণ্টা নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুত্ সরবরাহের দাবি জানান। তা না হলে আন্দোলনে নামার হুমকি দেন তারা। সমাবেশ শেষে তারা জেলা প্রশাসককে একটি স্মারকলিপি দেন।
জয়পুরহাট : কালাই উপজেলার আলুচাষীরা বালাইট নামক স্থানে জয়পুরহাট-বগুড়া সড়কের পাশে এক ঘণ্টা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন। পরে তারা বিক্ষোভ মিছিল করেন। মানববন্ধন চলাকালে বক্তব্য রাখেন আলুচাষী আবদুস সবুর, বাবলা চৌধুরী ও স্থানীয় একটি কোল্ড স্টোরেজের ব্যবস্থাপক আবদুল মালেক।

http://www.amardeshonline.com/pages/details/2010/03/26/24480

No comments:

Post a Comment