Tuesday 7 December 2010

প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিনে শুভেচ্ছা মিছিল : ঢাবিতে ছাত্রলীগের মেয়েদের সংঘর্ষ চুলাচুলি ধস্তাধস্তি

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এবার ছাত্রলীগের মহিলা কর্মীরা প্রকাশ্যে চুলাচুলি ও সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছেন। গতকাল দলের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন পালন করতে গিয়ে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। নেতাকর্মীদের সামনে হামলা, ব্যাপক ধস্তাধস্তি, চুলাচুলিতে জড়িয়ে পড়েন ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইডেন কলেজ শাখার মেয়েরা। এ হামলা ও সংঘর্ষে আহত হয়েছেন কমপক্ষে ১০ জন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৬৪তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি আয়োজিত শুভেচ্ছা মিছিলে এসব কাণ্ড ঘটায় ছাত্রলীগ মহিলা কর্মীরা। এ ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শারমিন সুলতানা লিলি, রোকেয়া হলের সভাপতি প্রার্থী তন্নী, শামসুন্নাহার হলের সভাপতি প্রার্থী নুসরাত, ইডেন কলেজের সভাপতি নিজুম, সাধারণ সম্পাদক তানিয়াসহ অন্তত ১০ জন আহত ও লাঞ্ছিত হয়েছেন। কেন্দ্রীয় নেতাদের হস্তক্ষেপে একপর্যায়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নেত্রীর জন্মদিনে এভাবে ছাত্রীদের চুলাচুলি ও সংঘর্ষের ঘটনায় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গেছে। ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে ইডেন কলেজের নেতাকর্মীরা মিছিল ও সমাবেশ থেকে তাদের প্রত্যাহার করে নেন।
গতকাল দুপুর ১২টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত শুভেচ্ছা মিছিলে সামনে দাঁড়ানো নিয়ে ছাত্রলীগ ইডেন কলেজ কর্মীদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের মেয়েদের বাকিবতণ্ডা হয়। মধুর ক্যান্টিন থেকে মিছিল শুরু হলে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের মেয়েরা সামনে দাঁড়ায়। একপর্যায়ে মিছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যাডোর সামনে আসা মাত্রই হঠাত্ করে পেছন থেকে ইডেন কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি নিঝুম এবং সাধারণ সম্পাদক তানিয়ার কর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ মেয়েদের ওপর হামলা চালায়। এতে শুরু হয় উভয়পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি ও ধস্তাধস্তি হয়। এক গ্রুপ প্রতিপক্ষ গ্রুপের চুল ধরে রাস্তায় ফেলে দেয়। পরনের সালোয়ার-কামিজ ধরে টানাটানি করতে থাকে। ধস্তাধস্তিতে প্রধানমন্ত্রীর ছবিসংবলিত প্ল্যাকার্ড ও ফেস্টুন পদদলিত হয়। এমন পরিস্থিতিতে সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাহমুদ হাসান রিপন ও সাধারণ সম্পাদক মাহফুজ হায়দার চৌধুরী রোটনসহ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় নেতারা হস্তক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। তবে ইডেন কলেজের নিঝুম ও তানিয়া ঘটনার দায়ভার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ মেয়েদের ওপর চাপায়। তারা এ ঘটনার জন কেন্দ্রীয় নেতাদে দোষারপ করে কর্মসূচি থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে ঢাবি ক্যাম্পাস ছেড়ে চলে যান। ঘটনাকে অত্যন্ত নিন্দনীয় উল্লেখ করে ছাত্রলীগ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ সাকিব বাদশা বলেন, যারাই এ ন্যক্কারজনক ঘটনায় জড়িত, তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। ছাত্রলীগের এক কেন্দ্রীয় নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে ইডেন কলেজের বিরোধ দীর্ঘদিনের। এর আগেও একাধিকবার এ ধরনের আপত্তিকর ঘটনা ঘটেছে। এসব কর্মকাণ্ডে উস্কানি দিচ্ছেন ছাত্রলীগের শীর্ষ দু’নেতা। তিনি আরও বলেন, ইডেনে দু’নেত্রীকে নিয়ে নেতিবাচক আলোচনার ঝড় ওঠার পরও তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। আর এ কারণেই এমন ঘটনা ঘটছে।
ছাত্রলীগের সমাবেশ : মিছিল শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনের মূল গেটে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশ থেকে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানান। ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাহমুদ হাসান রিপনের সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক মাহফুজ হায়দার চৌধুরী রোটন, মিজানুর রহমান, অপর্ণা পাল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি সোহেল রানা টিপু, সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ সাকিব বাদশা, ঢাকা মহানগর উত্তর সভাপতি এসএম সোহেল, সাধারণ সম্পাদক আজিজুল হক রানা, দক্ষিণের সভাপতি আনিসুর রহমান, কেন্দ্রীয় গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক আবু আব্বাস ভূঁইয়াসহ রাজধানীর বিভিন্ন কলেজের ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

No comments:

Post a Comment