Friday 10 December 2010

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের প্রতিবেদন : হত্যা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে বিএসএফের বিচার হওয়া উচিত

বিডিনিউজ

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলেছে, হত্যা এবং অন্য মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষাবাহিনীর (বিএসএফ) বিচার হওয়া উচিত।
ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে বাংলাদেশী নাগরিক হত্যার জন্য বিএসএফের অতিরিক্ত বলপ্রয়োগই দায়ী বলে গতকাল এক প্রতিবেদনে মত প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)। এইচআরডব্লিউ’র দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক পরিচালক মীনাক্ষী গাঙ্গুলী বলেন, হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে পার পেয়ে যেতে না দিয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের বিচার করতে ভারত সরকারের প্রতি বারংবার আহ্বান জানিয়েছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ।
আজ বিশ্ব মানবাধিকার দিবস। এর আগেরদিন “ট্রিগার হ্যাপি”: এক্সেসিভ ইউজ অব ফোর্স বাই ইন্ডিয়ান ট্রুপস্ অ্যাট দ্য বাংলাদেশ বর্ডার” (“‘অস্ত্রকাতর’ : বাংলাদেশ সীমান্তে ভারতীয় সেনাদের অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ”) শীর্ষক ৮১ পৃষ্ঠার এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
নির্যাতনের শিকার, প্রত্যক্ষদর্শী, মানবাধিকার কর্মী, সাংবাদিক, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য এবং বিএসএফ-বিডিআর সদস্যসহ প্রায় একশ’ জনেরও বেশি ব্যক্তির সাক্ষাত্কারের ভিত্তিতে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ সীমান্তে বিএসএফের নির্বিচার বলপ্রয়োগ, আটক, নির্যাতন এবং হত্যাকাণ্ড চালানোর বহু ঘটনার প্রমাণ পেয়েছে এইচআরডব্লিউ। এ ধরনের গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় দায়ী সেনাদের ভারত সরকারের বিচার করা উচিত। পশ্চিমবঙ্গ সীমান্তে বিএসএফের হাতে দু’দেশের নাগরিক হত্যা ঠেকাতে ভারত ও বাংলাদেশে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ারও তাগিদ দেয়া হয় এতে।
গত এক দশকে নয়শ’রও বেশি বাংলাদেশী বিএসএফের হাতে নিহত হয়েছে উল্লেখ করে পরিস্থিতি শামলাতে দু’দেশের সরকারের অবিলম্বে একটি যৌথ ও স্বাধীন তদন্ত প্রক্রিয়া চালু করা দরকার বলেও মত দেয় মানবাধিকার সংস্থাটি।
মিনাক্ষী বলেন, “যে কোনো সন্দেহভাজনকেই গুলি করার নির্দেশ দেয়ার মতো ঘটনায় মনে হয় যে, সীমান্ত রক্ষাবাহিনী নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে।”
তিনি প্রশ্ন করেন, “বিএসএফ বলে আসছে, তারা অভ্যন্তরীণ তদন্ত চালিয়ে থাকে। তাহলে এসব হত্যাকাণ্ডের জন্য কাউকে শাস্তি দেয়া হয়েছে কি না তা প্রকাশ করতে তারা নারাজ কেন?”
নিজেদের তদন্ত করা বেশ কিছু ঘটনার দৃষ্টান্ত তুলে ধরে এইচআরডব্লিউর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এ ধরনের হত্যাকাণ্ডের শিকার নিরীহ নাগরিক। এমনকি এদের মধ্যে শিশুরাও রয়েছে। অবৈধ পশু ব্যবসায়ী, চোরাকারবারী এবং সন্ত্রাসী চক্রের লোকজনও সীমান্ত হত্যাকাণ্ডের শিকার।
তবে আত্মীয়স্বজনদের দেখতে কিংবা বাজারঘাট করতে সীমান্ত পার হওয়া দু’দেশের নাগরিক বা সীমান্ত এলাকায় চাষাবাদকারী কৃষকও আটক, নির্যাতন এবং হত্যাকাণ্ডের শিকার হয় বলে উল্লেখ করা হয় ওই প্রতিবেদনে।
মানবাধিকার সংস্থাটি বলেছে, নিজের নাগরিকদের জীবন রক্ষায় বাংলাদেশ সরকারের শক্তিশালী পদক্ষেপ নেয়া উচিত। ‘অবৈধ সীমান্ত ব্যবসায় লিপ্তরা’ ঘটনার শিকার হলেও বাংলাদেশের উচিত সীমান্তে সংযম প্রদর্শনে ভারত সরকারের প্রতি জোরেশোরে আহ্বান জানানো।

No comments:

Post a Comment