Friday 17 December 2010

আওয়ামী লীগে রাজাকার গেলেও মুক্তিযোদ্ধা হয়ে যায় : মওদুদ

স্টাফ রিপোর্টার

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেছেন, বিএনপিতে যত মুক্তিযোদ্ধা আছে আওয়ামী লীগে তত নেই। আওয়ামী লীগ প্রচারের মাধ্যমে এমন একটা ভাব দেখায় যে, মনে হয় তারাই মুক্তিযুদ্ধের একমাত্র পক্ষশক্তি। আওয়ামী লীগে রাজাকার গেলেও স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি হয়ে যায়।
গতকাল বিকালে রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম আয়োজিত বিজয় দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্মের সভাপতি শামা ওবায়েদের সভাপতিত্বে আলোচনায় আরও অংশ নেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, এম ইলিয়াস আলী, মুক্তিযোদ্ধা সম্পাদক ইউং কমান্ডার হামিদুল্লাহ খান, প্রচার সম্পাদক জয়নুল আবদিন ফারুক, যুবদল সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, ইসমাইল হোসেন বেঙ্গল প্রমুখ।
হাটে হাঁড়ি ভেঙে দেব— উল্লেখ করে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, স্বাধীনতার সময় আওয়ামী লীগের কোন নেতা কি করেছেন সবকিছুর আমি প্রত্যক্ষ সাক্ষী। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বলতে আমরা কি বুঝেছিলাম। কারো লেজুরবৃত্তিক পররাষ্ট্রনীতি পরিহার, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থায় সমান অধিকার ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন। আজকে অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়, এই তিনটি মূল ভিত্তির একটি চেতনাও তারা রক্ষা করতে পারেনি। তারা ভারতের সঙ্গে আমাদের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব নিয়ে আপস করেছে। দেশের গণতন্ত্র এখন স্বৈরতন্ত্রে পরিণত হয়েছে। আইনের শাসনের নামে আওয়ামী লীগের শাসন চলছে। অর্থনৈতিক মুক্তি বলতে কিছুই নেই।
বর্তমান সরকারের সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা দাবি করে মওদুদ বলেন, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা তৈরি না করে সরকার সংঘাতের রাজনীতি তৈরি করছে। যে দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নেই সে দেশ মধ্য আয়ের দেশ হতে পারবে না। দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৮-১০ ভাগ করতে হলে সরকার ও বিরোধীদলের মধ্যে সহযোগিতা ও সমঝোতা প্রয়োজন।
ড. ইউনূস এ দেশের মুকুট ও গৌরব দাবি করে মওদুদ বলেন, এমন কোনো দেশ নাই যেখানে তাকে সম্মান দেখানো হয় নাই।
অথচ আমরা তাকে ছোট করতে চাইছি। যারা তাকে ছোট করতে চাইছে তারাই ছোট জাত।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে বিএনপির মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক সেক্টর কমান্ডার উইং কমান্ডার হামিদুল্লাহ খান বীর প্রতীক বলেন, সেক্টর কমান্ডার ফোরাম গঠিত হয়েছে একটি বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থার টাকায় ও তাদের পক্ষে কাজ করতে। তা না হলে তারা এক এগারো সরকারের সময় সারাদেশে শত শত সমাবেশ করেছে। এসব সমাবেশের খরচ কোথা থেকে এলো। সেক্টর কমান্ডার ফোরামের নেতাদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, একে খন্দকার সেক্টর কমান্ডার ছিলেন না। যুদ্ধের সময় সে কোলকাতায় বসে থাকত। ওসমানীর সঙ্গে তার মতের মিল ছিল না বলে মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি ওসমানী তাকে কোনো দায়িত্ব দেননি। কেএম শফিউল্লাহ আসামে পালিয়ে ছিল, মেজর রফিকুল ইসলাম ও সি আর দত্তের কোথাও যুদ্ধের রেকর্ড নাই।
বিরোধী দলের চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, এত বছর পর সরকার ভীন দেশিদের সম্মান জানাতে চায়। কারণ তাদের খুশি করে ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতে চায়। ইতোমধ্যেই তাদের ট্রানজিট কড়িডোরসহ বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা দিয়ে ফেলেছে।
সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, জহির রায়হান বলেছিলেন যুদ্ধের ৯ মাস আওয়ামী লীগ নেতারা ভারতে কি করেছেন তা আমার সেল্যুলয়েডে বন্দি রয়েছে। আর সেজন্যই জহির রায়হানকে হত্যা করা হয়েছে।

No comments:

Post a Comment