Tuesday 7 December 2010

বাংকারে ভারি অস্ত্র নিয়ে কয়েকশ’ ভারতীয় সেনার অবস্থান : তামাবিল সীমান্তে সবজি চাষে একশ’ গর্ত খুঁড়েছে ভারতীয়রা

মো. দেলোয়ার হোসেন, জৈন্তাপুর (সিলেট)

সিলেটের তামাবিল সীমান্তে বিএসএফ ও বিডিআরের মধ্যে উত্তেজনা অব্যাহত রয়েছে। এবার ধান কাটা বন্ধ করে অভিনব কায়দায় রাতের আঁধারে বিএসএফের সহযোগিতায় ভারতীয়রা সীমান্তের ২০০ গজ অভ্যন্তরে সবজি চাষের জন্য ১০০টি গর্ত করেছে। বিডিআরের চাপের মুখে বিএসএফ দুঃখ প্রকাশ করে পরে খাসিয়াদের দিয়ে গর্তগুলো ভরাট করে। ভবিষ্যতে এরকম কাজ করবে না বলেও অঙ্গীকার করে বিএসএফ। এদিকে ওপারে বেশ কয়েকটি বাংকার খুঁড়ে কয়েকশ’ ভারতীয় সেনা ভারি অস্ত্র নিয়ে অবস্থান নিয়েছে। শুক্রবার দিবাগত রাতে বিএসএফের সহযোগিতায় ভারতীয় নানকিং ও নতেলাং এলাকার উডু খাসিয়া, লা খাসিয়া, রাজেন খাসিয়া, কৃতশ খাসিয়া, বিনোদ খাসিয়া, সলিট খাসিয়া, সিং ও বসন্ত খাসিয়ার নেতৃত্বে ২০-২৫ জনের একদল ভারতীয় তীর-ধনুক ও বন্দুক নিয়ে গোয়াইনঘাট উপজেলার তামাবিল এলাকার ১২৭৭নং মেইন পিলারের ১এস ও ২এসের মধ্যবর্তী স্থান আমস্বপ্নপুর সীমান্তের ২০০ গজ অভ্যন্তরে ঢুকে সবজি চাষের জন্য একশ’টি গর্ত খনন করে। গতকাল সকাল ৮টার দিকে বিডিআর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে ক্ষেতের মধ্যে গর্ত দেখে তামাবিল সীমান্ত ফাঁড়ির কমান্ডার নায়েক সুবেদার ইউনুছ আলীকে খবর দেন। তিনি দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে বিএসএফের প্রতি সমঝোতা বৈঠকের আহ্বান জানান। সীমান্তের ২০০ গজ অভ্যন্তরে শতাধিক গর্ত খনন করার কারণ জানতে চাইলে ভারতীয় সীমান্তের নলজুরী ক্যাম্প কমান্ডার রমেস সিং ও নানকিং ক্যাম্পের পোস্ট কমান্ডার সুবেদার রাফি এ ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন। সকাল ১১টার দিকে বিডিআরের চাপের মুখে বিএসএফ ভারতীয়দের দিয়ে খনন করা গর্তগুলো ভরাট করে। দুপুর ১২টার দিকে আমস্বপ্নপুর সীমান্তে গিয়ে দেখা যায়, সীমান্তের ওপারে বিএসএফ ১০-১৫টি বাংকার খনন করেছে এবং কয়েকশতাধিক ভারতীয় সৈন্য ভারি অস্ত্র নিয়ে বাংলাদেশীদের দিকে তাক করে বসে আছে। এদিকে বিডিআরকেও সীমান্তে টহল দিতে দেখা যায়।
আমস্বপ্নপুর গ্রামের ওহাব আলী ও মান্নান গংদের জমিতে ভারতীয়দের করা শতাধিক গর্তের চিহ্ন দেখা যায়। কিন্তু গতকাল খাসিয়াদের ধান কাটতে দেখা যায়নি। সীমান্তের একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে যে, গতকাল স্থানীয় ডাউকিবাজারের স্থাপ্তাহিক হাটবার থাকায় ভারতীয় সীমান্তের নাগরিকরা ধান কাটতে আসেনি। রোববার আবার ধানকাটার আশঙ্কা রয়েছে। গতকাল বিকাল ৪টায় গোয়াইনঘাট উপজেলার নবাগত নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইফতেখার আহমদ চৌধুরী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার তামাবিল এলাকার ১২৭৭নং মেইন পিলারের ১এস ও ২এসের মধ্যবর্তী স্থানে আমস্বপ্নপুর সীমান্তের ২০০ গজ অভ্যন্তরে অবৈধভাবে ঢুকে পাকা ধান কেটে নিয়ে যায় বিএসএফের সহযোগিতায় ভারতীয় নাগরিকরা। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সীমান্তে উত্তেজনা অব্যাহত রয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সীমান্তবাসী জানান, সরকার যদি সময়মত সঠিক পদক্ষেপ নিত তাহলে আমাদের এ বেহাল দশা হতো না।

No comments:

Post a Comment